Ajker Patrika

১ লাখ টনের বেশি আলু রপ্তানি হবে: সচিব

রংপুর ও পীরগাছা প্রতিনিধি
Thumbnail image

বাংলাদেশ থেকে এবার ১ লাখ টনের বেশি আলু বিদেশে রপ্তানি করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার। আজ রোববার রংপুরে আলু রপ্তানি কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে সচিব এ তথ্য জানান। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং সারা বাংলা কৃষক সোসাইটির উদ্যোগে পীরগাছা উপজেলার বেলতলি বিরাহিম এলাকায় অনুষ্ঠানটি হয়। 

কৃষি সচিব বলেন, ‘২০১২-১৩ সালে ১ লাখ টনের ওপরে আলু রপ্তানি করা হয়েছিল। ২০১৪ সালের পর নানা কারণে এ রপ্তানিতে ধস নামে। আমরা সেটি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি। গত বছর আমরা প্রায় ৭৮ হাজার টন আলু রপ্তানি করেছি। আশা করছি, দিন দিন আমাদের এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’ 

সচিব ওয়াহিদা আক্তার আরও বলেন, ‘আমরা বর্তমানে মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের দেশসহ ২৮টি দেশে আলু রপ্তানি করছি। তবে আমাদের লক্ষ্য রাশিয়ার বড় বাজার ধরা। রাশিয়া, ফিজি ও ভিয়েতনামে আলু রপ্তানি শুরু করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।’ 

গত ৪ বছর ধরে, রংপুরের আলু উৎপাদনকারী সংগঠনগুলো এফএওর সহায়তায় নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর চাষাবাদ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তা কাজে লাগিয়ে রপ্তানি-মানের আলু উৎপাদন করছে। 

রংপুরে আলু রপ্তানি কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকামাঠ পর্যায়ে এফএও, সরকারের প্রতিনিধি, আলু উৎপাদনকারী সংগঠন এবং কৃষকদের অংশগ্রহণে আলু উৎপাদন ও রপ্তানি বিষয়ে একটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানস্থানের পাশে কৃষকেরা স্থানীয় ও উন্নত জাতের আলুর প্রদর্শন করেন। আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও গবেষণা সংস্থার সঙ্গেও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

এতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (নীতি পরিকল্পনা ও সমন্বয়) রুহুল আমিন তালুকদার, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আফতাব হোসেন, অ্যাগ্রোমি এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমা রহমান, বাংলাদেশ আলু রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিইএ) সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, বিরাহিম আলু উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির আলু চাষি সালমা আক্তার আদুরী আলোচক হিসেবে অংশ নেয়। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘রংপুর জেলায় দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ আলু উৎপাদিত হয়। এ বছর আলু চাষিরা ভালো ফলন পেয়েছেন এবং বাংলাদেশ আলু রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিইএ) সঙ্গে তাদের চুক্তি রয়েছে। কৃষকেরা বিশেষভাবে রপ্তানির উদ্দেশ্যে ‘সানশাইন’ নামের একটি নতুন আলু চাষ করতে শুরু করেছে। কৃষি মন্ত্রণালয় আলু রপ্তানি বাড়াতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এবং বিএডিসির মাধ্যমে ২০১৯ সাল থেকে উৎপাদনকারীদের সহায়তা দিয়ে আসছে।’ 

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ফাও) এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিস্পাসন বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষি খাতকে রূপান্তরিত করার দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গির অংশ হিসেবে এফএও আলুসহ প্রধান প্রধান ফসলের রপ্তানি বাড়াতে সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। যথাযথ সহায়তায় বাংলাদেশি আলু উৎপাদনকারীরা প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়েছে। এটি অন্যান্য ফসলের জন্য একটি মডেল।’ 

আয়োজকদের দেওয়া তথ্য বলছে, গত বছর বাংলাদেশে ১ কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে, যা চীন এবং ভারতের পরে এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত