Ajker Patrika

আধা কিলোমিটার পথ হামাগুড়ি দিয়ে স্কুলে যায় ববিতা

পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
আধা কিলোমিটার পথ হামাগুড়ি দিয়ে স্কুলে যায় ববিতা

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ববিতা। বাকি শিশুর মতো হাঁটাচলার সক্ষমতা নেই তাঁর। প্রবল ইচ্ছে শক্তির কাছে হার মেনেছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। শারীরিক প্রতিকূলতাকে ছাপিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে আধা কিলোমিটার পথ মাড়িয়ে প্রতিদিন স্কুলে যায় শিশুটি।

ববিতার বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের মুরারীপুর গামে। সে মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বাবা আ. রহিম একজন পাটখড়ি ব্যবসায়ী। পাশাপাশি দিনমজুরি করেন তিনি। গৃহিণী মা মমতা বেগম সেও শারীরিক প্রতিবন্ধী। বাক-শ্রবণ শক্তি নেই তাঁর। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে কবিতা সবার ছোট। 

ববিতা জানায়, অন্য শিশুদের মতো তারও ছুটতে; সহপাঠীদের সঙ্গে হাত ধরে খেলতে, স্কুলে যেতে ইচ্ছে করে। কিন্তু তাকে পথ চলতে হয় হামাগুড়ি দিয়ে। এ জন্য তাঁর সঙ্গে খেলতে বা পথ চলতে পছন্দ করে না কেউ। বাধ্য হয়ে একাকী হামাগুড়ি দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যায় সে। 

ববিতা বলে, ‘অনেককে দেখেছি হুইল চেয়ারে বসে আরামে পথ চলতে। আমারও ইচ্ছে করে হুইল চেয়ারে স্বাচ্ছন্দ্যে পথ চলতে।’ 

ববিতার বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘তুচ্ছ পাটখড়ির ব্যবসার পাশাপাশি অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে কোনো মতে সংসার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। মেয়েটার লেখাপড়া করার খুবে ইচ্ছে। সে হামাগুড়ি দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যায়। মেয়ে হয়ে বাবার কাছে একটি হুইল চেয়ারের আবদার করলেও ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তা পূরণের সক্ষমতা আমার নাই। কষ্ট করে প্রতিদিন প্রায় এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়, যা বাবা হিসেবে আমাকে খুব কষ্ট দেয়।’ 

ববিতার শিক্ষকেরা বলেন, ‘ববিতা লেখাপড়ায় বেশ মনোযোগী। সে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে। যত্ন নিলে সে ভবিষ্যতে লেখাপড়ায় ভালো করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’ 

এ বিষয়ে বেতকাপা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে শিশুটির একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে সে স্বাচ্ছন্দ্যে স্কুলে যাতায়াত করতে পারে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত