Ajker Patrika

রৌমারীতে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
রৌমারীতে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জিনজিরাম, ধরনী ও কালজানি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আরও ১৫টি গ্রাম। উপজেলার ৩২টি গ্রামের ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ে পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। 

রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় নৌকা ও কলার ভেলায় করে চলাচল করছেন প্লাবিত এলাকার মানুষ। এতে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। কিছু গ্রামে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি সংকট। তলিয়ে গেছে আমন বীজতলা বিআর, ৪২, ৮২ জাতের বোরো ধান ও সবজি বাগান। 

আজ রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের নতুন করে প্লাবিত হয়েছে, চর গয়টা পাড়া, তেকানী গ্রাম, চরকাউয়ারচর, চরবোয়লমারী, শৌলমারী ইউনিয়নের ওকড়াকান্দা, শৌলমারী, মোল্লারচর, রৌমারী ইউনিয়নের কড়াইকান্দি, মির্জাপাড়া, গোয়লগ্রাম, নতুন চুলিয়ারচর, যাদুরচর ইউনিয়নের বকবান্দা, বিক্রিবিল, আলগারচর ও কাশিয়াবাড়ি। 

বন্যার শুরুতে পানিবন্দী গ্রামগুলো হচ্ছে, দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ধর্মপুর, ছাটকড়াইবাড়ি, খেতারচর, গাছবাড়ি, ইটালুকান্দা, কাউনিয়ার চর, কাজাইকাটা. শৌলমারী ইউনিয়নের গয়টাপাড়া, বোয়ালমারী, বেগুলারচর, চৎলাকান্দা, টালুয়ারচর, ঝুনকিরচর, রৌমারী ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া, নটানপাড়া (আমবাড়ী), চান্দারচর, ইজলামারি, চরইজলামারী, মাদারটিলা, চর ইছাকুড়ি, বড়াইবাড়ী, চুলিয়ারচর, ঝাউবাড়ি, পাটাধোয়া পাড়া, বাওয়ার গ্রাম, ধুবলাবাড়ি, বন্দবেড় ইউনিয়নের বাইসপাড়া, ফলুয়ারচর, বাঘমারা, বলদমারা, যাদুরচর ইউনিয়নের পুরাতন যাদুরচর, খেওয়ারচর, নামাবকবান্দা, দক্ষিণ আলগারচর, চর লাঠিয়াল ডাঙ্গা, পাখিউড়া ধনারচর নতুন গ্রাম। চর শৌলমারী ইউনিয়নের চর ঘুঘুমারী, খাউরিয়া, সুখের বাতি। 

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি বন্যায় আপাতত উপজেলার ২৫টি বিদ্যালয় পানিবন্দী হওয়ায় সাময়িকভাবে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আইবুল ইসলাম বলেন, স্কুল মাঠ বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বকবান্ধা উচ্চ বিদ্যালয়, নামা বকবান্ধা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। 

বন্যার পানি ঢুকে গেছে এলাকায়। ফলে নৌকা নিয়ে চলাচল করছেন অনেকেউপজেলা প্রকৌশলী যুবায়ের হোসেন বলেন, সম্প্রতি বন্যায় শৌলমারী, রৌমারী ও যাদুরচর ইউনিয়নের ২২ কিলোমিটার রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক পাকা রাস্তায় খাদের সৃষ্টি হয়েছে। বন্যা আক্রান্ত এলাকার লোকজন নৌকায় ও কলার ভেলায় করে চলাচল করছেন। 

রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী জানান, ভারী বর্ষণে উপজেলায় আউস ধান ৭৬, পাট ১৩৪, সবজি ৪৬, ও তিল ২৭ মোট ২৮৩ হেক্টর জমির ফসল বন্যায় তলিয়ে গেছে। 

রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, ভারী বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। বন্যা কবলিতদের জন্য ৩ লাখ টাকায় ত্রাণ সামগ্রী ক্রয় করে প্যাকেট করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে আবারও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত