অনলাইন ডেস্ক
কানাডার ওপর শেষ পর্যন্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেই ফেললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাল্টা শুল্ক আরোপ এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি নেওয়া কানাডা প্রতিক্রিয়ায় এবার কী করতে যাচ্ছে সেদিকে চোখ সবার। এদিকে বিশ্ববাণিজ্য বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদার দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ প্রায় নিশ্চিতভাবেই একটি বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করছে।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে ট্রাম্পের শুল্কের বিরুদ্ধে কানাডার লড়াই যেভাবে এগিয়ে যেতে পারে—
১. মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক
মার্কিন সরকারের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের মোট রপ্তানির ১৭ শতাংশ যায় কানাডায়, অন্যদিকে কানাডার ৭৫ শতাংশেরও বেশি রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রে যায়। এ অবস্থায় ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে কানাডার অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ১০ শতাংশ এবং স্টিলের ওপর ২৫ শতাংশের শুল্ক আরোপ করেছিলেন।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কানাডা বেশ কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছিল। ফ্লোরিডার কমলার রস, টেনেসি ও কেনটাকির হুইস্কি ও বোরবনের ওপর শুল্ক বসানো হয়েছিল। অবশ্য এক বছর পর এই শুল্ক লড়াইয়ে ইতি টানে দুই দেশ।
কানাডার শীর্ষ কর্মকর্তারা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ট্রাম্প আবারও শুল্ক আরোপ করলে, কানাডার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে সম্ভবত আবারও নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করবে।
তবে মন্ট্রিয়লের ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির প্রভাষক এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে কানাডার দূতাবাসের সাবেক ফিন্যান্স কাউন্সেলর জুলিয়ান কারাগেসিয়ান বলেন, ‘গতবারের মতো একই প্রভাব এবার পড়বে না।’
২. ‘ডলার-ফর-ডলার’ শুল্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রথম শুল্ক যুদ্ধে ডলার-ফর-ডলার শুল্ক কৌশল ব্যবহার করেছিল কানাডা। দেশটি মার্কিন অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের ওপর একই হারে শুল্ক আরোপ করেছিল এবং নিশ্চিত করেছিল, যে পরিমাণ মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বসানো হবে, তার মোট আর্থিক মূল্য যুক্তরাষ্ট্রের কানাডার রপ্তানির ওপর বসানো শুল্কের সমান হবে। সেই সময় এটির পরিমাণ ছিল প্রায় ১৬.৬ বিলিয়ন কানাডীয় ডলার।
এবার, ডলার-ফর-ডলার শুল্ক ব্যবহারের সম্ভাবনা আরও বড় পরিসরে হতে পারে। কানাডা এরই মধ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলারের সম্ভাব্য মার্কিন পণ্যের তালিকা প্রকাশ করেছে, যেগুলোর ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে ‘যতক্ষণ না যুক্তরাষ্ট্র কানাডার ওপর আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার করে’। এই তালিকায় কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে দাঁতের ফ্লস ও লাগেজের মতো ভোগ্যপণ্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এটি আরও ১১০ বিলিয়ন কানাডীয় ডলারের অতিরিক্ত পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির দিকে যেতে পারে। তবে, ট্রাম্প যত বেশি ব্যাপকভাবে শুল্ক আরোপ করবেন, কানাডাও তত বেশি মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বসাতে পারে।
অর্থনীতিবিদ জুলিয়ান কারাগেসিয়ান বলেন, মার্কিন শুল্কের ফলে কানাডা মন্দার মুখে পড়তে পারে। যদি কানাডা ডলার-ফর-ডলার শুল্কের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেখায়, তবে এটি মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি করতে পারে। শেষ পর্যন্ত ‘স্ট্যাগফ্লেশন’ বা নিশ্চলতা-স্ফীতিতে পরিণত হতে পারে, যেখানে উচ্চ মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি বেকারত্বও বেড়ে যায়।
৩. জ্বালানির ‘পারমাণবিক’ বিকল্প
কানাডার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদের একটি হলো জ্বালানি। মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির ৬০ শতাংশ কানাডা থেকে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো, বিশেষ করে, ভারমন্ট ও নিউইয়র্ক প্রতিবেশী কানাডীয় প্রদেশগুলোর কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। ব্রিটিশ কলম্বিয়া ও ম্যানিটোবা রাজ্যগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ও মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
কানাডার সরকারি তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩০টি রাজ্য কিছু পরিমাণ বিদ্যুৎ কানাডা থেকে পায়। এছাড়াও, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ অপরিশোধিত তেল সরবরাহকারী দেশ।
অন্টারিওর প্রধানমন্ত্রী ডগ ফোর্ড প্রস্তাব দিয়েছেন, কানাডা যদি মার্কিন জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, তবে এটি মার্কিনিদের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হতে পারে, বিশেষ করে জ্বালানির দাম বাড়লে তা সরাসরি পাম্পের দামে প্রভাব ফেলবে।
অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ জুলিয়ান কারাগেসিয়ান বলেন, ‘একমাত্র জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি তাৎক্ষণিকভাবে মার্কিনিদের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। কারণ ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারে জ্বালানির দাম দ্রুত কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।’
৪. মার্কিন মদ প্রত্যাহার
অন্টারিওর প্রধানমন্ত্রী ফোর্ড বলেন, বিভিন্ন প্রদেশের প্রধানমন্ত্রীরা যদি রাজি হন, তাহলে আমেরিকার তৈরি মদ দোকানের শেলফ থেকে সরিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
তবে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডা চাইলে এই মুহূর্তে শুল্ক আরোপ নিয়ে প্রতিশোধের পর্যায়ে নাও যেতে পারে। কয়েক সপ্তাহ ধরে কানাডার কর্মকর্তারা তাদের মার্কিন সহকর্মীদের সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসিতে বৈঠক করছেন, যাতে কোনো মার্কিন শুল্ক আরোপ এড়ানো যায়।
তবে গতকাল সোমবার কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি বলেন, ‘পরিস্থিতি স্পষ্ট, যদি ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করেন, আমরা প্রস্তুত।’ তিনি বলেন, অটোয়া মার্কিন আমদানির ওপর ১৫৫ বিলিয়ন কানাডীয় ডলার মূল্যের পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে, যার প্রথম ধাপে ৩০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের শুল্ক অবিলম্বে কার্যকর করা হবে। এই শুল্কের তালিকায় পাস্তা, পোশাক ও সুগন্ধির মতো দৈনন্দিন ব্যবহারের পণ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
কানাডা আরও সংকেত দিয়েছে, সম্ভাব্য শুল্কের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য একটি প্রণোদনা কর্মসূচি চালু করা হতে পারে, যেমনটা করোনা মহামারির সময় করা হয়েছিল।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিশোধের অর্থনৈতিক খরচের কথা বিবেচনায় নিয়ে, কানাডার উচিত বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৈচিত্র্যময় করা এবং দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি করা। জুলিয়ান কারাগেসিয়ান বলেন, কানাডা এই শুল্কগুলোকে একটি সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে তাদের পণ্য অন্য বাজারে বিক্রি করতে পারে।
কানাডার কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য নীতি নিয়ে কর্মরত পিটার ক্লার্ক মনে করেন, যে কোনো বাণিজ্য যুদ্ধে কানাডা তুলনামূলকভাবে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ধাক্কা খেতে পারে। এই বৈষম্যের কারণেই লক্ষ্যভিত্তিক শুল্ক আরোপ প্রথম এবং সবচেয়ে নিরাপদ পদক্ষেপ।
নির্দিষ্ট মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে নিজের নাগরিকদের ওপর বড় ধরনের মূল্যবৃদ্ধির চাপ সৃষ্টি না করেই কানাডা যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। এই কৌশলের কারণেই কর্মকর্তারা ‘কানাডীয় পণ্য কিনুন’ প্রচারণাকে উৎসাহিত করছেন, যাতে প্রতিশোধমূলক শুল্কের প্রভাব কিছুটা কমানো যায়।
মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনাগুলোর অন্যতম প্রধান অংশ এই বাণিজ্য শুল্ক আরোপ। তিনি এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, চাকরি সুরক্ষা এবং কর রাজস্ব বৃদ্ধির একটি উপায় হিসেবে দেখেন। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপটি কানাডার অর্থনীতিতে ধ্বংসাত্মক তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলতে পারে, পাশাপাশি মার্কিন বাজারেও উচ্চমূল্যের কারণ হতে পারে।
তবে কিছু বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার ট্রাম্প রাজনৈতিকভাবে আগের মতো দুর্বল নন, কারণ তিনি হোয়াইট হাউসে তৃতীয় মেয়াদের জন্য প্রার্থী হতে পারবেন না। তাই এবার তার পদক্ষেপগুলো তীব্র আঘাত হানতে পারে।
কানাডার ওপর শেষ পর্যন্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেই ফেললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাল্টা শুল্ক আরোপ এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি নেওয়া কানাডা প্রতিক্রিয়ায় এবার কী করতে যাচ্ছে সেদিকে চোখ সবার। এদিকে বিশ্ববাণিজ্য বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদার দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ প্রায় নিশ্চিতভাবেই একটি বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করছে।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে ট্রাম্পের শুল্কের বিরুদ্ধে কানাডার লড়াই যেভাবে এগিয়ে যেতে পারে—
১. মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক
মার্কিন সরকারের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের মোট রপ্তানির ১৭ শতাংশ যায় কানাডায়, অন্যদিকে কানাডার ৭৫ শতাংশেরও বেশি রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রে যায়। এ অবস্থায় ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে কানাডার অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ১০ শতাংশ এবং স্টিলের ওপর ২৫ শতাংশের শুল্ক আরোপ করেছিলেন।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কানাডা বেশ কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছিল। ফ্লোরিডার কমলার রস, টেনেসি ও কেনটাকির হুইস্কি ও বোরবনের ওপর শুল্ক বসানো হয়েছিল। অবশ্য এক বছর পর এই শুল্ক লড়াইয়ে ইতি টানে দুই দেশ।
কানাডার শীর্ষ কর্মকর্তারা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ট্রাম্প আবারও শুল্ক আরোপ করলে, কানাডার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে সম্ভবত আবারও নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করবে।
তবে মন্ট্রিয়লের ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির প্রভাষক এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে কানাডার দূতাবাসের সাবেক ফিন্যান্স কাউন্সেলর জুলিয়ান কারাগেসিয়ান বলেন, ‘গতবারের মতো একই প্রভাব এবার পড়বে না।’
২. ‘ডলার-ফর-ডলার’ শুল্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রথম শুল্ক যুদ্ধে ডলার-ফর-ডলার শুল্ক কৌশল ব্যবহার করেছিল কানাডা। দেশটি মার্কিন অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের ওপর একই হারে শুল্ক আরোপ করেছিল এবং নিশ্চিত করেছিল, যে পরিমাণ মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বসানো হবে, তার মোট আর্থিক মূল্য যুক্তরাষ্ট্রের কানাডার রপ্তানির ওপর বসানো শুল্কের সমান হবে। সেই সময় এটির পরিমাণ ছিল প্রায় ১৬.৬ বিলিয়ন কানাডীয় ডলার।
এবার, ডলার-ফর-ডলার শুল্ক ব্যবহারের সম্ভাবনা আরও বড় পরিসরে হতে পারে। কানাডা এরই মধ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলারের সম্ভাব্য মার্কিন পণ্যের তালিকা প্রকাশ করেছে, যেগুলোর ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে ‘যতক্ষণ না যুক্তরাষ্ট্র কানাডার ওপর আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার করে’। এই তালিকায় কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে দাঁতের ফ্লস ও লাগেজের মতো ভোগ্যপণ্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এটি আরও ১১০ বিলিয়ন কানাডীয় ডলারের অতিরিক্ত পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির দিকে যেতে পারে। তবে, ট্রাম্প যত বেশি ব্যাপকভাবে শুল্ক আরোপ করবেন, কানাডাও তত বেশি মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বসাতে পারে।
অর্থনীতিবিদ জুলিয়ান কারাগেসিয়ান বলেন, মার্কিন শুল্কের ফলে কানাডা মন্দার মুখে পড়তে পারে। যদি কানাডা ডলার-ফর-ডলার শুল্কের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেখায়, তবে এটি মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি করতে পারে। শেষ পর্যন্ত ‘স্ট্যাগফ্লেশন’ বা নিশ্চলতা-স্ফীতিতে পরিণত হতে পারে, যেখানে উচ্চ মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি বেকারত্বও বেড়ে যায়।
৩. জ্বালানির ‘পারমাণবিক’ বিকল্প
কানাডার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদের একটি হলো জ্বালানি। মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির ৬০ শতাংশ কানাডা থেকে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো, বিশেষ করে, ভারমন্ট ও নিউইয়র্ক প্রতিবেশী কানাডীয় প্রদেশগুলোর কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। ব্রিটিশ কলম্বিয়া ও ম্যানিটোবা রাজ্যগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ও মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
কানাডার সরকারি তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩০টি রাজ্য কিছু পরিমাণ বিদ্যুৎ কানাডা থেকে পায়। এছাড়াও, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ অপরিশোধিত তেল সরবরাহকারী দেশ।
অন্টারিওর প্রধানমন্ত্রী ডগ ফোর্ড প্রস্তাব দিয়েছেন, কানাডা যদি মার্কিন জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, তবে এটি মার্কিনিদের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হতে পারে, বিশেষ করে জ্বালানির দাম বাড়লে তা সরাসরি পাম্পের দামে প্রভাব ফেলবে।
অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ জুলিয়ান কারাগেসিয়ান বলেন, ‘একমাত্র জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি তাৎক্ষণিকভাবে মার্কিনিদের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। কারণ ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারে জ্বালানির দাম দ্রুত কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।’
৪. মার্কিন মদ প্রত্যাহার
অন্টারিওর প্রধানমন্ত্রী ফোর্ড বলেন, বিভিন্ন প্রদেশের প্রধানমন্ত্রীরা যদি রাজি হন, তাহলে আমেরিকার তৈরি মদ দোকানের শেলফ থেকে সরিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
তবে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডা চাইলে এই মুহূর্তে শুল্ক আরোপ নিয়ে প্রতিশোধের পর্যায়ে নাও যেতে পারে। কয়েক সপ্তাহ ধরে কানাডার কর্মকর্তারা তাদের মার্কিন সহকর্মীদের সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসিতে বৈঠক করছেন, যাতে কোনো মার্কিন শুল্ক আরোপ এড়ানো যায়।
তবে গতকাল সোমবার কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি বলেন, ‘পরিস্থিতি স্পষ্ট, যদি ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করেন, আমরা প্রস্তুত।’ তিনি বলেন, অটোয়া মার্কিন আমদানির ওপর ১৫৫ বিলিয়ন কানাডীয় ডলার মূল্যের পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে, যার প্রথম ধাপে ৩০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের শুল্ক অবিলম্বে কার্যকর করা হবে। এই শুল্কের তালিকায় পাস্তা, পোশাক ও সুগন্ধির মতো দৈনন্দিন ব্যবহারের পণ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
কানাডা আরও সংকেত দিয়েছে, সম্ভাব্য শুল্কের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য একটি প্রণোদনা কর্মসূচি চালু করা হতে পারে, যেমনটা করোনা মহামারির সময় করা হয়েছিল।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিশোধের অর্থনৈতিক খরচের কথা বিবেচনায় নিয়ে, কানাডার উচিত বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৈচিত্র্যময় করা এবং দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি করা। জুলিয়ান কারাগেসিয়ান বলেন, কানাডা এই শুল্কগুলোকে একটি সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে তাদের পণ্য অন্য বাজারে বিক্রি করতে পারে।
কানাডার কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য নীতি নিয়ে কর্মরত পিটার ক্লার্ক মনে করেন, যে কোনো বাণিজ্য যুদ্ধে কানাডা তুলনামূলকভাবে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ধাক্কা খেতে পারে। এই বৈষম্যের কারণেই লক্ষ্যভিত্তিক শুল্ক আরোপ প্রথম এবং সবচেয়ে নিরাপদ পদক্ষেপ।
নির্দিষ্ট মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে নিজের নাগরিকদের ওপর বড় ধরনের মূল্যবৃদ্ধির চাপ সৃষ্টি না করেই কানাডা যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। এই কৌশলের কারণেই কর্মকর্তারা ‘কানাডীয় পণ্য কিনুন’ প্রচারণাকে উৎসাহিত করছেন, যাতে প্রতিশোধমূলক শুল্কের প্রভাব কিছুটা কমানো যায়।
মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনাগুলোর অন্যতম প্রধান অংশ এই বাণিজ্য শুল্ক আরোপ। তিনি এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, চাকরি সুরক্ষা এবং কর রাজস্ব বৃদ্ধির একটি উপায় হিসেবে দেখেন। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপটি কানাডার অর্থনীতিতে ধ্বংসাত্মক তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলতে পারে, পাশাপাশি মার্কিন বাজারেও উচ্চমূল্যের কারণ হতে পারে।
তবে কিছু বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার ট্রাম্প রাজনৈতিকভাবে আগের মতো দুর্বল নন, কারণ তিনি হোয়াইট হাউসে তৃতীয় মেয়াদের জন্য প্রার্থী হতে পারবেন না। তাই এবার তার পদক্ষেপগুলো তীব্র আঘাত হানতে পারে।
বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক আরও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে এশিয়ার নতুন তিনটি গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এমিরেটস এয়ারলাইন। নতুন গন্তব্যগুলোতে ফ্লাইট চালু হলে এশিয়ার ২৪টি গন্তব্যে এমিরেটসের সাপ্তাহিক ফ্লাইটের সংখ্যা ২৬৯ টিতে উন্নীত হবে।
৩ ঘণ্টা আগেআন্তর্জাতিক তেল বাজারে আজ মঙ্গলবারও দরপতন অব্যাহত আছে। এর পেছনে প্রধান কারণ ছিল—তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাসের পরিকল্পিত উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর শুল্ক আরোপের প্রভাব। একই সঙ্গে বেইজিংও পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে, যা বাজারে উদ্বেগ বাড়িয়
৩ ঘণ্টা আগেমাইন্ডশেয়ার বাংলাদেশ, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অর্জন করল মর্যাদাপূর্ণ ‘অরিজিনাল মিডিয়া ইনোভেশন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার | প্রত্যেক বছর শেষে মাইন্ডশেয়ার গ্লোবাল এই পুরস্কারের ঘোষণা করে। প্রায় ৩৫০টি এন্ট্রি এবং ৩২টি মার্কেট –এর প্রতিযোগিতার মধ্য থেকে ‘রিন বিপ কল ক্যাম্পেইন’ অর্জন করে এই অভূতপূর্ণ সাফল্
৫ ঘণ্টা আগেজাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বেশ কয়েকটি পণ্যে ভ্যাট অব্যাহতির ঘোষণা দিয়েছে, যা বাজার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ তালিকায় রয়েছে দেশে উৎপাদিত বিস্কুট, লবণ, সরিষার তেল, আটা, ময়দা, এলপি গ্যাসসহ বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। কিছু পণ্যে উৎপাদন পর্যায়ে ও কিছুতে...
১৭ ঘণ্টা আগে