Ajker Patrika

রংপুরে বিদ্যুৎ অফিসের সামনে গ্রাহকদের বিক্ষোভ

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ মে ২০২৫, ১৮: ১৩
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ কার্যালয়ের সামনে গ্রাহকদের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ কার্যালয়ের সামনে গ্রাহকদের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

লোডশেডিং কমানোর দাবিতে রংপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন গ্রাহকেরা। আজ বুধবার দুপুরে রংপুর সদরের পাগলাপীরে অবস্থিত রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

আন্দোলনকারীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তীব্র গরমে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে সাধারণ মানুষ যেমন নানা সমস্যায় পড়ছেন, সেচ–সংকটের কারণে ক্ষতির মুখে পড়ছে বোরো ফসলের খেত। তাই সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের বাসিন্দা সোহাগ হাসান বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২–এর আওতায় রয়েছি। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে আমরা অতিষ্ঠ। গরমের এই সময়ে আধা ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। যে কারণে পরিবারের বয়স্কদের কষ্ট বেড়েছে, শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনা করতে পারছে না।’

মিজানুর রহমান নামের আরেক গ্রাহক বলেন, ‘আমাদের বাড়ি নীলফামারী। আমরা চাই নীলফামারী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় আমাদের বিদ্যুৎ সংযোগ ও সরবরাহ করা হোক। যেকোনো সমস্যায় রংপুর আসাটাও আমাদের জন্য কষ্টকর। তা ছাড়া আমরা কোনো সমস্যায় পড়লে রংপুর পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা–কর্মচারীদেরও সহজে পাই না।’

একই ইউনিয়নের বাসিন্দা আতিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘এখন মাঠে বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল রয়েছে। যেগুলোতে সেচের জন্য আমাদের পল্লী বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্ত আমরা কোনো রকম বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। দীর্ঘক্ষণ পরে যদি বিদ্যুৎ আসেও, পানি ছাড়লে সে পানি জমিতে যাওয়ার আগেই আবার বিদ্যুৎ চলে যায়। এভাবে আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।’

রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ কার্যালয়ের সামনে গ্রাহকদের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ কার্যালয়ের সামনে গ্রাহকদের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফুয়াদ বসুনিয়া নামের আরেক গ্রাহক বলেন, ‘দিনে ৮-১০ বার বিদ্যুৎ যাওয়া–আসা করে। তাতে বিদ্যুৎ থাকে সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ৩০ মিনিট অথচ লোডশেডিং দেয় এক থেকে দেড় ঘণ্টা করে। আমরা এই সমস্যার সমাধান চাই।’

রবিউল হোসেন সুজন নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং কমানোর দাবি করে এলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তাই বাধ্য হয়ে আজ বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে মানববন্ধন করছি। তিন প্রজন্ম ধরে আমরা রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২–এর আওতায় জিম্মি হয়ে আছি। আমরা এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি চাই।’

লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২–এর জেনারেল ম্যানেজার খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা সব সময় গ্রাহকদের ভালো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে লোডশেডিংয়ে তাদের কষ্ট হয় আমরা বুঝি। কিন্তু আমাদের কিছু করার নাই। ঝড়, বৃষ্টি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। তবে নীলফামারীতে আরও একটি সাবস্টেশন নির্মাণ করার পরিকল্পনা চলছে। সেটা হলে সমস্যা কিছুটা কমবে বলে আশা করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে এক বাসায় বিস্ফোরণ, শিশুসহ দগ্ধ ৪

ঢামেক প্রতিবেদক
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আগারগাঁওয়ে সরকারি কোয়ার্টারে গ্যাস বিস্ফোরণের পর এবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকার একটি বাসায় বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। এ বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাসের চুলা থেকে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

আজ শনিবার (৬ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সোনারগাঁওয়ের পাটাত্তা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন, আলাউদ্দিন (৩৫), তাঁর দুই মেয়ে শিফা আক্তার (১৪) ও সিমলা আক্তার (৪) এবং আলাউদ্দিনের মা জরিনা বেগম (৬৫)।

দগ্ধ আলাউদ্দিনের বোন সালমা আক্তার জানান, তাঁর মা, ভাই ও ভাইয়ের দুই মেয়ে ওই বাসার নিচতলায় ভাড়া থাকে। ভোরে তাঁর ভাই আলাউদ্দিন ওয়াশরুমে যায়। এ সময় তাদের রান্না ঘরে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। তাঁর ভাই রুমে ঢুকতেই আগুনে ঝলসে যায়। এ সময় ঘরে থাকা তিনজন দগ্ধ হয়। পরে তাঁদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে উদ্ধার করে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসে।

সালমা আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, রান্না ঘরে গ্যাসের চুলা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, সকালে নারায়ণগঞ্জের একটি বাসায় গ্যাসের চুলার আগুন থেকে ৪ জন দগ্ধ হয়ে বার্ন ইনস্টিটিউটে এসেছে। এদের মধ্যে আলাউদ্দিনের ৪০ শতাংশ, শিফার ১২ শতাংশ, শিমলার ৩০ শতাংশ ও জরিনা বেগমের ২০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। চারজনকে ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাগুরায় পেট্রলবোমা হামলায় দুই সরকারি অফিসে অগ্নিকাণ্ড

মাগুরা প্রতিনিধি 
মাগুরা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় ও সরকারি সাবরেজিস্ট্রার অফিসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাগুরা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় ও সরকারি সাবরেজিস্ট্রার অফিসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাগুরায় আলাদা স্থানে পেট্রলবোমা হামলায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ক্ষতিগ্রস্ত দপ্তর দুটি হলো মাগুরা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় ও সরকারি সাবরেজিস্ট্রার অফিস। শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে আগুন লাগিয়ে দেয়।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা আক্তার বলেন, রাতের আঁধারে দুষ্কৃতকারীরা অফিসের পেছনের জানালা ভেঙে ভেতরে পেট্রলবোমা ছোড়ে। এতে নিচতলায় থাকা কম্পিউটার, আসবাবসহ জমি-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল ও নথিপত্র পুড়ে যায়।

অন্যদিকে শহরের ইসলামপুর পাড়ার সাবরেজিস্ট্রার অফিসেও একইভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সাবরেজিস্ট্রার শুভ্রা রানী দাস বলেন, পেট্রলবোমায় রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে দলিল লেখকদের ঘর এবং নিচতলা পুড়ে গেছে। এতে জমি-সংক্রান্ত দলিল, প্রয়োজনীয় নথি ও দলিল লেখকদের কাগজপত্র ছাই হয়ে গেছে।

মাগুরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন লিডার মো. আলিম মোল্লা বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে পরপর দুটি স্থানে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‎টঙ্গীতে ছিনতাকারীর ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ৮টার দিকে বিআরটি প্রকল্পের উড়ালসেতুর বাটাগেট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

‎নিহত ব্যক্তির নাম সিদ্দিকুর রহমান (৫৭)। তিনি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার মৃত ইসমাইল ফকিরের ছেলে। সিদ্দিক টঙ্গীর মধুমিতা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বসবাস করতেন।

‎‎থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছেন।

‎‎স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সিদ্দিকুর রহমান ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগে চাকরি করতেন। শনিবার সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন তিনি। সিদ্দিকুর বিআরটি প্রকল্পের উড়ালসেতুর ওপর বাসের অপেক্ষায় ছিলেন। এ সময় কয়েকজন ছিনতাইকারী তাঁর কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তারা তাঁকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

‎ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ‎‎টঙ্গী পূর্ব থানা-পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আতিকুর রহমান বলেন, এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে বাবা-ছেলে আটক

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
গতকাল রাতে উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাড়ি ঘেরাও করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাতে উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাড়ি ঘেরাও করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মুন্সিগঞ্জ শহরের গণকপাড়া রাঢ়ীবাড়ি এলাকায় বাবা-ছেলেকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে এই দুজনকে আটক করে। আটক ব্যক্তিরা হলেন ওই এলাকার মো. শফিউল বাসার হাসিব (৪০) ও তাঁর বাবা

মো. রবিউল আউয়াল জসিম ওরফে খোকন (৬৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ৩ ডিসেম্বর রাত পৌনে ৩টার দিকে মো. শফিউল বাসার হাসিব নিজ বসতঘরে কোরআন শরিফে আগুন দেন। ঘটনাটি তাঁর ফুফু হোসনেয়ারা হাসনাত (৫৬) প্রত্যক্ষ করেন। পরে সকালে হাসিবের বাবা মো. রবিউল আউয়াল জসিম কোরআন শরিফের পোড়া পৃষ্ঠা ও ছাই পাশের ডোবায় ফেলে দেন।

ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার রাতে মুসল্লি ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। রাতেই উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাড়ি ঘেরাও করলে পরিস্থিতি চরমে ওঠে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করে হেফাজতে নেন।

সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম বলেন, হোসনেয়ারা হাসনাতের অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও দাঙ্গা সৃষ্টির অভিযোগে মুন্সিগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। আটক দুই আসামিকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সাইফুল আলম জানান, বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত