Ajker Patrika

অবিক্রীত পশু নিয়ে চরম বিপাকে পাবনার খামারি-ব্যবসায়ী

প্রতিনিধি, পাবনা
অবিক্রীত পশু নিয়ে চরম বিপাকে পাবনার খামারি-ব্যবসায়ী

গেল কোরবানির ঈদে অবিক্রীত গরু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন উত্তরের জেলা পাবনার খামারি ও পশু ব্যবসায়ীরা। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন হাট থেকে ফেরত আসা পশু নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাঁরা। অনেকে দেনাদারদের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত খামারি ব্যবসায়ীরা সরকারি প্রণোদনা ও সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন। 

পাবনা জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারের ঈদুল আজহায় পাবনায় ৩ লাখ কোরবানির পশু প্রস্তুত ছিল। পশু ব্যবসায়ীরা পাবনা থেকে নিয়ে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন হাটে বিক্রির জন্য নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার তাঁদের আশায় যেন গুড়ে বালি হয়েছে। ধার দেনা আর ঋণ করে লাখ লাখ টাকার গরু নিয়ে ৪ / ৫ দিন গরুর পায়ের নিচে শুয়ে-বসে থেকেও বিক্রি হয়নি বেশির ভাগ পশু। 

অপরদিকে দ্বিগুণ পরিবহন ভাড়া দিয়ে আবার বাড়িতে আনতে হয়েছে অবিক্রীত পশুগুলোকে। এতে খামারি ও ব্যবসায়ীদের চরম আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। একটু লাভের আশায় বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ক্রয় করা পশু বিক্রি করতে না পেরে চরম বিপাকে পরেছেন তাঁরা। 

পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা গ্রামের পশু ব্যবসায়ী আশরাফ আলী জানান, কোরবানির ঈদে ২২টি গরু ঢাকায় নিয়েছিলেন। ৬টি গরু কম দামে বিক্রি করে বাকি ১৬টি ফেরত আনতে হয়েছে। দেনা করে পশু কিনে এখন চরম বিপদের মধ্যে পড়েছেন তিনি। পাওনাদাররা টাকার জন্য ফোন দিচ্ছে, বাড়িতে আসছেন, এ জন্য তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। 

কোরবানির ঈদে অবিক্রীত পশুদাপুনিয়া এলাকার পশু ব্যবসায়ী বকুল শেখ জানান, ৪৫টি পশু বিভিন্ন গ্রাম থেকে কিনে ঢাকায় নিয়ে ৩০টি গরু ফেরত নিয়ে আসতে হয়েছে। এখন এই পশু তাঁদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঈদের পরে বাজারে মাংসের চাহিদাও কম। হাটে বাজারে জবাই করে বিক্রি করতেও পারছেন না। ব্যাংক, সমিতি আর মানুষের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে এখন বিপদে পরেছেন বলে জানান তিনি। 

ক্ষতিগ্রস্ত খামারি ও ব্যবসায়ীরা সরকারি প্রণোদনা এবং সহজ শর্তে ঋণ বা অন্য কোন সুবিধা দিয়ে তাঁদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট দাবি করেছেন। 

এ ব্যাপারে পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডল বলেন, কোরবানির হাটে এবার চাহিদার চাইতে পশুর সরবরাহ বেশি ছিল। ব্যবসায়ীরা ভালো দাম পাননি। হাটে ক্রেতার উপস্থিতি তুলনামূলক কম হয়েছে। তবে এই পশু এখন মাংসের চাহিদা পূরণ করবে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সরকারিভাবে কোন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করলে অবশ্যই তাঁদের দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত