Ajker Patrika

‘হামার কৃষকের লাভের ধন পিপঁড়ায় খায়া নেয়’

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর)
আপডেট : ২০ জুন ২০২৩, ১৮: ৩৮
‘হামার কৃষকের লাভের ধন পিপঁড়ায় খায়া নেয়’

‘যে সময় বাদাম লাগামো, সে সময় বীজই পাওয়া যায় না, যদিও পাইনো তায়ও আবার ৫ হাজার টাকার বীজ ১০ হাজার দিয়া কিনিয় শ্যালোমেশিন দিয়া জমিত পানি ঢুকি লাগাইনো। কয়েক দিন পর যে খরা শুরু হইল অনেক গাছ মরি গেইছে। এলা যদি ফির বাদাম তোলার সময় হইছে এলা ফির ঝড়ি শুরু হইছে। বাড়ি নিয়া যাবার আগোতেই জমিত অনেক বাদাম পচি গেইল। হামার কৃষকের লাভ আর হইল না। হামারগুলার লাভের ধন পিপঁড়ায় খায়া নেয়।’ আজ শনিবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে এভাবেই কথাগুলো বলেন রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তাপাড়ের বাদামচাষি আমিনুর রহমান। 

গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরের বিভিন্ন স্থানে এবার বাদামের ব্যাপক আবাদ হয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে দাবদাহে পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে বাদামগাছ। এতে চাষিদের মুখে হাসি নেই। কৃষকেরা জানান, দাবদাহে ও পানির সংকটের পরেও যেসব বাদাম গাছ ভালো ছিল, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ঘরে তোলার আগেই সেই সব গাছ থেকে অনেকগুলো পচে গেছে। এতে চাষিদের উৎপাদন খরচের টাকাই উঠবে না। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, উপজেলায় তিস্তার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় এ বছর ৩৩৫ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। তবে চরাঞ্চলে বাদাম চাষের পরিমাণ বেশি। কিন্তু তীব্র খরায় খেতেই ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে তিস্তাপাড়ে বাদামের উৎপাদন কমার আশঙ্কা করছে কৃষি অফিস। 

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় খেত থেকে বাদাম তুলছেন শ্রমিকেরাআজ শনিবার তিস্তা নদীর বিভিন্ন চর ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা বাদাম তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কথা হয় উপজেলার পূর্ব মহিপুর এলাকার বাদামচাষি মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দুই-আড়াই মাস থাকি যে রইদ গেল এই রইদোত বাদামের গাছ পোড়া লাগছিল। এলা ফির টানা বৃষ্টিত বাদাম পচি যায়চোল। বাদাম লাগায় সময় ভাবনো এবার যে বীজের দাম, সারের দাম বাদামত এবার বুঝি কয়টা টাকা পাওয়া যাইবে। কিসের কী, কয়টা টাকা পামো বাহে, এবার বাদাম চাষ করাটাই একবারে লস।’ 

কোলকোন্দ ইউনিয়নের চর বিনবিনা এলাকার বাদামচাষি সাইদুল বলেন, ‘এবার এমন হইছে, যখন হামার ঝড়ির দরকার তখন ঝড়ি নাই। এলা ঝড়ির দরকার নাই এলা কয়দিন থাকি ফির ঝড়ি হইচোল। ঝড়ি হয়ায় বাদামগুলা পচন আইসেচোল তায় তাড়াতাড়ি তুলি নেইচোল।’ 

 ৩০ শতাংশ জমিতে বাদাম চাষ করেছেন গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক গ্রামের কৃষক রইছুল মিয়া। তিনি জানান, তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। বৃষ্টির অভাবে তাঁর খেত শুকিয়ে বাদাম প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। এর পরেও যা পাবেন তা হয়তো তিন থেকে চার মণ হবে বলে তিনি আশা করছেন। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এ কে এম ফরিদুল হক বলেন, ‘এ বছর গঙ্গাচড়া উপজেলায় ৩৩৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় তিস্তাপাড়ে বাদামের উৎপাদন কিছুটা কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘ক্রিকেটাররা আমাকে ন্যুড পাঠাত’, বিস্ফোরক ভারতের সাবেক কোচের সন্তান

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

পরপর সংঘর্ষে উড়ে গেল বাসের ছাদ, যাত্রীসহ ৫ কিমি নিয়ে গেলেন চালক

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত