Ajker Patrika

রাজস্বে বিশাল লক্ষ্য অর্জন নিয়ে জাহিদ হোসেনের সংশয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন। ফাইল ছবি
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন। ফাইল ছবি

বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জন করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল। কিন্তু এই বছর ৪ লাখ কোটি টাকা আদায় করা যাবে কিনা, তা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কীভাবে সম্ভব হবে, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।

আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট অর্থায়নের সীমাবদ্ধতার কারণে বাস্তবায়নযোগ্য হবে না বলেও এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘এই বাজেট গতানুগতিক ধারারই অংশ। বাজেটে যে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জন করা সম্ভব হবে না। আগামী এক বছরের মধ্যেও সরকারের সেই সক্ষমতা তৈরি হবে না।’

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির এই সদস্য উল্লেখ করেন, রাজস্ব আদায় না হলে সরকারের ঘাটতি বেড়ে যাবে। সেই ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকের ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, বাজেট ঘাটতি হিসেবে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা সহনীয় এবং অর্থায়নযোগ্য। তবে এর বেশি হলে অর্থনীতিতে, বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতে, ব্যক্তি খাতে ঋণ প্রবাহ, সুদের হার, মুদ্রা বিনিময় হারসহ সব খাতে চাপ অনেক বেড়ে যাবে, যা সহ্য করা কঠিন হবে।

ড. জাহিদ হোসেন বলেন, আয়কর অব্যাহতির ক্ষেত্রে যাদের ধরা যায় না, তাদেরও ধরার চেষ্টা করা হয়েছে এবং ভ্যাটের ক্ষেত্রে অব্যাহতি ব্যাপকভাবে কমানো হয়েছে। তবে দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার ক্ষেত্রে আমদানি প্রতিযোগিতায় উদ্যোক্তারা যে সুরক্ষা পেতেন, সেখানে আমদানি শুল্ক এবং ভ্যাট দুটোই কমানো হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে সরকার অনেক সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে দেশীয় উদ্যোক্তারা কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখান, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ঋণের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তার মধ্যেই সরকারকে থাকতে হবে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি আশা করেন যে আগামী অর্থবছর আমানতের প্রবৃদ্ধি আরও কিছুটা বাড়বে। সরকার যদি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই ঋণ নেয়, তাহলে সুদের হারে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ঋণ নিলে ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার বেড়ে যাবে এবং ব্যাংকগুলোর ব্যক্তি খাতে ঋণ দেওয়ার আগ্রহ কমে যাবে।

শেয়ারবাজারকে চাঙা করতে বাজেটে কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যা ইতিবাচক দিক। তবে বিনিয়োগের জন্য যে কাঠামোগত সংস্কার দরকার, সেই বিষয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত