Ajker Patrika

তিস্তার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি, বন্যার আশঙ্কা

প্রতিনিধি, লালমনিরহাট
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৩১
তিস্তার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি, বন্যার আশঙ্কা

অতিবৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম তিস্তা সেচ প্রকল্প ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৪২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে ভাঙন।

এদিকে পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র জানায়, গত বুধবার সকাল থেকে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। গতকাল দুপুরে পানির প্রবাহ কিছুটা কমলেও ব্যারাজের ভাটিতে থাকা চারটি উপজেলার নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া চার উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন।

গত দুদিনে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৌলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। আবার কিছু কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

উপজেলার কুটিরপাড় এলাকার রশিদ বলেন, ‘চরের প্রায় ৪০০ বাড়িতে হাঁটুপরিমাণ পানি উঠেছে। গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত ১০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এ পর্যন্ত আটবার বাড়ি সরিয়ে নিয়ে গেছি। তিস্তার ভাঙনরোধে এখানে বাঁধ দরকার। আমরা রিলিফ চাই না, আমাদের বাঁধের ব্যবস্থা করে দেন।’

আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হামিজার রহমান বলেন, ‘তিস্তার পানি কয়েক দিন স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। গত মঙ্গলবার রাত থেকে পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। কুটিরপাড়, গোবর্ধন, স্পারবাঁধসহ কয়েকটি গ্রামে পানি উঠেছে। পানি থেকে বাঁচতে কিছু পরিবার উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু তারা গরু–ছাগল, হাঁস–মুরগি নিয়ে পড়েছে চরম বিপাকে। 

এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) আবদুল আল মামুন বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনসুর উদ্দিন জানান, উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে পানি উঠেছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে পানিবন্দী মানুষজনের তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। তালিকা পেলে তাদের ত্রাণ দেওয়া হবে।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু জাফর জানান, বন্যার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া আছে। প্রতিটি উপজেলার ইউএনওদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ, শুকনো খাবার ও টিন মজুত রয়েছে। নিজ নিজ উপজেলার ইউএনওরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে এসব ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত