Ajker Patrika

ফলন ও দাম ভালো হলেও ডোবা সংকটে পাট জাগ

প্রতিনিধি, নাটোর (লালপুর)
Thumbnail image

নাটোরের লালপুরে পাটের ফলন ও দাম ভালো হলেও পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কৃষকেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছুটছেন বিল-ডোবা ও পুকুর-নালার খোঁজে। অনেকে কৃত্রিম খাল তৈরি করে শ্যালোর পানিতে পাট জাগ দিচ্ছেন। এতে পাট চাষিদের অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় ৫ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। গত বছর পাট চাষের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর। এবার প্রায় সব এলাকাতেই পাটের চাষ হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে লালপুরে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাট কাটা, জাগ দেওয়া, ধোয়া এবং শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এবার পাটের ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় পাট চাষিরাও খুশি।

লালপুরে পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাট সংগ্রহ ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। ছবি বৃহস্পতিবার সকালে তোলামোহরকয়া গ্রামের চাষি মোজাম্মেল হক বানু (৬২) জানান, প্রায় ১০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। ৭০ থেকে ৮০ মণ পাট হবে। প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষে খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ১৮ মণ পাট হবে। ন্যায্য মূল্য পেলে লাভবান হবেন।

কৃষ্ণরামপুর গ্রামের চাষি এলাহী বক্স বলেন, পাট চাষের জমি উপযোগী করা থেকে নিড়ানি দেওয়া, পাট কাটা, জাগ দেওয়া, আঁশ আহরণ ও শুকানোতে শ্রমিকের মজুরি খরচ অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি পড়ছে। পাট জাগের পানির অভাবে পরিবহন খরচ গাড়ি প্রতি হাজার টাকা অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে।

চাষি নুর মোহম্মদ বলেন, পানির জন্য ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে গাড়িতে করে পাট জাগ দিতে নেওয়া হচ্ছে। পাটের বর্তমান বাজার ২২ থেকে ২৪ শ টাকা মণ চলছে। কমে গেলে কৃষকেরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

লালপুরে পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাট সংগ্রহ ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। ছবি বৃহস্পতিবার সকালে তোলাদুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন, পার্শ্ববর্তী আড়বাবসহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে এ এলাকায় পাট জাগ দেওয়ার জন্য আসছেন। এলাকার চাষিরা পাট জাগ দিতে সংকটে পড়ছেন। এবার অধিক পরিমাণে পাটের চাষ হওয়ায় পানি সংকটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে পাট চাষে বিভিন্ন পরামর্শসহ মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পাট চাষের বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। চাষিদের বিনা মূল্যে পাট বীজ ও রাসায়নিক সার প্রদানসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে পাট চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা। প্রতি বছরই পাট চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত