Ajker Patrika

ব্যাংকে প্রয়োজনীয় টাকা তুলতে না পেরে ক্ষুব্ধ গ্রাহক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ব্যাংকে প্রয়োজনীয় টাকা তুলতে না পেরে ক্ষুব্ধ গ্রাহক

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে গত ৮ আগস্ট ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তোলার সীমা বেঁধে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রথম দিকে উত্তোলনের সীমা ১ লাখ টাকা থাকলেও পর্যায়ক্রমে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে তা বাড়ানো হয়। চলতি সপ্তাহে এ সীমা ৫ লাখ টাকা। তবে এতে অনেক গ্রাহক ব্যাংক থেকে প্রয়োজনমতো টাকা তুলতে পারছেন না। অপরদিকে চট্টগ্রাম বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যার কারণে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না গ্রাহকেরা। নিজের টাকা ব্যাংক থেকে তুলতে না পারায় গ্রাহকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।  

মনিরুল ইসলাম নামে এক গ্রাহক গত রোববার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের রামপুরা শাখায় ৫ লাখ টাকার চেক দিলেও টাকা তুলতে পারেননি। ক্যাশ কাউন্টার থেকে জানানো হয়, নগদ ৫ লাখ টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। বাধ্য হয়ে নতুন চেক দিয়ে মাত্র ৫০ হাজার টাকা তুলতে সক্ষম হন তিনি। একই শাখায় টাকা তুলতে আসা অপর গ্রাহক ইশরাত জাহান ২০ হাজার টাকার চেক দিলে তাঁকে ১৫ হাজার টাকা নগদ দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত অভিযোগ নম্বরে কল করলে কোনো সন্তোষজনক জবাব পাননি মনিরুল ইসলাম।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকে চেক নিয়ে ঘোরাঘুরি করেও চাহিদামতো টাকা তোলা যায়নি গত সপ্তাহের পুরোটা সময়, যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন গ্রাহকেরা।

এদিকে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বগুড়ার দুপচাঁচিয়া শাখার গ্রাহক এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ব্যবসায়ী হিসেবে ৫ লাখ টাকার দুটি চেক জমা দিয়ে তিন দিন ধরনা দিয়েও টাকা উত্তোলন করতে পারিনি। টাকা তুলতে না পারায় কর্মীদের বেতন দেওয়া এবং অন্যান্য খরচ মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। আজব একটা দেশ, নিরাপত্তার অজুহাতে ব্যাংক গ্রাহককে টাকা দিচ্ছে না। এর শেষ কবে, সেটাও জানায় না কেউ।’

গতকাল সরেজমিন রাজধানীর মতিঝিল, দিশকুশা, পল্টন, মালিবাগ, রামপুরায় ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, সাউথইস্ট, স্ট্যান্ডার্ড, জনতা, রূপালী, সোনালী ব্যাংকের শাখা ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে কোনো ব্যাংক ৫ লাখের বেশি টাকার চেক নিচ্ছে না। কোনো কোনো ব্যাংকে নগদ টাকা না থাকায় শাটার ফেলে রাখতে দেখা গেছে। 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর গত ৮ আগস্ট ব্যাংক থেকে টাকা তোলার সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। টাকা উত্তোলনের সর্বোচ্চ সীমা পর্যায়ক্রমে ১ লাখ থেকে ২ লাখ, পরের সপ্তাহে ৩ লাখ এবং তার পরের সপ্তাহে ৪ লাখ টাকা করা হয়। চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ব্যাংক থেকে এক দিনে চেকের মাধ্যমে টাকা তোলার সীমা করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৫ লাখ।
অগ্রণী ব্যাংকের গ্রাহক এবং ব্যবসায়ী মাসুদ জানান, ব্যাংক থেকে ৫০ লাখ টাকা তুলতে না পারায় কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছেন না।

তিনি বলেন, ‘নিজের টাকা তুলতে পারছি না, এটা অন্যায়। চুরি-ডাকাতি হলে আমার টাকা যাবে। তবু এসব থেকে মুক্তি দরকার।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে ব্যাংক থেকে চেকের মাধ্যমে নগদ টাকা তোলার সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি যত ভালো হচ্ছে, টাকা তোলার সীমা তত বাড়ানো হচ্ছে। তবে কবে সীমা তুলে দেওয়া হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। এতে গ্রাহকদের সাময়িক সমস্যা হলেও কিছু করার নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত