Ajker Patrika

মহাসড়কের দু-পাশে নেই মাটি, ঘটছে দুর্ঘটনা

কোম্পানীগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি
মহাসড়কের দু-পাশে নেই মাটি, ঘটছে দুর্ঘটনা

বাইসাইকেলে করে পত্রিকা ফেরি করেন আব্দুল হেকিম। বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের পাশ ধরে চালাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি ট্রাক এতটাই কাছে এসে যায় যে তিনি জীবন বাঁচাতে পিচ থেকে পাশে নামার চেষ্টা করেন। কিন্তু মাটির নাগাল না পেয়ে সাইকেল নিয়েই পড়ে যান পাশের গর্তে। আহত হন তিনি। একইভাবে মাটির নাগাল না পেয়ে গর্তে পড়েন অটো চালক রফিক।

শুধু আব্দুল হেকিম ও রফিক নন, প্রায়ই এ জাতীয় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের চালকেরা। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সড়কটি। পানির তোড়ে সরে গেছে সড়কের বেশ কিছু অংশের মাটি। মহাসড়কের ইসলামপুর থেকে টুকেরবাজার পর্যন্ত অংশের পুরোটাই মাটি সরে গেছে। অনেক স্থানে দু-তিন ফুট গর্ত হয়ে গেছে। এসব জায়গায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। 

তবে, এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মহাসড়কের হাবির দোকানের জায়গা। সেখানে রাস্তার নিচ থেকে মাটি সরে গেছে বেশ কয়েক ফুট। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ওই অংশটিতে বেইলি ব্রিজ করে যানবাহন চলাচল সচল রাখা হয়। 

এদিকে, বন্যার পানি নেমে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের সংস্কার কাজে হাত দেয়নি সওজ বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কেউই। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়েই চালকেরা যানবাহন চালাচ্ছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৩১ মে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়ককে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। পরে ৪৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয় ধরে ৩১ দশমিক ৭৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের কাজ ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেষ হওয়ার কথা ছিল। সময়ের ব্যবধানে কয়েক ধাপে বাড়ে এর নির্মাণব্যয় ও সময়কাল। চুক্তির প্রায় পাঁচ বছর পর মহাসড়কের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় প্রায় সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া ওয়েটস্কেল স্থাপনসহ আরও অনেক কাজে নির্মাণ ব্যয় ছাড়িয়ে যায় হাজার কোটি টাকা। নির্মাণকাজের পর চুক্তি অনুযায়ী ৩ বছরের রাস্তা দেখভাল করার দায়িত্ব পায় স্প্রেক্টা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি। 

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বন্যায় বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের বিভিন্ন অংশের মাটি সরে গেছে। মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। পানি নেমে গেলে মাটির ব্যবস্থা করে সোল্ডার করা হবে। 

মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে মহাসড়কের অনেকাংশে ব্লক বসানো হয়নি। এবারের বন্যার পর আমাদের নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। পানি নেমে গেলে এস্টিমেশন করা হবে। মহাসড়কের হাবির দোকানের ওই জায়গাটায় রিটেইনিং ওয়াল (ধারণকারী প্রাচীর) করে স্পেশাল মেথডে কাজ করতে হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত