Ajker Patrika

বড়পুকুরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীর জমিতে লাল পতাকা, খনি কর্তৃপক্ষের প্রবেশ নিষেধ

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৫: ৩৭
খনি কর্তৃপক্ষের প্রবেশ ঠেকাতে ক্ষতিগ্রস্তদের লাল পতাকা কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা
খনি কর্তৃপক্ষের প্রবেশ ঠেকাতে ক্ষতিগ্রস্তদের লাল পতাকা কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের একমাত্র ভূগর্ভস্থ বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী ক্ষতিপূরণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। ক্ষতিপূরণ না পেয়ে আবারও আন্দোলনে ফিরেছেন ক্ষতিগ্রস্ত বাঁশপুকুর কাজীপাড়া ও চৌহাটি গ্রামের বাসিন্দারা। জমি অধিগ্রহণ না করা পর্যন্ত খনি কর্তৃপক্ষের অবাধ প্রবেশ ঠেকাতে জমিতে লাল পতাকা টাঙিয়েছেন এলাকাবাসী।

আজ রোববার (১৩ জুলাই) বেলা ১১টায় দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির পূর্ব পাশে ৯ নম্বর হামিদপুর ইউনিয়নের চৌহাটি ও বাঁশপুকুর কাজীপাড়ার মধ্যবর্তী জমিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। কৃষি ও বসতবাড়ি রক্ষা কমিটি এবং জীবন ও বসতভিটা রক্ষা কমিটির যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে দুটি গ্রামের কয়েক শ নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।

কৃষি ও বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মাহমুদুন্নবী সোহানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন আন্দোলন কমিটির উপদেষ্টা এস এম নুরুজ্জামান জামান, কৃষি ও বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব সালমান মাহমুদ, কমিটির সহসভাপতি মাহামুদুন্নবী মিলন, জীবন ও বসতভিটা রক্ষা কমিটির অর্থ উপদেষ্টা আতাউর রহমান, তুহিন প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, ‘এই কয়লাখনি করার সময় আমাদের নানা রকম প্রলোভন দেখানো হয়েছিল। তা কখনোই বাস্তবায়ন করেনি কর্তৃপক্ষ। ভূগর্ভে বোমা বিস্ফোরণের কারণে আমাদের বাড়ি-ঘরে ফাটল ধরছে। ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। ভূগর্ভে পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। বারবার আন্দোলন-সংগ্রাম করলেও তারা নানা রকম মিথ্যা আশ্বাস, জরিপ, অনুসন্ধান, তদন্তের নামে সময়ক্ষেপণ করছে।’ তাঁদের দাবি, ‘আমাদের জমি অধিগ্রহণ করতে হলে আমাদের কাছে আসতে হবে। শোনা যাচ্ছে, খনি কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আঁতাত করছে। তাই আমাদের জমিতে খনি কর্তৃপক্ষকে আর প্রবেশ করতে দেব না। সে কারণে আজ লাল পতাকা টাঙিয়ে দিলাম। তার পরও যদি আমাদের বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য তারাই দায়ী থাকবে।’

বক্তব্য শেষে চৌহাটি ও বাঁশপুকুর গ্রামের বিস্তীর্ণ অনধিগ্রহণকৃত জমিতে লাল পতাকা টাঙিয়ে খনি কর্তৃপক্ষের সব ধরনের প্রবেশ নিষেধ ঘোষণা করেন এলাকাবাসী।

গ্রামবাসী জানান, পাঁচ দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছেন তাঁরা। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—অবৈধভাবে ভূগর্ভে বিস্ফোরক ব্যবহারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-ঘরের ক্ষতিপূরণ প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রাস্তাঘাট মেরামত, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বেকার ছেলেমেয়েদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি প্রদান, সিআরএস ফান্ড থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সুপেয় পানির সংকট দূর করা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড়পুকুরিয়া খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) খান মো. জাফর সাদিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্রামবাসী কর্মসূচি দিয়েছে, তা আমরা শুনেছি। তাদের সমস্যাগুলো সার্ভে করার জন্য কমিটি করা হয়েছে। কমিটির লোকজন ওই সব এলাকায় গিয়ে সার্ভে করলে তারপর তাদের সমস্যাগুলোর বিষয়ে জানতে পারব এবং সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করব। কিন্তু গ্রামবাসী যদি তাদের এলাকায় প্রবেশ করতে না দেয়, তবে কী করে আমরা সার্ভে করব এবং সমস্যাগুলো দেখব? জমি অধিগ্রহণ করতে হলেও আগে তা যাচাই করতে হবে, সে জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। নইলে কী করে আমরা কাজ করব?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা মামলার আসামি দুই ভাই নেত্রকোনায় গ্রেপ্তার

‘নৌকা আউট, শাপলা ইন’, সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে এনসিপির চাওয়া

জরুরি অবস্থা ঘোষণায় লাগবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন, প্রস্তাবে একমত রাজনৈতিক দলগুলো

বৈষম্যহীন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষা হারিয়ে গেছে

পাওনা টাকা চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধরের পর বললেন, ‘আমি যুবদলের সভাপতি, জানস?’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত