Ajker Patrika

পরীক্ষায় নকল করায় জবির ১৬ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার

জবি প্রতিনিধি
Thumbnail image

পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন (নকল) করায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ১৬ শিক্ষার্থীকে নানা মেয়াদে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ৪ জনের সেমিস্টার পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের ৫৮ তম সভায় বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা এ. কে. এম. আক্তারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের নোটিশ পেয়েছি। এটি বাস্তবায়ন করতে আমাদের বলা হয়েছে। প্রত্যেক বিভাগে এ বিষয়ে জানানোর জন্য দুই-একদিনের ভেতর নোটিশ পাঠানো হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ মার্চ শৃঙ্খলা বোর্ডের সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক ও সদস্যসচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামালসহ কমিটির ৯ জন সদস্যের উপস্থিতিতে ৫৮ তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ জন শিক্ষার্থীর বহিষ্কার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরে ১৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় বহিষ্কার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তটি পাশ হয়।

সাময়িক বহিষ্কার হওয়া ১৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে নৃবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ওয়াসিম আলীকে দুই সেমিস্টার, সংগীত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের পূর্ণা অধিকারীকে এক সেমিস্টার, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সায়দা মোনোয়ারা খাতুনকে এক সেমিস্টার, এমবিএ ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের রবিউল ইসলামকে দুই সেমিস্টার, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নদীয়া ইসলামকে এক সেমিস্টার, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল কাদেরকে দুই সেমিস্টার বহিষ্কার করা হয়েছে।

ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আব্দুর রহমানকে এক সেমিস্টার, ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের চয়ন কুমার রায়কে সর্বোচ্চ সাজা তিন সেমিস্টার, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের বিল্লাল হোসেনকে দুই সেমিস্টার, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাহমিদা আলমকে দুই সেমিস্টার, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের মেহেদি হাসান রুবেলকে দুই সেমিস্টার, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের রাকিবুল হাসান উদয়কে দুই সেমিস্টার, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আবু ইসহাককে দুই সেমিস্টার, রসায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সাকিব-উল-সাদাতকে এক সেমিস্টার, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রতীতি সাহাকে এক সেমিস্টার এবং ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের সজীব আলম রুমনকে এক সেমিস্টার করে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আশরাফুন জান্নাত লিজা ও হাবিবা আক্তারের আবেদনে এক সেমিস্টার শাস্তি মওকুফ করা হয়েছে। তবে তাদের ৩য় বর্ষ ১ম সেমিস্টারের সকল তত্ত্বীয় পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মৃত্তিকা সরকার ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শারমিন আক্তার আয়শাকে পরীক্ষায় অসাধু উপায় অবলম্বন করায় সংশ্লিষ্ট কোর্সটির পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।

এ ছাড়া ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু মুসা আসারীর বিরুদ্ধে থাকা সাময়িক বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয়, ওই শিক্ষার্থী আদালত থেকে জামিনে থাকায় ও বাদীর সঙ্গে আপসনামা সম্পাদন করায়, বাদীর অভিযোগ না থাকায় এবং তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে তার আবেদনটি বিবেচনা করে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের সভাপতি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তথ্য প্রমাণ দেখে এটা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষকদের বলা হয়েছে, ছাত্রছাত্রীরা যেন পরীক্ষায় অসাধু উপায় অবলম্বন না করে, সেটার জন্য কঠোর হতে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত