Ajker Patrika

বগুড়ায় কারাবন্দী চার আ.লীগ নেতার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

বগুড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭: ২০
Thumbnail image
বগুড়া জেলা কারাগার। ফাইল ছবি

বগুড়ায় এক মাসে কারাগারে আটক চারজন আওয়ামী লীগ নেতা অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। মারা যাওয়া নেতাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ তোলায় এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বগুড়া জেলার ১২টি থানায় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের নামে হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে অসংখ্য মামলা হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে অধিকাংশ নেতা–কর্মী আত্মগোপনে চলে যান। এর মধ্যে গত তিন মাসে গ্রেপ্তার হন অর্ধশতাধিক নেতা–কর্মী। গত ১২ নভেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত কারাবন্দীদের মধ্যে চারজন আওয়ামী লীগ নেতা অসুস্থ হয়ে মারা যান।

তাঁরা হচ্ছেন বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রতন, শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধক্ষ আব্দুল লতিফ, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদত আলম ঝুনু এবং গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আব্দুল মতিন মিঠু। নেতাদের পরিবারের অভিযোগ কারাগারে চিকিৎসাজনিত অবহেলা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নেওয়া হয়নি।

কারাগারে মারা যাওয়া বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদত আলম ঝুনুর ছোট ভাই তামজিদ আলম দিপু বলেন, ‘আমার ভাই মারা যাওয়ার দুই দিন আগেও দেখা করেছি, তখনো তিনি কোনো অসুস্থতার কথা বলেননি। তাঁর কখনো হৃদ্‌রোগও ছিল না। কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে অনেক দেরিতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ছাড়া কারাগারে নানা অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম তুহিন।’

তবে বগুড়া জেলা কারাগারের জেল সুপার ফারুক আহমেদ বলছেন, যাঁরা মারা গেছেন তাঁরা বয়স্ক এবং তাঁরা কারাগারে আসার আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। কারাগারে তাঁদের প্রতি বিন্দুমাত্র অবহেলা হয়নি। কারাগারের পরিবেশ আগের তুলনায় অনেক ভালো বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘আমাদের কাছে সব রোগী সমান। আমরা সাধ্যমতো রোগীদের সেবা দিয়ে থাকি। কারাগার থেকে যেসব রোগী আসেন, তাঁদের বেশির ভাগ কার্ডিওলজি বিভাগের সিসিইউতে ভর্তি হন। তারপরে যদি কারও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠাতে হয় আমরা সেই ব্যবস্থাও করে থাকি। তারপরেও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা বলেন, ‘কারাগারে চারজনের মৃত্যুর কারণ সঠিক আমি জানি না, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে কারণ জানা যাবে। তবে এক মাসে কারাবন্দী চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদি কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে আসামিদের মৃত্যু হয়, অবশ্যই তাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত