Ajker Patrika

নদী-খাল খননে স্বস্তিতে সুনামগঞ্জে কৃষকেরা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬: ০৪
নদী-খাল খননে স্বস্তিতে সুনামগঞ্জে কৃষকেরা

২০২১ সালের জুনে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে সুনামগঞ্জবাসী। এ ছাড়া প্রতিবছরই ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাওরের পানি উপচে প্লাবিত হয় ফসল। নদীর নাব্যতা-সংকট, হাওরে অপরিকল্পিত বাঁধ ও স্লুইসগেট নির্মাণ, হাওর-বিল ভরাটই এর কারণ হিসেবে দেখছেন পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। এ দুরবস্থা থেকে মুক্তি পেতে নদী-খাল খননের দাবি জানিয়ে আসছিলেন কৃষকেরা। অবশেষে খননকাজ শুরু হওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন তাঁরা।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ছোট নদী, খাল-জলাশয় পুনঃখনন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সুনামগঞ্জে খননকাজ শুরু হয়েছে। ১৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া খননকাজ চলবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।

কৃষকেরা জানান, নদ-নদীর নাব্যতা-সংকট ও তলদেশ পলিতে ভরাট হওয়ায় প্রতিবছর পাহাড়ি ঢলে বোরো ফসলের ক্ষতি হয়। কৃষকদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ভরাট হওয়া নদী ও খালগুলো খনন করা। সেই ///জন্য জেলার বৃহত্তর দেখার হাওরের পানি নিষ্কাশনের খাল, শান্তিগঞ্জ উপজেলার নাইন্দা নদী, হালির হাওরের পানি নিষ্কাশন, জামালগঞ্জ উপজেলার বুথিয়ার খাল ও ধর্মপাশা উপজেলার হাওরের পানি নিষ্কাশনের জন্য মনাই নদ খননের কাজ শুরু হয়েছে।

পাউবো সূত্র জানায়, ৩ উপজেলায় প্রায় ২৪ কিলোমিটার খাল ও নদী খননকাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা। নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ফসলের ক্ষতিগ্রস্ত হতো। এখন নদী খননের মধ্য দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা হবে। অন্যদিকে প্রতিবছরই সেচের অভাবে হাজার হাজার একর জমি পতিত থাকে। এই অবস্থা থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে নদী খননের মধ্য দিয়ে।

সুনামগঞ্জ পাউবো-২-এর মাধ্যমে বৃহত্তম দেখার হাওরের ফসল রক্ষায় ও আগাম বন্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে শান্তিগঞ্জ উপজেলার নাইন্দা খাল খনন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।

শান্তিগঞ্জ উপজেলার পার্বতীপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হক বলেন, ‘যদি নাইন্দা খাল সুষ্ঠুভাবে খনন করা হয় বোরো ফসলও রক্ষা পাইবো। প্রতিবছর বন্যা আইয়া হাওরে ডুকে। এই খাল খনন হইলে পানি বড় নদীত গিয়া পরব, আর আমরাও ফসল তুলতাম পারমু।’

একই উপজেলার সদরপুর গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধইরা নাইন্দা খাল খননের দাবি করে আসছি। এই খাল খনন হইলে আমাদের এলাকার মানুষ জমি করার জন্য সেচের পানি পাবে। খাল আগের রূপে ফিরে আসবে।’

নাইন্দা খাল খননের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুডম্যান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জুয়েল দাস বলেন, নির্ধারিত সময় অর্থাৎ এপ্রিল মাসের মধ্যে খাল খননের কাজ শেষ করার জন্য বাড়তি মেশিন দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, শান্তিগঞ্জ উপজেলাসহ আরও দুই উপজেলায় খাল খননের কাজ চলমান আছে। এই কাজ শেষ হলে কৃষকেরা সেচ থেকে শুরু করে আগাম বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষা পারবেন।

মো. শামসুদ্দোহা বলেন, খাল খনন করে যে মাটি পাওয়া যাচ্ছে, জেলা ও উপজেলা পানিসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে তা নিলামে বিক্রি করা যেতে পারে। আবার প্রয়োজনে সরকারি খাসজমি ভরাটে এবং বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় মাটি ব্যবহার করা যেতে পারে। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে নদী খননকাজ শেষ করার কথা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

মির্জা ফখরুলের কাছে অভিযোগ, ১৬ দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁও থানার ওসি বদলি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত