উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম হেলথ হিউম্যানিটিজ ল্যাব উদ্বোধন 

উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে বাংলা বিভাগের সংযোজন দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম হেলথ হিউম্যানিটিজ ল্যাব উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। ১৩ নভেম্বর বেলা ৩টায় এটি উদ্বোধন হবে। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. আহমেদুল কবীর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর প্রফেসর ডা. রোবেদ আমিন, এএমজেড হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ সায়েম, অ্যাডমিশন অ্যান্ড প্রোমোশন উপদেষ্টা আবিদ আজিজ। 

বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সামজীর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ইয়াসমিন আরা লেখা। উদ্বোধনী আয়োজনে হেলথ হিউম্যানিটিজ ও মেডিকেল হিউম্যানিটিজ বিষয়ে কি-নোট স্পিকার বাংলা বিভাগের শিক্ষক এবং মেডিকেল হিউম্যানিটিজ ও ট্রমা স্টাডিজ গবেষক ফারাহ বিনতে বশির দোলন। 

১৯৪৮ সালে জর্জ সার্টন ও ফ্রান্স সাইগেল নামে দুজন বিখ্যাত ব্যক্তি মেডিকেল হিউম্যানিটিজ এই টার্মটির প্রচলন করেন। ১৯৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিজ কলেজ অব মেডিসিন সর্বপ্রথম ডিপার্টমেন্ট অব হিউম্যানিটিজ নামে একটি মানবিকীবিদ্যা বিভাগ চালু করে। 
চিকিৎসাবিজ্ঞান পড়ানো হয় এমন একটি কলেজে হিউম্যানিটিজ বা মানবিকীবিদ্যার সংযোজনের বিষয়টি ছিল এক বিস্ময়। এই বিভাগের মূল উদ্দেশ্য ছিল চিকিৎসকদের আরও সহানুভূতি প্রবণ, ভালো শ্রোতা ও মানবিক করে তোলা। 
 
এরপর হেলথ হিউম্যানিটিজ অধ্যায়টি শুধু চিকিৎসক ও রোগীর মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না। এই ধাপে রোগীকে বলা হয় ভুক্তভোগী। একই সঙ্গে এই ধাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যদেরও। অর্থাৎ যাঁরা স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন ও যাঁরা সেবা নিচ্ছেন, তাঁরা সবাই চলে আসে হেলথ হিউম্যানিটিজের আওতায়। 

মূলত হিলিংয়ের প্রসেসকে ত্বরান্বিত করাই এর কাজ। এ ছাড়া ক্রনিক ইলনেসকে সাহায্য করা যেমন যে অসুখগুলো চিকিৎসা শাস্ত্র আর সমাধান দিতে পারে না, বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদি ক্রনিক ডিজিজ—হেলথ হিউম্যানিটিজ সেই অসুখগুলোর ক্ষেত্রে কিছুটা আরাম দিতে ব্যবস্থা করে। হেলথ হিউম্যানিটিজ এমার্জিং একটি ডিসিপ্লিন এবং ইউরোপে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ডিসিপ্লিনের বিভাগ বা সেন্টার রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত, শ্রীলঙ্কার কিছু গবেষক মেডিকেল হিউম্যানিটিজ বিষয়ে কাজ করছেন। 

আমাদের দেশে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ছাত্র, শিক্ষক, পাবলিক হেলথের ছাত্র, শিক্ষক, মানবিকীবিদ্যার ছাত্র শিক্ষকেরা মেডিকেল হিউম্যানিটিজ নিয়ে কাজ করতে পারবেন। চিকিৎসা গ্রহণকারী এবং চিকিৎসা প্রদানকারী—উভয়েরই এই থেরাপিউটিক টুলস দ্বারা উপকৃত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। সংগীত, নৃত্য, চিত্রকলা, সাহিত্যসহ আরও বেশ কিছু থেরাপিউটিক টুলস—মেডিকেল হিউম্যানিটিজের অন্তর্ভুক্ত। 

ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কান একজন ইমিরেটাস অধ্যাপক, ইউনিভার্সিটি অব কলম্বোর মেডিকেল হিউম্যানিটিজ বিভাগের প্রধান ডা. সারোজ জায়াসিংহে, ভারতের আইআইটি মাদ্রাজের সেন্টার ফর মেমোরি স্টাডিজের ডিরেক্টর ড. অভিশেক পারুই এবং আইআইটি ত্রিচির আর্ট অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সাত্যারাজ ভেনকাটাসান বাংলাদেশে উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া এই মেডিকেল হিউম্যানিটিজ ল্যাবের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে পাশে থাকতে সম্মতি জানিয়েছেন।