Ajker Patrika

কারমাইকেল কলেজে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ শিথিল, আন্দোলন চলবে

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ জুন ২০২৫, ২০: ১২
চার দিন ধরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চার দিন ধরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা চার দিন পর রংপুর কারমাইকেল কলেজে চলমান ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি সাময়িকভাবে শিথিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। এইচএসসি পরীক্ষা বিবেচনায় তাঁরা কর্মসূচি শিথিল করেন। পাশাপাশি অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের ভর্তি কার্যক্রমও স্বাভাবিকভাবে চলবে। তবে ক্লাস, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা, প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ অন্যান্য সব কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অন্য কর্মসূচিগুলো চলমান থাকবে বলেও জানা গেছে।

আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে শিক্ষার্থীরা কলেজগেটে অবস্থান নেন। ‘শিক্ষা চাই, নিরাপত্তা চাই’, ‘শিক্ষকের অভাব দূর করো’, ‘আবাসন সংকট দূর করো’, ‘বাস বাড়াও, ক্লাস চালাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন তাঁরা। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল নানা রকম প্ল্যাকার্ড।

বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করতে কলেজে আসেন রংপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. রবিউল ফয়সাল, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী ও ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম। তাঁরা প্রায় এক ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে কলেজ ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন।

কলেজ ক্যাম্পাস পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মো. রবিউল ফয়সাল বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যে দাবিগুলো করেছে, সেগুলো আসলেই যৌক্তিক। একটি হল ১৫ বছর ধরে বন্ধ। সেটি সংস্কার করে দেওয়া হবে। শিক্ষার্থী ও কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হবে। সে কমিটি ঢাকায় গিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের সঙ্গে কথা বলে তাদের দাবিদাওয়া প্রস্তাব করবে। সেই অনুযায়ী রোডম্যাপ করে দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।’

তবে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য ভিন্ন। আন্দোলনের একজন সমন্বয়কারী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই, কিন্তু তার আগে চাই সমস্যার স্থায়ী সমাধান। এইচএসসি পরীক্ষা সামনে হওয়ায় আমরা আন্দোলন সাময়িক শিথিল করেছি। শুধু এইচএসসি পরীক্ষা, অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের ভর্তি কার্যক্রমও স্বাভাবিকভাবে চলবে। অন্য সব শাটডাউনের আওতায় থাকবে। আমাদের দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষক নিয়োগ, আবাসন ও পরিবহন-আবাসন সংকট নিরসন, জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষের সংস্কার, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ, নতুন মিলনায়তন নির্মাণ, জমি দখল রোধসহ কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ২৫ ও শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে ১২ দফা দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দাবিগুলোর যৌক্তিকতা আমরা স্বীকার করি। ইতিমধ্যে ১৪টি দাবি বাস্তবায়নে কলেজ প্রশাসন থেকে লিখিত আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’

১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কারমাইকেল কলেজে বর্তমানে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এর মধ্যে মাত্র ৮০০ জনের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে শ্রেণিকক্ষের সংকট, আলো-বাতাসের অভাব এবং শিক্ষক স্বল্পতা নিয়ে ভোগান্তিতে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিনেও এসব সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আন্দোলনে নামে তাঁরা।

গত রোববার থেকে আন্দোলন শুরু হয়। প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কলেজ শাটডাউনের পাশাপাশি লালবাগ এলাকায় রেল ও সড়কপথ সাড়ে তিন ঘণ্টা অবরোধ করেন। এরপর থেকে প্রতিদিনই তাঁরা গেট বন্ধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত