Ajker Patrika

কসাই থেকে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী দুই ভাই হামকা ও ধামা

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯: ০৫
কসাই থেকে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী  দুই ভাই হামকা ও ধামা

কসাইপাড়ায় বসতি, বাবাও ছিলেন কসাই। ৮-১০ বছর আগে দুই ভাই বাদশা রাজু (৩৩) ও জুয়েল (২৯) তাই চাপাতি হাতে মাংস বিক্রি করতেন এলাকায়। চাপাতির বদলে হাতে পিস্তল তুলে নিয়ে দুই ভাইয়ের নাম এখন হামকা রাজু ও ধামা জুয়েল। তাঁরা এখন এলাকার ত্রাস, পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী।

ধামা জুয়েলকে ১৪ ডিসেম্বর বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানা-পুলিশ। এর আগে গত বছরের ৫ নভেম্বর চান্দগাঁও থেকেই অস্ত্রসহ র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন তাঁর বড় ভাই হামকা রাজু। বছরখানেক কারাভোগের পর কিছুদিন আগে তিনি জামিনে বেরিয়েছেন। এর আগে ২০১২ সালেও ছিনতাই করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়ে কারাগারে যান রাজু। মূলত তখন থেকেই এই দুই ভাইয়ের অপরাধের সাম্রাজ্য বিস্তৃতি পায়। চাঁদাবাজি, কিশোর গ্যাং পরিচালনা, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে হামকা রাজু ও ধামা জুয়েলের বিরুদ্ধে।

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঈনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, হামকা রাজু ও ধামা জুয়েল দুই ভাই চান্দগাঁও থানার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। রাজুর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, জুয়া, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে চান্দগাঁও ও বোয়ালখালী থানায় ৯টি মামলা রয়েছে। আর জুয়েলের বিরুদ্ধে চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ থানায় ৬টি মামলা রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সন্ত্রাসী এই দুই ভাই একাধিকবার জেলে গেছেন। জেল থেকে বেরিয়ে পুনরায় অপরাধে জড়িয়েছেন। তাঁরা গড়ে তুলেছেন ভয়ংকর ‘হামকা গ্রুপ’। গ্রুপটি ছিনতাই থেকে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা থেকে খুন-অপহরণসহ সমস্ত অপরাধে জড়াচ্ছে। কথায় কথায় কুপিয়ে জখম, অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন কিংবা গুলি চালিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অন্তত ৭-৮টি মাদকের স্পট চালায় গ্রুপটি। তাদের চাঁদা না দিয়ে বহদ্দারহাটের আশপাশ এলাকায় ব্যবসা করা দুষ্কর। সড়ক ফুটপাতে দোকান ও বিভিন্ন পরিবহন স্ট্যান্ড বসিয়ে চাঁদা আদায় করে গ্রুপটি। সন্ধ্যা নামতেই রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে এই গ্রুপের ছিনতাইকারীরা।

বাবা কসাই ছিলেন। নিজেও মাংস বিক্রি করতেন বাদশা রাজু। সন্ত্রাসী হওয়ার পর এখন তাঁর নাম হামকা রাজুআইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, হামকা গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তালিকাভুক্ত আরও দুই সন্ত্রাসী। এরা হলেন মো. সোহেল ওরফে ফ্রুট সোহেল ও মো. জালাল ওরফে ড্রিল জালাল। দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ফ্রুট সোহেল দীর্ঘদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মানব পাচারসহ ৭টি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া ড্রিল মেশিনে দুই পা ছিদ্র করে দেওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত ছিলেন ড্রিল জালাল। সে সময় একবার আটক হলেও জামিনে এসে ফের ব্যবসায়ী অপহরণের ঘটনায় অস্ত্রসহ পাঁচলাইশ থানায় আটক হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, হামকা গ্রুপ তৈরি হয়েছিল এক দশক আগে আরেক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর হাত ধরে। ওই সময় হামকা গ্রুপ ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঘুম হারাম করে দেওয়ার মতো। এটার আদলে নগরীর বিভিন্ন এলাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা নিজেরাই হামকা গ্রুপ নাম দিয়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

জুয়েলকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলন করে নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোখলেছুর রহমান বলেন, ধামা জুয়েল একজন দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং লিডার। দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ধামা জুয়েল এলাকার জনগণের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে আসছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল পুনর্বিন্যাস আনছে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলে

গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে কক্সবাজার ভ্রমণ: ৫ নেতাকে শোকজ করল এনসিপি

‘বাবার অসুস্থতায় পরামর্শ নিতে’ চিকিৎসকের বাসায় নারী, দুজনকে পুলিশে দিল স্থানীয়রা

১৪৬ যাত্রী নিয়ে ব্যাংককের পথে এক ঘণ্টা উড়ে মিয়ানমার থেকে ফিরে এল বিমানের সেই ফ্লাইট

৬ বছর পর চীন সফরে যাচ্ছেন মোদি, আসবেন পুতিনও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত