Ajker Patrika

চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগ: ‘ভুয়া তথ্যে’ চাকরি, ৩২ বার তদন্তের দোহাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগ: ‘ভুয়া তথ্যে’ চাকরি, ৩২ বার তদন্তের দোহাই

চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে চাকরি নেওয়ার অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন এখনো জমা দেয়নি কমিটি। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালককে একটি চিঠি দিয়েছেন সিভিল সার্জন। তাতে ৩২ বার তদন্ত প্রতিবেদন জমা হওয়ার কথা উল্লেখ করে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। 
 
অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তা চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া। ২০১২ সালে তিনি ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে চাকরি নিয়েছেন, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত ১৪ মে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালক মো. মহিউদ্দিন। কমিটির সভাপতি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আব্দুল মান্নান। অন্য দুই সদস্য হলেন কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাজিয়া বিনতে আলম এবং চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. হানিফ। তদন্ত কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। পরে আরও এক মাস সময় বাড়াতে আবেদন করে তদন্ত কমিটি। 
 
এদিকে গত ২৫ মে সিভিল সার্জন মো. ইলিয়াস চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালককে দেওয়া চিঠিতে সুজন বড়ুয়াকে ‘হয়রানিমূলক’ তদন্ত থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেন। এই আবেদনে সুজন বড়ুয়ার বিষয়ে ৩২টি তদন্ত প্রতিবেদন জমা হওয়ার কথা উল্লেখ করেন। এরপর গত ২৮ মে তদন্ত স্থগিত করতে কমিটির প্রধান ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আব্দুল মান্নানকে আরেকটি চিঠি দেন সিভিল সার্জন। 
 
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন মো. ইলিয়াছ বলেন, ‘তদন্তের বিষয়টি হয়রানিমূলক। এ বিষয়ে ৩২টি প্রতিবেদন আছে, যা সুজন বড়ুয়ার কাছে সংরক্ষিত।’ 
 
তবে তদন্ত কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, তদন্ত শেষে স্বাস্থ্য পরিচালকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা; কিন্তু তাঁরা এখনো কোনো প্রতিবেদন জমা দেননি। তিনিআরও বলেন, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের কার্যালয় সুজন বড়ুয়ার জাল সনদ ও দুটি পৃথক জন্মনিবন্ধন দিয়ে চাকরি নেওয়ার অভিযোগের তদন্ত স্থগিত রাখার আবেদন পাঠিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
 
তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন না দিলেও স্বাস্থ্য পরিচালকের কাছে দেওয়া চিঠিতে ৩২টি প্রতিবেদন উল্লেখ করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, অভিযোগ ওঠার বিভিন্ন সময় অধীনস্থ কর্মকর্তাদের দিয়ে তদন্ত করিয়েছেন। এ সংখ্যা ৩২-এর কম-বেশি হতে পারে। এসব প্রতিবেদনে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 
 
চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের মরিচ্যাপালং গ্রামের বাসিন্দা সুজন বড়ুয়া ওই উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারীর চাকরি নেন। এই ঠিকানা দিয়েই তিনি রাজশাহীর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি থেকে তিন বছরমেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স (এসআইটি) সম্পন্ন করেন। পরে ২০১২ সালে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে চাকরি নেন রাঙামাটি জেলা পরিষদের অধীনে থাকা স্বাস্থ্য বিভাগের রাজস্থলী উপজেলায়। কিন্তু এবার ঠিকানা দেন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির উত্তর ঘুমধুমের বালুখালী গ্রাম। মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামে ওই স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে, এমন বাধ্যবাধকতা থাকে। 
সূত্রটি আরও জানায়, রাঙামাটিতে সুজন বড়ুয়ার ভুয়া ঠিকানা দেখিয়ে চাকরি নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি দ্রুত বদলি হয়ে বান্দরবানে যান। এতে অনেকটা আড়ালে পড়ে যায় ভুয়া ঠিকানা ব্যবহারের বিষয়টি। সেখানে যোগ দেওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তিনি জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি পান। 
 
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে সম্প্রতি যোগাযোগ করা হয় সুজন বড়ুয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, জমি কিনে এখানকার (চট্টগ্রাম) বাসিন্দা হয়েছেন। এ জন্য তিনি চাকরির আবেদনপত্রে এখানকার বাসিন্দার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। 

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাস্তি পাচ্ছেন বিটিআরসির মহাপরিচালকসহ ৩০ জনের বেশি কর্মকর্তা

‘তেলের ক্রেতা’ হিসেবে ভারতকে আর পাবে না রাশিয়া, জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

হোলি আর্টিজানের ঘটনায় ‘জঙ্গি সন্দেহে’ আটক ছিলেন অনিন্দ্য, রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটনের চাচাতো ভাই তিনি

বরখাস্ত সৈনিককে অস্ত্র দিয়েছেন বিএনপি নেতা, অডিও নিয়ে তোলপাড়

ভূমি অফিসের কাণ্ড: এসি ল্যান্ড দপ্তরের নামে দেড় কোটি টাকা আদায়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত