Ajker Patrika

হাড় কাঁপানো শীতে কাবু ঠাকুরগাঁওয়ের খেটে খাওয়া মানুষ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫: ১২
হাড় কাঁপানো শীতে কাবু ঠাকুরগাঁওয়ের খেটে খাওয়া মানুষ

ঠাকুরগাঁওয়ের ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন। অনেকে শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তীব্র কুয়াশায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বোরো ধানের চারাসহ বিভিন্ন ফসল।

জেলা কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ শুক্রবার ভোর ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন ৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল ৭টায় তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তাপমাত্রা কম থাকলেও আজ সকাল থেকেই সূর্যের দেখা মিলেছে। তবে সূর্যের তাপে উষ্ণতা ছিল না।

সদর উপজেলার জগন্নাথপুরে আলুখেতে মাটি নিড়ানির কাজ করছিলেন মিজান, সিদ্দিক, জলিলসহ একদল কৃষিশ্রমিক। তাঁরা বলেন, সকালে খেতে নিড়ানির কাজ করতে এসে যেন হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। শীতের কারণে মাটি নিড়ানিতে খুব কষ্ট হয়। কিন্তু পেটের ভাত জোগাড় করতে হলে এ ছাড়া কোনো উপায়ও নেই।

উপজেলার খোঁচাবাড়ী এলাকার ভ্যানচালক রবিউল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন ধরে কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহ চলছে। সেই সঙ্গে ঠান্ডা বাতাসে বাইরে কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে। অর্থের অভাবে শীতবস্ত্রও কিনতে পারছেন না।

একই এলাকার বিকাশ রায় নামের এক দিনমজুর অভিযোগ করে বলেন, ‘শীতে মানুষ ঠক ঠক করে কাঁপছে। কিন্তু তাঁদের সহায়তায় রাজনৈতিক নেতা আর চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দেখা নেই।’

এদিকে শীতে জ্বর-সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে। বাড়তি রোগীর এই চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু।

২৫০ শয্যা ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. রাকিবুল আলম বলেন, এক সপ্তাহ ধরে শীতজনিত রোগীর চাপ বেড়েছে। প্রতিদিন বহির্বিভাগে গড়ে ২০০ শিশু রোগী আসছে। বর্তমানে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত প্রায় দেড় শ শিশু হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

হাসপাতালটির শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাজ্জাদ হায়দার শাহীন বলেন, শীতের প্রকোপ থেকে শিশুদের সুরক্ষায় গরম কাপড় পরার পাশাপাশি গরম পানি খাওয়াতে হবে। এ সময়টায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করলে শিশুদের কিছুটা হলেও সুরক্ষা মিলবে।

টানা কয়েক দিনের শৈত্যপ্রবাহে রবিশস্য ও বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। তীব্র শীতে বোরো ধানের চারা হলদে আকার ধারণ করে শুকিয়ে যাচ্ছে। সদর উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়।

সদর উপজেলার রায়পুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় এলাকার উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। ফসল রক্ষায় বিভিন্ন ছত্রাকনাশক ছিটিয়েও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

বীজতলার যত্ন নেওয়া প্রসঙ্গে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. আব্দুল আজিজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘন কুয়াশা থেকে বোরো বীজতলা রক্ষা করতে হলে রাতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। তা ছাড়া ছত্রাকনাশক ছিটানো গেলে বীজতলার ক্ষতির আশঙ্কা কমে যাবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত