Ajker Patrika

১ লাখ ২০ হাজার ডলারে বিটকয়েন, ঠেকবে কোথায় গিয়ে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, ১৮: ৩০
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

১ লাখ ২০ হাজার ডলারে পৌঁছে নতুন রেকর্ড গড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপটো মুদ্রা বিটকয়েন দাম। নতুন করে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন নীতিমালার কারণে বিটকয়েনকে এখন অনেক বেশি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকলে বিটকয়েনের পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার!

বিটকয়েনের মূল্য বৃদ্ধির এই প্রবণতা সম্পর্কে বাজার বিশ্লেষক জশ গিলবার্ট বলেছেন, ‘বর্তমানে যে আগ্রহ আমরা দেখছি, তা মূলত গঠনমূলক বিনিয়োগপ্রবাহের ফল। এটি সাময়িক জল্পনার নয়।’ তাঁর মতে, এর প্রমাণ মিলেছে বিটকয়েন এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ডে (ইটিএফ) বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে।

বিটগেট রিসার্চের প্রধান বিশ্লেষক রায়ান লি জানিয়েছেন, বিটকয়েনের গড় মূল্য তৃতীয় প্রান্তিকে ১ লাখ ২৫ হাজার ডলারে পৌঁছাতে পারে। তিনি আরও জানান, সমর্থন স্তর ১ লাখ ৮ হাজার ৫০০ ডলার এবং প্রতিরোধ স্তর ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার—এই সীমাগুলো বাজারের গতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তবে এই ঊর্ধ্বগতি একটানা চলবে না বলেও মত দিয়েছেন ডি’ভেয়ার গ্রুপের সিইও নাইজেল গ্রিন। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের বিনিয়োগ ধাক্কা খেয়েই এগিয়ে যায়। প্রথমে উত্থান, তারপর স্থিরতা, এরপর আবার ব্রেকআউট। আমরা এখন এসব পর্যায়ে আছি।’

মার্কিন ব্যাংক সুইসকোটের বিশ্লেষক ইপেক ওজকার্ডেস্কায়ার মতে, বাজারে বর্তমানে ‘লোভ’-এর সূচক ৭০-এ পৌঁছেছে, যা অতিরিক্ত কেনাবেচার ইঙ্গিত দেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন ও উদীয়মান অর্থনীতিতে ক্রিপটো গৃহীত হওয়া এই উত্থানের পেছনে মূল চালিকা শক্তি।

কে কিনছে বিটকয়েন?

ই-টোরোর বিশ্লেষক গিলবার্ট জানান, বিটকয়েনে এখন প্রচুর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ আসছে। হেজ ফান্ড, মিউচুয়াল ফান্ড এমনকি কিছু পাবলিক কোম্পানি তাদের ট্রেজারি রিজার্ভের অংশ হিসেবেও বিটকয়েন গ্রহণ করছে। পেনশন ফান্ড ও সার্বভৌম সম্পদ তহবিলও ইটিএফ-এর মাধ্যমে বিটকয়েন কিনছে, যা স্থায়ী চাহিদা তৈরি করছে।

ক্রিপটো নিয়ে একসময় সন্দিহান থাকা ট্রাম্প এখন ডিজিটাল অ্যাসেটের প্রবল সমর্থক। তাঁর রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এবং নীতিগত সহায়তা এই খাতের পুনরুত্থানে ভূমিকা রেখেছে। মার্কিন কংগ্রেসে এই সপ্তাহে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিল—ক্ল্যারিটি অ্যাক্ট, অ্যান্টি-সিবিডিসি সার্ভিল্যান্স স্টেট অ্যাক্ট এবং জিনিয়াস অ্যাক্ট উপস্থাপন হতে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলো মার্কিন ক্রিপটো নীতিতে কাঠামোগত পরিবর্তন আনবে।

অ্যাভা ল্যাবস-এর প্রতিনিধি দেবিকা মিত্তল বলেন, ‘আগে যেটিকে ডিজিটাল ওয়াইল্ড ওয়েস্ট মনে করা হতো, এখন সেখানে গঠনমূলক আইন আসছে। এমনকি ভিয়েতনামের মতো দেশও এখন মার্কিন নেতৃত্ব অনুসরণ করছে।’

বিশ্লেষক নাইজেল গ্রিন বলেন, ‘এটা আর প্রান্তিক কোনো আন্দোলন নয়। এটা এখন মূলধারার অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু।’

বিটকয়েনের এই উত্থান শুধু বিনিয়োগ নয়, বরং অর্থনৈতিক কাঠামো পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে—যেখানে ব্লক চেইন ও ডিজিটাল অ্যাসেট ভবিষ্যতের বড় অংশীদার হয়ে উঠছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত