Ajker Patrika

সিম ভাড়া নিয়ে প্রতারণা করত তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৪৮
সিম ভাড়া নিয়ে প্রতারণা করত তারা

দেশের প্রত্যন্ত এলাকা নাটোরের দিলমারি, পুঠিমারি, রাজশাহীর বাগমারা, চারগা এবং নওগাঁর বিভিন্ন এলাকায় বসে স্মার্টফোনের মেসেজ ও কলভিত্তিক অ্যাপস ইমো হ্যাকিংয়ের অভিযোগে একটি চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডি বলছে, অভিনব কৌশলে অন্যের মোবাইলের সিম ভাড়া নিয়ে ইমো হ্যাক করে প্রতারণা করে আসছিল চক্রটি। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন হুসাইন আলী (১৯), সুমন আলী (২৩), তারিকুল ইসলাম (২১), শান্ত আলী (১৯) ও সাদ্দাম হোসেন (১৯)। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান। 

কামরুল আহসান বলেন, সিআইডির সাইবার সাপোর্ট সেন্টারে বিভিন্ন ভুক্তভোগীর অভিযোগ আসছিল, অভিনব কৌশলে ইমো হ্যাক করে প্রতারণা করে আসছে একটি চক্র। পাশাপাশি হ্যাক করা ইমো থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ পাওয়া যায়। 

এরই ধারাবাহিকতায় সাভারের আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই চক্রে ১৫০ থেকে ১৭৫ জন সদস্য রয়েছে। যাদের বয়স ১৫ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। 

কামরুল আহসান বলেন, চক্রের সদস্যরা দুটি কৌশলে টার্গেট খুঁজে বের করে। সখ্য গড়ে তুলে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) নেয়। এ ছাড়া অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দিয়ে সখ্য গড়ে তোলে। এই চক্রের প্রধান টার্গেট প্রবাসীরা। তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত নারীদের লাইভ ও ভিডিও ব্যবহার করে প্রবাসীদের আকৃষ্ট করে। আর নিজেরা ছেলে হয়েও নারী কণ্ঠে কথা বলে। টাকা হাতিয়ে নেয়। এমনকি অনেক সময় বিভিন্ন তথ্য ও ছবি ব্যবহার করে প্রবাসী ব্যক্তিদের ভয় দেখিয়ে বা তাঁদের পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা তথ্য দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত। প্রতারণার কাজে চক্রটি তাদের প্রতিবেশী বয়স্কদের সিম ভাড়া নিয়ে এই কাজ করত। একটা নির্দিষ্ট সময় সিম ব্যবহার করার পরে তারা কিছু টাকা দিত। এ ছাড়া বয়স্কদের সিম ব্যবহার করে প্রতারণা করার পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অভিযানে গেলে সিমের আসল ব্যবহারকারীর সঙ্গে ঘটনার মিল না পাওয়ায় ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসার ঘটনাও ঘটেছে। 

গ্রেপ্তার প্রতারক চক্রের সদস্যরা কীভাবে এই দক্ষতা অর্জন করেছে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, নাটোর, রাজশাহী ও নওগাঁর বিভিন্ন এলাকায় প্রতারক চক্রের সদস্যরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ফলে তারা নানাভাবে অন্যদের এই কৌশল শেখায়। এমনকি গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যরা প্রযুক্তি বিদ্যায়ও পারদর্শী। পড়াশোনার পাশাপাশি তারা গত এক বছর এ কাজ করছে। চক্রের প্রতিটি সদস্য এক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে। এই চক্রের একেকটি দলে ৪ থেকে ৫ জন থাকে। 

প্রতারণার মাধ্যমে আয়ের টাকা কীভাবে ব্যয় হয়, জানতে চাইলে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা যা আয় করে তার বড় একটি অংশ নেশার পেছনে ব্যয় করে। চক্রের আয়ের তালিকা বিশাল। আমরা স্টাডি করছি। আমরা যেসব এলাকার নাম পেয়েছি, সে এলাকাগুলোর বিকাশ ও নগদের লেনদেন নিয়ে বিস্তর তদন্ত করতে হবে। বিকাশে কে টাকা পাঠাল, কেন পাঠাল এ ছাড়া আরও অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আমরা কাজ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত