Ajker Patrika

৫০ বছর ধরে একটি সেতুর অপেক্ষায় ১৫টি গ্রাম

হোসাইন আহমদ, শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ)
৫০ বছর ধরে একটি সেতুর অপেক্ষায় ১৫টি গ্রাম

সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ডাউকি নদী। এই নদী পারাপারের জন্য ৫০ বছরেও নেই একটি সেতু। সেতুর অভাবে ১৫ গ্রামের মানুষকে খেয়া পারাপারে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বছরের পর বছর এ অবস্থা চললেও এই দুর্ভোগ লাঘবে নেওয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ।

সরেজমিনে দেখা যায়, শান্তিগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলার মধ্যে ডাউকি নদী অবস্থিত। নদীর এক পাড়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের বুরুমপুর গ্রাম এবং অন্য পাড়ে জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের গলাখাল গ্রাম। এই দুই উপজেলার মধ্যবর্তী ডাউকি নদীতে কোনো সেতু নেই। যার ফলে ১৫ গ্রামের মানুষ নিয়মিতই ছোট নৌকায় করে নদী পার হন। স্কুল, কলেজ শিক্ষার্থী, ব্যবসা-বাণিজ্যের আসা মানুষজন, বিভিন্ন কাজের জন্য বের হওয়া মানুষগুলোর নদী পারাপারের জন্য এই ছোট নৌকাই একমাত্র মাধ্যম। নৌকার স্বল্পতার কারণে নদী পার হতে শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘক্ষণ। জানা যায়, এই ভোগান্তির পাশাপাশি প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। 

জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের গলাখাল, তেলিকোনা প্রায় ৮টি গ্রাম এবং শান্তিগঞ্জের বাঘেরকোণা, বুরুমপুরসহ আরও ৬টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিত্য প্রয়োজনে এই নদী পার হয়ে থাকেন। শুষ্ক মৌসুমে নদীটি প্রায় শুকিয়ে গেলেও বর্ষা মৌসুমে তীব্র স্রোত থাকে। এ সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষজন ছোট নৌকা দিয়েই নদী পারাপার করেন। এই ঘাটে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে দুই উপজেলাবাসীর ব্যবসা-বাণিজ্য, যাতায়াত এবং শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাওয়া সহজ হবে। এক উপজেলার কৃষি পণ্য সহজে অন্য উপজেলায় পৌঁছাবে এবং ন্যায্যমূল্যে পাওয়া যাবে। এই আশায় একটি সেতুর অপেক্ষায় দুই উপজেলার বাসিন্দা। 

শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউপির বুড়ুমপুর গ্রামের বাসিন্দা বাবুল মিয়া বলেন, ডাউকি নদী আমাদের দুই উপজেলাকে আলাদা করে দিয়েছে। এখানে একটি সেতু নির্মাণ হলে এ অঞ্চলের মানুষের দুঃখ ঘুঁচবে। এতে করে জগন্নাথপুর উপজেলার লোকজন সহজে শান্তিগঞ্জ উপজেলা হয়ে কম সময়ে জেলা শহর সুনামগঞ্জে পৌঁছতে পারবে। ডাউকি নদীতে একটা সেতু নির্মাণ করা খুবই জরুরি। 

জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউপির সাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা নূর মিয়া বলেন, ডাউকি নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ হলে উপজেলার ১৫ গ্রামের মানুষ উপকৃত হতো। বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকি নিয়ে আমাদের নদী পার হতে হয়। ওই পাড়ের বুড়ুমপুর গ্রামে আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। নিয়মিত আসা যাওয়া করতে হয়। তা ছাড়া জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের পথও অনেক সহজ হতো এই সেতু নির্মাণ করা হলে। পাশাপাশি একটা সেতু হতো দুই উপজেলার মধ্যে বন্ধন সেতু।

শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন বলেন, ডাউকি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের মাধ্যমে সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করেছেন এবং কাগজপত্রও তৈরি করেছেন। আশা করি এই সেতুটি নির্মাণ হলে দুই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষের উপকার হবে। 

শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আল নুর তারেক বলেন, শান্তিগঞ্জ উপজেলার বুড়ুমপুর এলাকায় ডাউকি নদীর ওপর একটি ব্রিজ তৈরি করার জন্য একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে এবং প্রস্তাবনার ভিত্তিতেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

বংশরক্ষায় মৃত ছেলের শুক্রাণু চান মা, সংরক্ষণের নির্দেশ মুম্বাই হাইকোর্টের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত