Ajker Patrika

গাইবান্ধায় কৃষিকাজে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও কৃষিঋণ-প্রণোদনায় বঞ্চিত 

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
Thumbnail image

গাইবান্ধায় কৃষিতে গ্রামীণ নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। কিন্তু কৃষি ঋণপ্রাপ্তিতে নারীর নামে কৃষি জমি না থাকায় সরকারি ও বেসরকারিভাবে কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। এ কারণে কৃষি কাজের জন্য অর্থের সংস্থান না থাকায় বেশির ভাগ নারীরা নিজেদের পছন্দমতো কৃষি ফলন উৎপাদনেও আশানুরূপ ভূমিকা রাখতে পারেন না। শস্য উৎপাদন থেকে প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ ও বাজার ব্যবস্থাপনায় নারীর অংশগ্রহণ দৃশ্যমান এবং প্রায় পুরুষের কাছাকাছি। কৃষিতে অনেক ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে নারীদের অবদান ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেশি হলেও কৃষিঋণ প্রাপ্তি ও প্রণোদনায় নারীরা এখনো বঞ্চিত হচ্ছেন। 

গাইবান্ধার কুঠিপাড়া গ্রামের কৃষক লাইলি বেগম বলেন, দীর্ঘদিন একটি এনজিওর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। পরিবারের জন্য কয়েক বিঘা জমিও ক্রয় করেছি। কিন্তু জমির কাগজপত্রগুলো স্বামী-সন্তানের নামে থাকায় ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পাচ্ছি না। নারী হিসেবে কয়েক দফা ব্যাংকে যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হয়েছি। 

সদর উপজেলার মোল্লারচর গ্রামের হামিদা বেগম বলেন, চরের ৯০ শতাংশ নারী এখন মরিচ ও ভুট্টা চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু সরকারি বেসরকারি সহায়তা পান পুরুষ চাষিরা। অনেক সময়ে বিশেষ সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে লটারি হলেও নারীদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। 

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের সমন্বয়কারী (ক্ষুদ্র ঋণ) অখিল চন্দ্র বর্মণ বলেন, এনজিও থেকে কৃষি ঋণ প্রদানে নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারীদের ঋণের চাহিদা বেড়ে গেছে। ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নারীদের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে পারছে। 

এ বিষয়ে গাইবান্ধায় প্রান্তিক কৃষকদের নিয়ে গঠিত কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের শাহিদা বেগম বলেন, কৃষিতে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি ভূমিকা রাখলেও প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী কৃষি চাষাবাদে তেমন ভূমিকা রাখতে পারছেন না। 

গাইবান্ধার কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক লিমিটেডের বালুয়া শাখার ম্যানেজার মো. আইনুল হক বলেন, ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংক সব সময় নারীদের প্রাধান্য দিয়ে থাকে। কিন্তু প্রয়োজনীয় শর্তে জমিজমার কাগজপত্র দেখাতে না পারায় অনেক সময় ঋণ প্রদান করা সম্ভব হয় না। 

ম্যানেজার আরও বলেন, জমিজমার কাগজপত্র ছাড়া ঋণ প্রদান করলে সেই ঋণ আদায়ে ৯৫ শতাংশই খেলাপি হয়। এ কারণে জামানতবিহীন নারীদের ঋণ প্রদানে ব্যাংক খুব বেশি উৎসাহিত হয় না। ব্যাংকগুলো থেকে শতকরা ২ থেকে ৩ শতাংশ নারী কৃষি ঋণের সুবিধা পেয়ে থাকেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত