Ajker Patrika

অ্যাকাউন্টে ফেরত এল আত্মসাতের ১৮ লাখ টাকা, স্বীকার করছেন না আসামিরা

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ৫৯
Thumbnail image

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অনুকূলে ব্যাংকে মোটা অঙ্কের টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। টাকা জমা দেওয়ার সময় আবেদনে একটি মামলার বিবরণ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এই মামলার কারণেই টাকাগুলো জমা দেওয়া হলো। সেই মামলার প্রধান আসামি রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ। মোট আসামি ১৪ জন। তবে টাকা জমা দেওয়ার কথা স্বীকার করছেন না কোনো আসামিই।

১৮ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঠিক সমপরিমাণ টাকাই জমা দেওয়া হয়েছে। এ মামলার এক আসামির নাম শওকত আলী। তিনি একজন ঠিকাদার। ব্যাংকে টাকার জমাকারী হিসেবে তাঁর নামই লেখা হয়েছে। তবে শওকতের বলছেন, তিনি টাকা জমা দেননি। তাঁর নাম ব্যবহার করা হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সোনালী ব্যাংকের গ্রেটার রোড শাখায় টাকাগুলো জমা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যাংকের ওই শাখার ব্যবস্থাপক তারিক হাসান। 

তারিক হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুদকের একটি মামলার বিবরণ দিয়ে টাকাগুলো জমা করা হয়েছে। জমাকারী হিসেবে শওকত আলী নাম লেখা আছে। কিন্তু আমরা তাঁকে চিনি না। কাউন্টারে অনেক মানুষই টাকা জমা দেয়, সবাইকে চিনে রাখা সম্ভব নয়। টাকা জমা হওয়ার পর শিক্ষাবোর্ডকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। আজই চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে জানানো হবে।’ 

শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি কয়দিন আগে দায়িত্ব নিয়েছি। বিষয়টা সম্পর্কে শুনেছি, অফিশিয়ালি কোনো কাগজ পাইনি।’ 

আবুল কালাম আজাদ ২০১৪ সালের ১০ জুলাই শিক্ষাবোর্ডের সচিব হন। এরপর ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে চেয়ারম্যান করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে ২০১৯ সালের জুনে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধান শেষে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় একটি মামলা করে। মামলায় সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে চারজন ঠিকাদার এবং অন্যরা শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী। 

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ওই মামলায় এরই মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি টাকা ফেরত দিয়ে মামলা থেকে আসামিদের দায়মুক্তির জন্য আবেদনও করা হয়েছে। কে আবেদন করেছেন তা দুদক স্পষ্ট করে জানায়নি। এখন মামলা বিচারাধীন অবস্থায় টাকা ফেরত দিয়ে দায়মুক্তির সুযোগ নেই বলেও জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা। তবে রায়ের সময় আদালত এটি বিবেচনা করতে পারেন। 

ঠিকাদার শওকত আলী বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের পাওয়া কয়েকটি কাজ না করেও বিল তুলে নেওয়ার অভিযোগে মামলাটি করা হয়। তবে সব কাজই করা হয়েছিল। এখন কে টাকা ফেরত দিয়েছে সেটা আমি বলতে পারব না। আমি টাকা দিইনি।’ 

সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি অসুস্থ, ঢাকায় থাকি। আমি কোনো টাকা ফেরত দিইনি। কে টাকা জমা দিয়েছেন তাও জানি না। মামলার অন্য আসামিরাই এখন মামলা দেখে, তাঁরা দিয়েছে কি না সেটাও জানি না।’ 

মামলার আসামি শিক্ষাবোর্ডের উপ-কলেজ পরিদর্শক নেসার উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘কে টাকা জমা দিয়েছে তা আমিও জানি না। আমি তো শুধু মামলার দিন আদালতে হাজিরা দেই। করোনার কারণে অনেক দিন হাজিরাও দেওয়া লাগেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত