Ajker Patrika

পাকিস্তান থেকে ২৫ হাজার টন চাল আসছে মার্চে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১: ০৪
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: আরব নিউজের সৌজন্যে
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: আরব নিউজের সৌজন্যে

পাকিস্তান থেকে ২৫ হাজার টন চালের একটি চালান বাংলাদেশে আসছে আগামী মার্চ মাসের শুরুতেই। বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জিয়া উদ্দিন আহমেদ সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত ১০ জানুয়ারি পাকিস্তান থেকে আতপ চাল আমদানির লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের পর, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নতির পথে আছে। গত আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক অনেকটাই এগিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্কও শুরু হয়েছে। এই চাল আমদানির মাধ্যমে পাঁচ দশকেরও বেশি সময় পর দুই দেশের সরকারের মধ্যে সরাসরি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য পুনরায় শুরু হতে যাচ্ছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জিয়া উদ্দিন আহমেদ আরব নিউজকে বলেন, ‘প্রথম চালানে ২৫ হাজার টন চাল আগামী ৩ মার্চ বাংলাদেশে পৌঁছাবে। ১৯৭১ সালের পর এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সরকার পর্যায়ে পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি শুরু করল।’

এর আগে, পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক সংযোগের শুরু হয় গত বছরের নভেম্বরে। সে সময় ১৯৭১ সালের পর প্রথমবারের মতো কোনো পাকিস্তানি কার্গো জাহাজ বাংলাদেশের বন্দরে নোঙর করে। বেসরকারি উদ্যোগে এই আমদানি ও রপ্তানির কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক আমেনা মহসিন বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য পুনরায় শুরু করা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে যাক। আমরা সব সময় সম্পর্কের বহুমুখীকরণে গুরুত্ব দিই। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, বর্তমানে আমাদের ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে...এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।’

বাংলাদেশের চাল সংকট মোকাবিলায় পাকিস্তান থেকে আমদানির এই সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্যা ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে ব্যাপক পরিমাণে চাল আমদানি করতে হচ্ছে যাতে বাজারে সংকট না দেখা দেয়। চাল আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান বাজার ভারত।

এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে চালের সংকট রয়েছে, তাই প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে বিভিন্ন উৎস থেকে চাল সংগ্রহ করা জরুরি। এই দৃষ্টিকোণ থেকে নতুন একটি উৎস খুঁজে পাওয়া আমাদের জন্য ইতিবাচক ব্যাপার।’

এর আগে, ১৪ জানুয়ারি পাকিস্তান থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে আতপ চাল আমদানি করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের খাদ্য অধিদপ্তর ও ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তানের (টিসিপি) মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে এ সমঝোতা স্মারক এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে বলে আশা করা হয়।

খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল খালেক এবং ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তানের চেয়ারম্যান সৈয়দ রাফিউ বশির শাহ এ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। সে সময় খাদ্যসচিব মো. মাসুদুল হাসান, পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল সেক্রেটারি শাকিল আহমেদ মাঙ্গনিজো ও বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফসহ উভয় পক্ষের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত