Ajker Patrika

প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে গঙ্গাচড়ায় পুড়ছে খেতের ফসল, দুশ্চিন্তায় কৃষক

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর)
আপডেট : ০১ মে ২০২৪, ১২: ৫৫
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে গঙ্গাচড়ায় পুড়ছে খেতের ফসল, দুশ্চিন্তায় কৃষক

সারা দেশে চলছে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। অন্যবারের মতো এবারও রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তার চরাঞ্চলে বাদাম, ভুট্টা ও মরিচ আবাদ করা হয়েছে। প্রায় এক মাসের টানা তাপপ্রবাহে পুড়ে যাচ্ছে এসব খেতের ফসল। বাড়তি সেচে উৎপাদন খরচ বাড়লেও কাজ হচ্ছে না। এই অবস্থায় ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। 

স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, মাত্র ১০-১৫ দিন গেলে তাঁরা ভুট্টা ঘরে তুলতে পারতেন। কিন্তু প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে এসব ভুট্টা পরিপক্ব না হতেই গাছ মরে চুপসে যাচ্ছে। প্রতিদিন সেচ দিয়েও কাজ হচ্ছে না। খেতের বালুমাটি পুড়ে হলদে রঙের হয়ে যাচ্ছে। 

গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ বছর উপজেলায় তিস্তার চরাঞ্চলে ২ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। এসবের মধ্যে বাদাম ৭৫ হেক্টর, ভুট্টা ১ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। 

আবহাওয়া অফিস বলছে, রংপুরে গত ১৮ দিন ধরে কখনো ৩৭ ডিগ্রি, আবার কখনো ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা অতিক্রম করছে। এ কারণে প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। 

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে ঘুরে জানা গেছে, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে বাদাম, ভুট্টা ও মরিচের গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো খেতে বিভিন্ন পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। 

উপজেলার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের শেখ হাসিনা সেতু এলাকায় বকুল মিয়া (৫২) ছাতা মাথায় দিয়ে কয়েকজন নারী শ্রমিককে সঙ্গে নিয়ে বাদামখেত পরিচর্যা করছেন। এ সময় জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১০০ শতক জমিত ১ লাখ টাকা খরচ করি বাদাম লাইছি বাহে, এই রোদের কারণে বাদামের গাছ মরি যায়চোল। হামারগুলা একনা মাটিয়াল মাটি দেখি টিকি আছে। নদীর মাঝেরগুলা তো মরি গেইছে।’ 

চর ইচলি এলাকার কৃষক মোন্নাফ মিয়া (৪৯) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এবারে ৩৫ হাজার টাকা খরচ করি চরের ৩০ শতক জমিতে বাদাম চাষ করছি। কয়দিন ধরি যে রইদ (রোদে) তাতে ৩০ শতক মাটির সোগগুলা (সবগুলো) বাদামের গাছ পুড়ি গেইছে। দিনে দুই থাকি (থেকে) তিনবার পর্যন্ত পানি দিছি, কোনো কাজ হয় নাই। এই জন্যে বাদামের আশা বাদ দিয়া দিছুং।’ 

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তার চরাঞ্চলে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে পুড়ে গেছে ভুট্টাখেত। ছবি: আজকের পত্রিকাকথা হয় উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা চর এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিদিন ভুট্টা বাড়িত পানি দেংচোল। তবুও কাজ হয়চোল না বাহে। আর এক সপ্তাহ গেইলে ভুট্টাগুলার দানা ভালো হইল হয়। তখন তুললে ভুট্টার ওজনও বাড়িল হয়। কয়টা টাকা পাইনো হয়। আকাশের খরার কারণে ভুট্টাগুলা এবার হয়াও হইল না।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শীতকালীন ভুট্টা এখন তোলার সময়। এমন ক্ষতি হওয়ার কথা না। তবে তাপের কারণে হতেও পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত