Ajker Patrika

একেকটি বাড়ি একেকটি গার্মেন্টস কারখানা

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
একেকটি বাড়ি একেকটি গার্মেন্টস কারখানা

নীলফামারীর সৈয়দপুরে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রায় ২ শতাধিক ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানা আবার চালু হতে শুরু করেছে। ঝুট কাপড় থেকে পোশাক তৈরি করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রায় ৫০০ পরিবার। এতে একেকটি বাড়ি একেকটি পোশাক কারখানার মতো হয়ে উঠেছে। এমনটি জানিয়েছেন ক্ষুদ্র গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা। 

ব্যবসায়ীরা বলেন, শীতে এবারে ভারত ও নেপাল থেকে ৫ কোটি টাকার জ্যাকেটের অর্ডার এসেছে। এরই মধ্যে ব্যাংকের ঋণপত্র (এলসি) খুলে এসব জ্যাকেটের আমদানি আদেশ পাঠানো হয়েছে। তাঁরা এ শিল্পের সম্প্রসারণ ঘটাতে ও আয় রপ্তানি বাড়াতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব কারখানাকে নির্দিষ্ট জায়গা দিয়ে একটি পল্লি করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। 

সৈয়দপুরের রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস মালিক সূত্র জানায়, পাকিস্তান আমল থেকেই সৈয়দপুরে ঝুট কাপড় থেকে নানা ধরনের পোশাক তৈরি হয়ে আসছে। তবে ২০০২ সালে রপ্তানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিক গ্রুপ, সৈয়দপুর নামে পোশাক প্রস্তুতকারকদের সংগঠন গড়ে ওঠার পর এর পরিধি অনেক বেড়ে যায়। বর্তমানে পৌর এলাকার মুন্সীপাড়া, নয়াটোলা, হাতিখানা, মিস্ত্রিপাড়া, নতুন বাবুপাড়া, পুরাতম বাবুপাড়া, গোলাহাট, রাবেয়া মোড়, ঘোড়াঘাট, বোতলাগাড়ী, বাঁশবাড়ী, নিয়ামতপুরসহ আটকে পড়া পাকিস্তানিদের একটি বড় অংশের ঘরে ঘরে গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্র পোশাক কারখানা। প্রতি কারখানায় সর্বনিম্ন দুটি থেকে সর্বোচ্চ ৪৫টি পর্যন্ত মেশিন। কারখানাগুলোতে তৈরি হচ্ছে ট্রাউজার, শর্টস (হাফ প্যান্ট), জ্যাকেট, টি-শার্ট, জিনসের প্যান্টসহ নানা ধরনের পোশাক। স্থানীয় বাজারে সরবরাহের পাশাপাশি এসব পোশাক রপ্তানি হচ্ছে ভারত, ভুটান ও নেপালে। 

ব্যবসায়ীরা পোশাক তৈরি করতে ঢাকার মিরপুর, কালিগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, টঙ্গী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানের পোশাক কারখানাগুলো থেকে ঝুট কাপড় কিনে আনেন। পাশাপাশি সুতা, বোতাম, ইলাস্টিক, প্যান্টের পকেট বানানোর স্টিকার, পুরোনো সেলাই মেশিনও সংগ্রহ করেন। 

ব্যবসায়ীরা জানান, ঝুট কাপড় ও উপকরণসমূহ কেনা হয় কেজি হিসেবে। এর মধ্যে প্রতি কেজি ব্লেজারের ঝুট ৫০ থেকে ১৫০ টাকা, জ্যাকেট তৈরির ঝুট ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, গ্যাবার্ডিন প্যান্টের ঝুট ৮০ থেকে ১৫০ টাকা, জিনসের ঝুট ৭০ থেকে ১৫০ টাকা, জিপার ৮০ থেকে ১০০ টাকা, সুতা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে কেনা হয়। 

শহরের মুক্তিপাড়ার গোলাম রাব্বানী জানান, দুটি সেলাই মেশিন নিয়ে নিজের ঘরেই ঝুট কাপড় থেকে পোশাক তৈরি শুরু করেছিলেন। ওই দুটি মেশিনই তাঁর ভাগ্য খুলে দেয়। এখন তাঁর মেশিন আছে ২৫ টি, মাসে আয় হয় ৩৫ হাজার টাকার মতো। 

ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমান জানান, এবার শীত মৌসুমে ব্যবসা মোটামুটি ভালোই হবে। তাঁর প্রতিষ্ঠান এম আর গার্মেন্টস ৪ লাখ ডলারের শীতের পোশাকের অর্ডার পেয়েছেন। শিগগিরই ভুটান থেকেও অর্ডার আসার সম্ভাবনা রয়েছে। 

রপ্তানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিক সমিতির সভাপতি আখতার হোসেন খান বলেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সেভাবে রপ্তানি আদেশ না পাওয়ায় সৈয়দপুর শহরের প্রায় ২ শতাধিক ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি এসব কারখানা আবার চালু হতে শুরু করেছে। কারণ অর্ডার আসছে। শীত সামনে রেখে এ বছর ভারত ও নেপাল থেকে ৫ হাজার ডলারের আমদানি আদেশ পাওয়া গেছে। কাজ পেয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানাগুলো। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

এনআইডির তথ্য ফাঁস করে ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ জিয়াউলের বিরুদ্ধে

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন এম এ জি ওসমানীসহ ৮ জন

কনের বাড়িতে প্রবেশের আগমুহূর্তে হৃদ্‌রোগে বরের মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত