Ajker Patrika

হঠাৎই উড়ছে রূপালীর শেয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

বিরাট কোনো লাভের তথ্য নেই। তালিকাভুক্তির পর থেকে কখনোই বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। সামনে ব্যাংকের ব্যবসা বা বিনিয়োগ প্রসারে বড় কোনো পরিকল্পনার কথাও জানা যাচ্ছে না। তারপরও ৯ মাস ধরে সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা রূপালী ব্যাংকের শেয়ার হঠাৎ করেই চাঙা। কোন জাদুর কাঠির স্পর্শে মাত্র ১০ কার্যদিবসে শেয়ারটির দাম ৪৪ শতাংশ বাড়ল—এই নিয়ে বাজারজুড়ে শোরগোল শুরু হয়েছে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় শেয়ারটির দাম মাত্র ১৭ পয়সা বেড়েছে। এই খবরকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র শেয়ারটি নিয়ে খেলছে। এ ছাড়া এমন দাম বাড়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ প্রদানের ইতিহাস নেই ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠান রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের। স্টক ডিভিডেন্ড বা বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে শুধু কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন বাড়ানো হয়েছে।

গত সোমবার ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে জানানো হয়েছে, রূপালী ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়ার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। ডিএসইর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণ জানাতে ডিএসই থেকে নোটিশ পাঠানো হয়। এর জবাবে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দাম এবং লেনদেন বেড়েছে, তার জন্য কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।

২০২১ সালে ধস নামার পর ২০২২ সালে আয় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তবে তা ২০২০ সালের আয়কে ছাড়াতে পারেনি। এ ছাড়া চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির ইপিএস বেড়েছে কেবল ১৭ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ২১ পয়সা, যা এ বছর হয়েছে ৩৮ পয়সা। 
এখানেই শেষ নয়। ব্যাংকটির ২০২২ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে প্রভিশন ঘাটতির কথা উল্লেখ করেছে নিরীক্ষক। যদিও এর জন্য চলতি বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সময় পেয়েছে ব্যাংকটি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৩৫২ কোটি টাকা ইডিএফ ফান্ড ও অন্যান্য ধারের বিপরীতে ব্যাংকটির ওই বছর পর্যন্ত কোনো সম্পদ ছিল না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে ব্যাংকটি অমীমাংসিত ফরেন কারেন্সিও সেটেল করা হয়নি বলে জানানো হয়। এ ছাড়া বেশ কিছু অসংগতি পাওয়া যায় আর্থিক হিসাবে।

অথচ শেয়ারটির দর গত বছরের ১৭ অক্টোবর থেকে গত ৩ জুলাই পর্যন্ত ২৫ টাকা ২০ পয়সায় আটকে ছিল, যা শেয়ারটির ফ্লোর প্রাইস। মাঝে কেবল ২২ জানুয়ারি ১০ পয়সা বেড়ে সামান্য কিছু শেয়ার লেনদেন হয়। এরপর হঠাৎ শেয়ারদরের শিকল ছিঁড়ে ক্রমাগত ওপরের দিকে উঠতে থাকে ৪ জুলাই থেকে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ৩ জুলাই কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ২৫ টাকা ২০ পয়সা। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে প্রতিটি শেয়ারের দাম গত সোমবার পর্যন্ত ৩৬ টাকা ২০ পয়সায় ঠেকে। অর্থাৎ এই সময়ে ১১ টাকা বা ৪৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ দর বেড়েছে।

এ বিষয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে কেবল ১৭ পয়সা আয় বৃদ্ধির খবরকে কাজে লাগাচ্ছে কেউ কেউ। এ ছাড়া ব্যাংকটির হিসাবে আহামরি কিছুই হয়নি। এমন দর বাড়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না।

এসব বিষয়ে জানতে কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ শাহেদুর রহমানের মোবাইল নম্বরে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত