Ajker Patrika

শিশু হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি চাচির

মাদারীপুর প্রতিনিধি
শিশু হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি চাচির

শিশু হত্যার দায় স্বীকার করে আপন চাচি মাদারীপুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শিবচর থানার ওসি (তদন্ত) আমীর হোসেন সেরনিয়াবাদ।

এর আগে গত শুক্রবার সকালে মাদারীপুরের শিবচরে অপহরণের তিন দিন পর পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুরের জাজিরায় চাচার বাড়ির ভবনের নির্মাণাধীন টয়লেটের মেঝের নিচ থেকে বালু চাপা অবস্থায় শিশু কুতুব উদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যা মামলা হলে তাঁর আপন বড় চাচি নার্গিস আক্তার ও তাঁর মেয়ে হাফসা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের হাজির করা হলে চাচি এ হত্যার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে ওই আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইদুর রহমান চাচির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা আমীর হোসেন সেরনিয়াবাদ বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে চাচি নার্গিস আক্তার শিশু কুতুব উদ্দিনকে হত্যার দায় স্বীকার করেন। তিনি কীভাবে তাঁর মেয়ে হাফসার মাধ্যমে শিশুকে তাঁর বাড়ি থেকে কৌশলে এনে হত্যা করে নিজ বাড়ির ভবনের নির্মাণাধীন টয়লেটের মেঝের নিচ বালু চাপা দেন তারও বর্ণনা দিয়েছেন। পরে তাঁকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। তবে নার্গিস আক্তারের মেয়ে হাফসা আক্তার ১৩ বছর বয়সী হওয়ায় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। তাকে আদালতের কিশোরী জেলে রাখা হয়েছে। তাকে রোববার আদালতে ওঠানো হবে বলে জানান তিনি। 

মাদারীপুর আদালতের পুলিশ পরিদর্শক রমেশ চন্দ্র দাস বলেন, শিশু হত্যার দায়ে চাচি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আর মেয়েকে আদালতের জেলে রাখা হয়েছে। রোববার সকালে মেয়েকে আদালতে হাজির করলে তার বিষয় সিদ্ধান্ত হবে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার নার্গিস আক্তারের মেয়ে হাফসা শিশু কুতুবউদ্দিনকে চকলেট কেনার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই শিশুটিকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ওই দিন বিকেলেই শিশুটির বাবা ইসমাইল ব্যাপারী শিবচর থানায় একটি অভিযোগপত্র দেন। 

অভিযোগের ভিত্তিতে শিবচর থানার পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার নার্গিস আক্তার ও তাঁর মেয়ে হাফসাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নাওডোবা এলাকায় একটি নির্মাণাধীন টয়লেটের মধ্য থেকে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় কুতুবউদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্র বলেছে, ইসমাইল ব্যাপারীর বড় ভাই নার্গিস আক্তারের স্বামী আবুল হাশেম ব্যাপারী কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। পরে তিনি তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়ি শরীয়তপুরের নাওডোবা গ্রামে বসবাস করেন। কয়েক দিন আগে স্বামীর বাড়ির জায়গাজমির ভাগবণ্টন নিয়ে নার্গিসের সঙ্গে দেবর-ভাশুরদের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।   

এ বিষয়ে নিহত শিশু কুতুবউদ্দিনের মেজো চাচা মুছা ব্যাপারী বলেন, `আমার বড় ভাই (হাশেম ব্যাপারী) মারা যাওয়ার পরে আমরা ভাইয়ের বউ-বাচ্চাদের খোঁজখবর রাখি। টাকাপয়সাও দিই। কিন্তু জায়গাজমি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে তাঁরা আমার ভাতিজাকে খুন করেছে। তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।'  

শিবচর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমির হোসেন সেরনিয়াবাত বলেন, ‘ঘটনার পরে শিশুটির বাবা অভিযোগ করলে আমরা তাকে উদ্ধারের কাজ শুরু করি। সন্দেহজনকভাবে নার্গিস আক্তার ও তাঁর মেয়ে হাফসাকে গ্রেপ্তার করলে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি উঠে আসে। তাঁদের দেওয়া তথ্যর ভিত্তিতে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।'

পরিদর্শক আরও বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

জুলাই অভ্যুত্থান: নিজেদের মামলা তদন্তে ‘বেশি সতর্ক’ পুলিশ

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

ট্রাম্পের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এরদোয়ানও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত