Ajker Patrika

সাত বছরেও নির্মাণ হয়নি ১১টি সেতু ও কালভার্টের সংযোগ সড়ক

প্রতিনিধি, শাল্লা (সুনামগঞ্জ) 
সাত বছরেও নির্মাণ হয়নি ১১টি সেতু ও কালভার্টের সংযোগ সড়ক

দিরাই শাল্লা সড়ক ২০১১ সালে নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন তৎকালীন এমপি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। কাজের শুরু থেকেই ধীর গতি থাকায় ৭ বছরেও প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়নি। কাজ সমাপ্তের চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বাকি সড়ক নির্মাণের জন্য নতুন কোনো প্রকল্প অনুমোদন পায়নি। শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পে ১১টি সেতু ও কালভার্টে কোনো সংযোগ সড়ক নেই। কিন্তু অসমাপ্ত কাজের জন্য ব্যয় দেখানো হয়েছে ৯৯ কোটি টাকা। 

জানা যায়, সুনামগঞ্জ আজমিরীগঞ্জ ও হবিগঞ্জের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কৃষিপণ্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবহনের সুবিধা তৈরি করতে হাতে নেওয়া হয়েছিল এই প্রকল্পটি। যদিও এর কোনো সুফল পায়নি স্থানীয়রা। দুর্বল নির্মাণকাজের কারণে সড়কের বেশির ভাগ অংশই ক্ষয় হয়ে যায়। এ ছাড়া এই প্রকল্পে ১১টি সেতু ও কালভার্টে কোনো সংযোগ সড়ক দেওয়া হয়নি। ফলে উপজেলার প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ যোগাযোগ বঞ্চিত রয়েছে। 

দিরাই শাল্লা আঞ্চলিক সড়কের সাড়ে ১৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নির্মাণকাজের প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১২০ কোটি টাকা। হাওরের বুকে মাটি ভরাট, সড়ক নির্মাণ, বিভিন্ন পয়েন্টে সেতুসহ পুরো সড়কটি পাকা করার কথা থাকলেও কাজ শেষ করতে পারেনি সওজ। কাজ অসমাপ্ত রেখে ২০১৭ সালের জুনে প্রকল্পটি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। ফলে অসমাপ্ত এ সড়ক এলাকাবাসীর কোনো কাজেই লাগেনি। 

উপজেলার নওয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, বন্যা থেকে সড়কটিকে সুরক্ষা দিতে যেনতেনভাবে ব্লক ফেলা হয়। ১১টি সেতু-কালভার্ট বানানো হলেও সেগুলোর সঙ্গে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। পিচ ঢালাইয়ের কাজও অসমাপ্তই থেকে গিয়েছে। কোনো কোনো স্থানে মাটি ভরাট করেই নির্মাণকাজ শেষ করে দেওয়া হয়। পাঁচ বছরে ৯৯ কোটি টাকা খরচ করেও সড়কটিকে ব্যবহার উপযোগী করা যায়নি। মাটি ভরাট করে যেটুকু সড়ক অবকাঠামো দাঁড় করানো হয়েছিল পরপর তিন বছরের বন্যায় তাও বিলীন হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, সড়কে যেটুকু মাটি ছিল তাও আবার ২০২০ সালের বন্যায় ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। 

উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা হরেন্দ্র দাস বলেন, স্বাধীনতার ৪৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত শাল্লায় কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। জনপ্রতিনিধিরা শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আশ্বাসের কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। 

স্থানীয় এমপি (দিরাই শাল্লা-২) ড. জয়া সেন গুপ্তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি অসুস্থ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 

শাল্লা উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, এটি আমাদের স্বপ্নের সড়ক। এই সড়কটির কাজ বাস্তবায়ন করার জন্য এমপি মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আশা করছি অচিরেই একনেকে দিরাই শাল্লা সড়কের প্রকল্প অনুমোদন পাবে। 

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালের বন্যায় দিরাই-শাল্লা সংশ্লিষ্ট সড়ক বাঁধের বেশ কিছু অংশ ভেঙে যায়। ফলে দিরাই উপজেলার সঙ্গে শাল্লার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় সড়কটি পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন। 

নির্বাহী প্রকৌশলী আরও বলেন, নতুন প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত সড়কটি বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত সহজ হবে। পাশাপাশি আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে ও তা স্থানীয়দের দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতের সংসদীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক

খালদূষণকারী কারখানা পেল পরিবেশবান্ধব পুরস্কার

গোষ্ঠীস্বার্থে বহু মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করেছে এই প্ল্যাটফর্ম: দায়িত্ব ছেড়ে উমামা ফাতেমার পোস্ট

ইস্পাহানে বাংকার বাস্টার মারেনি যুক্তরাষ্ট্র, অক্ষত ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম

অপারেশন রেড ওয়েডিং ও নার্নিয়া: ইরানের সেনা কর্মকর্তা ও পরমাণুবিজ্ঞানীদের হত্যায় ইসরায়েলি অভিযান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত