Ajker Patrika

১০ বছর ধরে মেয়ের অপেক্ষায় মা

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২২, ১০: ৪৮
Thumbnail image

২০১২ সালে অভাবের তাড়নায় ১৫ বছর বয়সী মেয়ে পারভীন আক্তার সুমিকে চাকরির জন্য ননদের মেয়ে ফাতেমা আক্তারের কাছে দিয়েছিলাম। ১০ বছরেও ফিরে আসেনি আমার কাছে। মেয়ের খোঁজ নিতে ফাতেমার বাড়িতে গেলে গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেয় ফাতেমা ও তাঁর স্বামী শের আলী। মনে হয়, মরার আগে আর মেয়েকে দেখে মরতে পারব না।

কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা করার জন্য কাকুতি-মিনতি করছিলেন বাগেরহাট সদর উপজেলার দেপাড়া গ্রামের আবুল খাঁর স্ত্রী খোদেজা বেগম।

মেয়ের শোকে প্রতিদিন এভাবে কাঁদেন ষাটোর্ধ্ব খোদেজা বেগম। সুমি ছাড়াও খোদেজার দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। ছেলে আল আমিন ও স্বামী আবুল খাঁ ভ্যান চালান। দুই মেয়ে স্বামীর বাড়িতে। মেয়ের শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন খোদেজা বেগম। একসময় মানুষের বাড়িতে কাজ করলেও এখন আর শরীরে কুলায় না। সারা দিন মেয়ের জন্য বিলাপ করেন। আর অপরিচিত কোনো মানুষ দেখলেই মেয়েকে ফেরানোর জন্য সহযোগিতা চান।

খোদেজা ও তাঁর পরিবারের দাবি, ফাতেমা বেগম পারভীন আক্তার সুমিকে ফরিদপুরের জাকির ও খুলনার আজমলের মাধ্যমে ভারতে পাচার করে দিয়েছে। তবে ১০ বছরেও ফাতেমার বিরুদ্ধে কোথাও কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি খোদেজা ও তাঁর পরিবার।

ফাতেমা বেগম রামপাল উপজেলার গিলাতলা গ্রামের জলিল ফিরুকানা ও রিজিয়া বেগমের মেয়ে। ফাতেমার মা রিজিয়া গেম আবুল খাঁর বোন। বর্তমানে স্বামী শের আলীর সঙ্গে খুলনা শহরের সেনহাটি ২ নম্বর ঘাটে বসবাস করেন।

খোদেজার প্রতিবেশী সাফিয়া বেগম বলেন, ‘ফাতেমা এসে সুমিকে নিয়ে গেল। আর ফিরে আসেনি। শুনেছি ভারতে পাচার করে দিয়েছে। কখনো কাউকে মেয়েটা ফোনও করেনি।’

পারভীন আক্তার সুমির বাবা আবুল খাঁ বলেন, ‘ফাতেমা বেগম আমার বোনের মেয়ে। মামা হয়ে আমি ওর পা ধরে কান্না করেছি মেয়েকে ফিরে পাওয়ার জন্য। তার পরও সে আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দেয়নি। এখন গেলে আমাদের গালিগালাজ করে।’

খোদেজা বেগম বলেন, ‘প্রথম দিকে ভাবছিলাম মেয়েটাকে হয়তো কোথাও কাজে দিয়েছে। কিন্তু বছর দুই আগে বিভিন্নভাবে জানতে পেরেছি ওরা আমার মেয়েকে ভারতে পাচার করে দিয়েছে। এরপর বারবার ফাতেমার কাছে যাই। গেলেই বলে, বিয়ে করে তোমার মেয়ে ফিরে আসবে। বেশি জ্বালাবা না। তাইলে কিন্তু মেয়েকে আর কখনো ফিরে পাবা না।’

এত দিনেও কেন আইনের আশ্রয় নেননি জানতে চাইলে খোদেজা বেগম বলেন, ‘কার কাছে যাব, কোথায় যাব, টাকা পাব কোথায়? আবার সুমির বাবা রইছে খুলনা। খুলনা থেকে এবার আসলে থানায় যাব।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ফাতেমা বেগম ও আজমলের মোবাইল নম্বরে কলা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী পুলিশ পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা নেই। ভুক্তভোগী পরিবারটি আমাদের জানায়নি। পরিবারটি যদি লিখিত অভিযোগ দেয়, তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত