Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁওয়ে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৮৩ হাজার পশু

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৮৩ হাজার পশু

ঠাকুরগাঁওয়ের ৫টি উপজেলায় ঈদুল আজহায় কোরবানি দেওয়ার জন্য ৮৩ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। গত বছরের তুলনায় সংখ্যাটি কম হলেও চাহিদা মেটাতে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এদিকে খামারিরা বলছেন, পশু খাদ্যের দাম বাড়ায় খরচ বেড়েছে।  

ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের বাজার পাড়া এলাকার খামারি মোহাম্মদ আলী বলেন, নিজেদের বপন করা ঘাস, খড়, ভুট্টাসহ সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে খাবার খাইয়ে গরু লালন-পালন করছি। তবে খাবার কিনে খাওয়ালে লাভের আশা করা যেতো না। কোরবানি উপলক্ষে খামারে ৮টি দেশি জাতের ষাঁড় রেখেছি। বর্তমান বাজারে বিক্রি হলে গরু প্রতি ৮–১০ হাজার টাকা করে লাভ থাকবে। এসব গরু মোটাতাজা করতে কোনো ওষুধ বা ইনজেকশন দেওয়া হয় না। 

সদর উপজেলার কবিরাজ পাড়া গ্রামের খামারি মজনুল হক বলেন, ‘কোরবানি উপলক্ষে স্বাস্থ্যসম্মত ও ভালো মানের পশু সরবরাহ করতে আমার খামারে ৬টি ষাঁড় রয়েছে। এর মধ্যে একটির নাম ঠাকুরগাঁওয়ের মহারাজ। মহারাজের দাম চাচ্ছি ২০ লাখ টাকা। ঢাকার ব্যবসায়ীরা মহারাজের দাম বলেছেন ১২ লাখ টাকা। এ ষাঁড়ের ওজন প্রায় ২৫ মণ। সব মিলিয়ে ৬টি গরু বিক্রি করতে পারলে ৬–৭ লাখ টাকা লাভের আশা করছি।’ 

পৌরশহরের শান্তিনগর এলাকায় তরুণ উদ্যোক্তা শাকিব পারভেজ জানান, কোরবানি উপলক্ষে তাঁর খামারে ১২টি ষাঁড় লালন-পালন করেছেন। খামার থেকেই বিক্রি করার আশা করছেন। তিনিও সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাদ্য খাইয়ে ষাঁড়গুলো মোটাতাজা করেছেন। কোনো ক্ষতিকারক ইনজেকশন দেননি বলেও দাবি করেন তিনি। 

একই এলাকার খামারি সাজু আহমেদ বলেন, গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে বিপাকে আছি। গরুগুলোকে যে পরিমাণ খাওয়ানো হচ্ছে, তাতে সঠিক দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে। 

এদিকে খামার ছাড়াও জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলায় গ্রামের কৃষক ও মৌসুমি পশু পালনকারীরা কোরবানির জন্য বিক্রি করতে ব্যক্তি পর্যায়ে ছোট ছোট গরু কিনে বাড়িতে পালন করে বড় করছেন। গরু-ছাগল পালনকারীরা ইতিমধ্যে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু করেছেন। সাধারণত পাইকার ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এসব পশু আগেভাগে কিনে রাখছেন। কয়েক দিন পর তারা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে বিক্রি করবেন। 

জেলার ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কামরুজ্জামান সুনাম বলেন, এ জেলার রেজিস্ট্রেশনভুক্ত ৪ শ জন খামারি কোরবানি উপলক্ষে  গরু প্রস্তুত করেছেন পশুর হাটে বিক্রি করার জন্য। তবে অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে গরু এলে খামারিরা একেবারে ধ্বংসের মুখে পড়ে যাবে। বিশ্ব দুগ্ধ দিবসের আলোচনা সভায় বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছি। তিনি অবৈধ পথে পশু বিক্রি বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, গরুর হাটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে এবং বাজারে জাল টাকা শনাক্তে বিষয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও জেলার হাট বাজারগুলোতে তদারকি করব।

জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৭৫ হাজার। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এ পশু দিয়েই জেলার চাহিদা মেটানো যাবে। তবে পশু খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ১০ হাজার কোরবানি পশু কম। জেলায় খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে ৮৩ হাজার গরু ও ছাগল এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। খামারিদের নানান বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত