Ajker Patrika

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়, বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭: ৩৫
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়, বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে কনকনে শীতে জনজীবনে জবুথবু অবস্থা। সঙ্গে হিমেল হাওয়া ও রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এ অঞ্চলের গরিব, অসহায় ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। সকালে কুয়াশা ভেদ করে সূর্যের দেখা মিললেও তাতে উত্তাপ টের পাওয়া যায়নি।

আজ শনিবার সকাল ৯টায় জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। কয়েক দিন ধরে তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ৯ থেকে ৬ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করছে। উপজেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, শীতকালে এ উপজেলায় তাপমাত্রা ওঠানামা করে মূলত হিমালয়ের হিমেল বাতাস বয়ে যাওয়ায় ৷ প্রতিবছর অন্য জেলার তুলনায় আগেভাগেই এখানে শীত অনুভূত হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী শীত অনুভূত হয়ে দেরিতে বিদায় নেয়। ১৫ দিন ধরে এ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও কমবে এবং শীত বাড়বে।

সরেজমিন দেখা গেছে, কোনো কোনো দিন ভোরে সূর্যের আলো দেখা গেলেও থাকছে না তেমন উত্তাপ। কুয়াশার মধ্যে ঝাপসা রোদ লাগলেও তেমন প্রভাব পড়ছে না। সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার ওপর দিয়ে ঠান্ডা বাতাস বয়ে যায়। রাত বাড়ার সঙ্গে চারপাশ কুয়াশায় ঢেকে যায় এবং প্রায় বৃষ্টির মতো শিশির পড়ে। তা অব্যাহত থাকে পরদিন সকাল পর্যন্ত।

বেলা বাড়লেও কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করে। এ ছাড়া কনকনে শীতের কারণে দিনদিন শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিনই শীতজনিত নানা রোগ নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন স্থানীয়রা। তাদের মধ্যে অনেকেই শিশু ও বয়স্ক।

কুয়াশা ভেদ করে মিলেছে সূর্যের দেখা

এ বিষয়ে কথা হয় তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মাঘের শীতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। কয়েক দিনের শীতের কারণে হঠাৎ আমার মেয়ের ঠান্ডা লাগাসহ ডায়রিয়া হয়েছে। গ্রাম্য চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু ভালো না হওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছি।’

মহানন্দা নদী থেকে পাথর উত্তোলন শ্রমিক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে এত শীত, কুয়াশা ও বাতাস বইছে, যা আগে আর দেখিনি। সূর্যের আলো তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। নদীর পানি অনেক ঠান্ডা, তাই কাজ করতে পারছি না। আমাদের কেউ খোঁজখবর নেয় না; কেউ শীতবস্ত্র দেয় না।’

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, কয়েক দিন ধরে তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ৷ আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এখানে নির্ণয় করা হয়েছে। তাপমাত্রা আরও কমতে পারে এবং শীতের তীব্রতা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘তেঁতুলিয়া শীতপ্রবণ উপজেলা। এবার আগেভাগেই আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি, যাতে কোনো গরিব-অসহায় শীতার্ত মানুষ শীতে কষ্ট বা দুর্ভোগ না পোহায়। ইতিমধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছি এবং তা অব্যাহত রয়েছে। আমরা আরও দুই লাখ টাকা অনুদান পেয়েছি। যা দিয়ে শীতবস্ত্র কিনে গরিব-অসহায় শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত