Ajker Patrika

উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়ন জমা, প্রস্তুতি জমজমাট

  • দুই প্যানেলে ৯৩ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা
  • চূড়ান্ত ভোটার ১ হাজার ৮৬৪ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯: ০৫
উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়ন জমা, প্রস্তুতি জমজমাট

জমে উঠেছে বিজিএমইএ নির্বাচন। আগামী ৩১ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠনের ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচন। এ উপলক্ষে গতকাল শনিবার উত্তরার বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দুই প্রধান প্যানেল—‘সম্মিলিত পরিষদ’ ও ‘সম্মিলিত ফোরাম’-এর প্রার্থীরা। এর আগে ২৪ এপ্রিল বিজিএমইএর দপ্তরে ছয়জন স্বতন্ত্র প্রার্থীও মনোনয়নপত্র জমা দেন।

নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড জানিয়েছে, স্বতন্ত্রসহ দুই প্যানেলের মোট ৯৩ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। পরে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচনি বোর্ড সবার প্রার্থিতাই বহাল রেখেছে।

এর আগে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে মোট ১ হাজার ৮৬৪ জন ভোটার অংশ নেবেন, যার মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ জন এবং চট্টগ্রামে ৩০৩ জন। নিয়ম অনুসারে নির্বাচিত ৩৫ সদস্যের মধ্য থেকে পরবর্তী সময়ে একজন সভাপতি ও সাতজন সহসভাপতি নির্বাচিত হবেন। অন্যরা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে থাকবেন।

গতকাল মনোনয়নপত্র জমার দিন সকাল থেকেই বিজিএমইএ ভবনে ছিল প্রাণচাঞ্চল্য। এ সময় প্রার্থীদের স্বাগত জানান সংগঠনের প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন।

সকালে প্রথমে মনোনয়নপত্র জমা দেয় ‘সম্মিলিত ফোরাম’ প্যানেল। দলটির নেতৃত্ব দেন রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান বাবু। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহা, আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ, ফোরামের সভাপতি এম এ সালাম, প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী ফয়সাল সামাদসহ শীর্ষ নেতারা।

পরে ‘সম্মিলিত পরিষদ’-এর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পরিষদের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান এবং চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্যানেল লিডার আবুল কালামসহ অন্য নেতারা।

মনোনয়ন জমা শেষে নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান বিসিআইসির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল প্রার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে নির্বাচনি প্রক্রিয়া সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সব প্রস্তুতি দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

প্রথমে ৮ মার্চ ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ২৮ মে, ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিজিএমইএ কার্যালয়ে। পরে ১৩ মার্চ সংশোধিত তফসিল জারি করে নির্বাচন পিছিয়ে ৩১ মে এবং ভোটকেন্দ্র স্থানান্তর করে হোটেল র‍্যাডিসনে নেওয়া হয়। এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে সম্মিলিত পরিষদ আপত্তি জানিয়েছে। বিজিএমইএর প্রশাসককে দেওয়া চিঠিতে তারা ভোট নিজস্ব কার্যালয়ে করার যৌক্তিকতা তুলে ধরে এবং হোটেল ভাড়াসংক্রান্ত খরচকে অপচয় বলে উল্লেখ করে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সাড়া মেলেনি।

নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সম্মিলিত পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিশন কেন ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা তারা পরিষ্কার করে ব্যাখ্যা করেনি। তাদের দেওয়া ব্যাখ্যায় আমরা সন্তুষ্ট নই। এ জন্য আমরা চিঠির মাধ্যমে নির্বাচনটি বিজিএমইএর নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজন করার অনুরোধ জানিয়েছি।’

অন্যদিকে সম্মিলিত ফোরাম নেতা মাহমুদ হাসান খান বাবু জানান, তাঁদের লক্ষ্য একটি আধুনিক, জবাবদিহিমূলক বিজিএমইএ গঠন এবং সদস্যদের স্বার্থরক্ষা ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় সংগঠনকে আরও দৃঢ় করা।

বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রতিযোগিতায় সম্মিলিত ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ দুটি গ্রুপের আধিপত্য দীর্ঘদিনের। গত নির্বাচনে (২০২৪-২৬) সম্মিলিত পরিষদ সব কটি পদে জয়ী হয়েছিল। বর্তমানে নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিসিআইসির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল। এ ছাড়া নির্বাচনি আপিল বোর্ডের নেতৃত্বে রয়েছেন এপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত