Ajker Patrika

অর্থবছরের প্রথম ৭ মাস

বিক্রির চেয়ে আসল ও সুদ পরিশোধ বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিক্রির চেয়ে আসল ও সুদ পরিশোধ বেড়েছে

সরকার পরিবর্তনের পর একসময় বাড়তে থাকা সঞ্চয়পত্র বিক্রি ফের ধসের মুখে পড়েছে। গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত টানা তিন মাস সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে আগের আসল ও সুদের পরিশোধ বেড়েছে। ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি নেতিবাচকে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭ হাজার ১৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের সপ্তম মাস জানুয়ারিতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ঋণাত্মক ধারায় রয়েছে। জানুয়ারিতে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে ৪ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ছিল ঋণাত্মক। ওই সময়ে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল ১ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। অপর দিকে চলতি অর্থবছরের ষষ্ঠ মাস ডিসেম্বরেও সঞ্চয়পত্র বিক্রি ছিল ঋণাত্মক। এই মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল ৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। এ ছাড়া নভেম্বরেও ঋণাত্মক ধারায় ছিল সঞ্চয়পত্র বিক্রি। ওই মাসে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে ৩ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, সুদের হার হ্রাস ও নানা ধরনের কড়াকড়ি আরোপের কারণে সাধারণ মানুষের সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে। সে কারণে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়েছে। ফলে সরকারকে কোষাগার থেকে সুদ-আসল পরিশোধ করতে হচ্ছে। বাজারে অধিকাংশ জিনিসের দাম চড়া। মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে। পরিবহন, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ অন্য সব খাতে খরচ বেড়েছে। এতে মানুষের সঞ্চয় করার ক্ষমতা কমেছে। এর প্রভাব পড়ছে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সঞ্চয়পত্র বিক্রি ঋণাত্মক। এই ৭ মাসে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে ৭ হাজার ১৩ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ছিল ঋণাত্মক। ওই সময়ে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল ৭ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১২ মাসে আগের আসল ও সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে ২১ হাজার ১২৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

সঞ্চয়পত্র-2

এদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সরকার। এখন পর্যন্ত ঋণ তো দূরের কথা, আগের দায় মেটাতে নিট পরিশোধ করতে হয়েছে বিপুল অঙ্কের অর্থ। গত অর্থবছরেও (২০২৩-২৪) সরকারের নিট ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা, কিন্তু সেই বছর সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে এক টাকাও ঋণ নিতে পারেনি; বরং ২১ হাজার ১২৪ কোটি টাকা অতিরিক্ত আসল ও সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের বিপরীতে সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ। আর ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে নতুন মুনাফার হার ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ। পরিবার সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে সুদহার ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবির সিন্ডিকেটে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের চূড়ান্ত অনুমোদন

শ্বশুরকে জামাতার ফোন: ‘আপনার মেয়েকে মাইরা ফেলছি, লাশ নিয়ে যান’

স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে গেলেন ইমামতি করতে

ঐতিহাসিক শিমলা চুক্তি বাতিল করল পাকিস্তান, এর প্রভাব কী

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের জামাতাকে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত