রাজশাহী প্রতিনিধি
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দুই সাঁওতাল কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি সরেজমিনে ঘটনা তদন্ত করেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তদন্ত কমিটির সদস্যরা গোদাগাড়ীর ঈশ্বরীপুর ও নিমঘুটু গ্রামে ছিলেন। গত রোববার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দেন।
কমিটির আহ্বায়ক কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং) আবু জুবাইর হোসেন বাবলু। কমিটিতে সদস্য হিসেবে নাটোর বিএডিসির (ক্ষুদ্রসেচ) নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন আছেন। দুই কৃষকের আত্মহত্যার জন্য বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর উঠলেও তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে বিএমডিএ’রই নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী সমশের আলীকে।
এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কমিটির সদস্যরা প্রথমে বিএমডিএ’র গভীর নলকূপটি পরিদর্শন করেন। পরে তাঁরা দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ে বসে কয়েকজন ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। ইউপি কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে অভিযুক্ত নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের দোতলা বাড়ি। এখানে আসার পর তদন্ত কমিটির কাছে সবাই ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষেই তদন্ত কমিটির কাছে সাফাই গান।
এরপর তদন্ত কমিটির সদস্যরা মৃত কৃষক অভিনাথ মারান্ডি এবং তাঁর চাচাতো ভাই রবি মারান্ডির জমি পরিদর্শনে যান। এ সময় সাখাওয়াতের চাচাতো ভাই শিহাব আলী তদন্ত কমিটিকে দুই কৃষকের জমি থেকে ঘাস তুলে দেখান। তিনি বলেন, অভিনাথ ও রবির জমির দিকে খেয়ালই ছিল না। তবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক কৃষক বললেন, জমিতে পানি না থাকলে ঘাস তোলা যায় না। পানি না দেওয়ার কারণে রবি ও অভিনাথ নিজেদের জমির আগাছা পরিষ্কার করতে পারেননি।
পরে তদন্ত কমিটির সদস্যরা অভিনাথের বাড়ির সামনে গিয়ে তাঁর স্ত্রী রোজিনা হেমব্রমকে ডাকেন। তিনি তদন্ত কমিটির সঙ্গে কোনো কথা বলতে চান না বলে প্রথমে জানান। আঁচলে মুখ ঢেকে তিনি কাঁদতে থাকেন। পরে বললেন, মৃত্যুর আগে তাঁর স্বামী তাঁকে বলেছেন যে পানি না পাওয়ার কারণে তিনি বিষপান করেছেন।
ঘটনার বর্ণনা দিলেন অভিনাথের ভাবি পার্বতী সরেন। তিনি বলেন, সকালে বাড়ির নারীরা আলু তোলার কাজে বের হচ্ছিলেন। তখন রবি ও অভিনাথ তাদের জানান, ১০-১২ দিন ঘুরেও তাঁরা পানি পাচ্ছেন না। তবে আজ (২১ মার্চ) তাঁদের জমিতে পানি দেওয়ার কথা আছে। তাঁরা পানি দিতে যাবেন। বিকেলে তাঁরা যখন আলু তুলছিলেন তখন শোনেন যে পানি না দেওয়ার কারণে রবি ও অভিনাথ বিষপান করেছেন। অভিনাথের ভাবি বলেন, পানির জন্য অপারেটর ঘোরান। সে কারণে দুঃখে দুজন বিষ খান।
স্থানীয় ভ্যানচালক বাপ্পী মারান্ডি তদন্ত কমিটির সামনে বললেন, ঘটনার দিন তিনি ভ্যান নিয়ে গভীর নলকূপের সামনে দিয়ে আসছিলেন। তখন অপারেটর সাখাওয়াত তাঁকে থামিয়ে বলেন, অভিনাথ বিষ খেয়েছে। তাঁকে বাড়ি নিতে হবে। তারপর দুজনে অভিনাথকে ভ্যানে তুলে বাড়ির সামনের রাস্তায় এনে নামিয়ে দেন।
এরপর তিনি ফুলবাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। পথে দেখেন রবিকে অসুস্থ অবস্থায় ভ্যানে আনা হচ্ছে। রবির মা তাঁকে জানান, রবিও বিষ খেয়েছে। তাঁকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। ডাক্তার না থাকায় বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। পরে গ্রাম্য ওই চিকিৎসক বাড়িতে এসে রবির পাকস্থলী ওয়াশ করেন। এরপর অভিনাথের ওয়াশ শুরু হলে তিনি মারা যান।
অভিনাথের চাচাতো ভাই মাইকেল মারান্ডি কমিটিকে জানান, তাঁরও দুই বিঘা বর্গা নেওয়া জমিতে ধান আছে। পানি পাওয়া যায় না। পানির অভাবে তার একটা খেতের মাটি ফেটে চৌচির হয়েছিল। অপারেটর সাখাওয়াত সিরিয়ালের কথা বললেও সে অনুযায়ী পানি দিতেন না। এই পানির জন্যই অভিনাথ ও রবি বিষপান করেছেন।
রবি ও অভিনাথের প্রতিবেশী মহেষন মুর্মু বললেন, তাঁর তিন বিঘা জমিতে ধান আছে। শেষবার পানি পেয়েছেন ১২ দিন পর। তিনি অভিযোগ করেন, পানি দিতে সাখাওয়াত স্বজনপ্রীতি করতেন। ওই মাঠের অর্ধেক কৃষক ক্ষুদ্র জাতিসত্তার। তাঁদের পানি পরে দেওয়া হতো।
মহেষন বলেন, ‘মাঠে তেলা মাথায় তেল দেওয়া হয়। টেলিফোনে কাজ হয়। বড় কেউ কারও জন্য ফোন করলে তাকে আগে পানি দেওয়া হতো।’
রবি মারান্ডির ভাই সুশীল মারান্ডি জানালেন, ঘটনার দিন তিনি নাটোরে কর্মক্ষেত্রে ছিলেন। মায়ের কাছে শুনেছেন যে, রবি বিষপান করে একাই বাড়ি আসেন। তারপর মাকে বলেন, ‘মা আমি পানি না পাওয়ার কারণে বিষ খেয়েছি। মা, আমি আর বাঁচব না।’ তারা পানির জন্য হাহাকারের কথা শোনালেও স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতনু সরকার নিজের লিখিত জবানবন্দিতে লিখেছেন, ‘জমিতে কীটনাশক দেওয়ার সময় পার হয়ে গেছে। এখন আর পানিরও তেমন দরকার নেই।’
এর আগে ঈশ্বরীপুরে ইউপি কার্যালয়ে চেয়ারম্যানের কক্ষে বসে যখন তদন্ত কমিটি জবানবন্দি নিচ্ছিল, তখন স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি দাবি করেন, পানি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কৃষকেরা দেশীয় মদ পান করেন। এ কারণেই হয়তো তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। সাখাওয়াতের দোকানের ভাড়াটিয়াকে এমন মন্তব্য করতে দেখা গেছে। ঠিকমতো পানি না দেওয়ার কারণে সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে ২০২০ ও ২০২১ সালে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষের কাছে কৃষকেরা লিখিত অভিযোগ করলেও দেওপাড়া ইউপির স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য সোহেল রানা ও সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য হাসমত আরাও জবানবন্দি দেন যে এলাকায় পানির কোনো সমস্যা নেই। কোনো কৃষক তাঁদের কাছে অভিযোগ করেননি।
তদন্ত কমিটির প্রধান আবু জুবাইর হোসেন বাবলু এই গভীর নলকূপের জমি চাষের সক্ষমতা জানতে চান। তখন বিএমডিএ’র স্থানীয় জোনের সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল হাসান জানান, সক্ষমতা ২০০ বিঘা। চাষ হয়েছে ১৫০ বিঘা। অথচ দুই কৃষকের মৃত্যুর পর বিএমডিএ’র গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রধান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নাজিরুল ইসলাম গত রোববার জানান, জমি চাষ হয়েছে ২৬০ বিঘা।
নিমঘুটু থেকে ফেরার সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রধান আবু জুবাইর হোসেন বাবলু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। আমার হাতে সাত দিন সময় আছে। দুজনের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী হলে অবশ্যই সেটি আসবে।’
গত ২১ মার্চ রবি ও অভিনাথ বিষপান করেন। সেদিনই বাড়িতে অভিনাথের মৃত্যু হয়। দুদিন পর হাসপাতালে মারা যান রবি। মৃত্যুসনদে বলা হয়েছে বিষক্রিয়ায় রবির মৃত্যু হয়েছে। দুই কৃষকের মরদেহের ময়নাতদন্ত হলেও প্রতিবেদন এখনো প্রস্তুত হয়নি। তাদের মৃত্যুর জন্য গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াতকে দায়ী করে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় দুটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করা হয়েছে। প্রথম মামলাটি হওয়ার পরই সাখাওয়াত পালিয়েছেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দুই সাঁওতাল কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি সরেজমিনে ঘটনা তদন্ত করেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তদন্ত কমিটির সদস্যরা গোদাগাড়ীর ঈশ্বরীপুর ও নিমঘুটু গ্রামে ছিলেন। গত রোববার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দেন।
কমিটির আহ্বায়ক কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং) আবু জুবাইর হোসেন বাবলু। কমিটিতে সদস্য হিসেবে নাটোর বিএডিসির (ক্ষুদ্রসেচ) নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন আছেন। দুই কৃষকের আত্মহত্যার জন্য বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর উঠলেও তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে বিএমডিএ’রই নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী সমশের আলীকে।
এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কমিটির সদস্যরা প্রথমে বিএমডিএ’র গভীর নলকূপটি পরিদর্শন করেন। পরে তাঁরা দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ে বসে কয়েকজন ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। ইউপি কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে অভিযুক্ত নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের দোতলা বাড়ি। এখানে আসার পর তদন্ত কমিটির কাছে সবাই ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষেই তদন্ত কমিটির কাছে সাফাই গান।
এরপর তদন্ত কমিটির সদস্যরা মৃত কৃষক অভিনাথ মারান্ডি এবং তাঁর চাচাতো ভাই রবি মারান্ডির জমি পরিদর্শনে যান। এ সময় সাখাওয়াতের চাচাতো ভাই শিহাব আলী তদন্ত কমিটিকে দুই কৃষকের জমি থেকে ঘাস তুলে দেখান। তিনি বলেন, অভিনাথ ও রবির জমির দিকে খেয়ালই ছিল না। তবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক কৃষক বললেন, জমিতে পানি না থাকলে ঘাস তোলা যায় না। পানি না দেওয়ার কারণে রবি ও অভিনাথ নিজেদের জমির আগাছা পরিষ্কার করতে পারেননি।
পরে তদন্ত কমিটির সদস্যরা অভিনাথের বাড়ির সামনে গিয়ে তাঁর স্ত্রী রোজিনা হেমব্রমকে ডাকেন। তিনি তদন্ত কমিটির সঙ্গে কোনো কথা বলতে চান না বলে প্রথমে জানান। আঁচলে মুখ ঢেকে তিনি কাঁদতে থাকেন। পরে বললেন, মৃত্যুর আগে তাঁর স্বামী তাঁকে বলেছেন যে পানি না পাওয়ার কারণে তিনি বিষপান করেছেন।
ঘটনার বর্ণনা দিলেন অভিনাথের ভাবি পার্বতী সরেন। তিনি বলেন, সকালে বাড়ির নারীরা আলু তোলার কাজে বের হচ্ছিলেন। তখন রবি ও অভিনাথ তাদের জানান, ১০-১২ দিন ঘুরেও তাঁরা পানি পাচ্ছেন না। তবে আজ (২১ মার্চ) তাঁদের জমিতে পানি দেওয়ার কথা আছে। তাঁরা পানি দিতে যাবেন। বিকেলে তাঁরা যখন আলু তুলছিলেন তখন শোনেন যে পানি না দেওয়ার কারণে রবি ও অভিনাথ বিষপান করেছেন। অভিনাথের ভাবি বলেন, পানির জন্য অপারেটর ঘোরান। সে কারণে দুঃখে দুজন বিষ খান।
স্থানীয় ভ্যানচালক বাপ্পী মারান্ডি তদন্ত কমিটির সামনে বললেন, ঘটনার দিন তিনি ভ্যান নিয়ে গভীর নলকূপের সামনে দিয়ে আসছিলেন। তখন অপারেটর সাখাওয়াত তাঁকে থামিয়ে বলেন, অভিনাথ বিষ খেয়েছে। তাঁকে বাড়ি নিতে হবে। তারপর দুজনে অভিনাথকে ভ্যানে তুলে বাড়ির সামনের রাস্তায় এনে নামিয়ে দেন।
এরপর তিনি ফুলবাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। পথে দেখেন রবিকে অসুস্থ অবস্থায় ভ্যানে আনা হচ্ছে। রবির মা তাঁকে জানান, রবিও বিষ খেয়েছে। তাঁকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। ডাক্তার না থাকায় বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। পরে গ্রাম্য ওই চিকিৎসক বাড়িতে এসে রবির পাকস্থলী ওয়াশ করেন। এরপর অভিনাথের ওয়াশ শুরু হলে তিনি মারা যান।
অভিনাথের চাচাতো ভাই মাইকেল মারান্ডি কমিটিকে জানান, তাঁরও দুই বিঘা বর্গা নেওয়া জমিতে ধান আছে। পানি পাওয়া যায় না। পানির অভাবে তার একটা খেতের মাটি ফেটে চৌচির হয়েছিল। অপারেটর সাখাওয়াত সিরিয়ালের কথা বললেও সে অনুযায়ী পানি দিতেন না। এই পানির জন্যই অভিনাথ ও রবি বিষপান করেছেন।
রবি ও অভিনাথের প্রতিবেশী মহেষন মুর্মু বললেন, তাঁর তিন বিঘা জমিতে ধান আছে। শেষবার পানি পেয়েছেন ১২ দিন পর। তিনি অভিযোগ করেন, পানি দিতে সাখাওয়াত স্বজনপ্রীতি করতেন। ওই মাঠের অর্ধেক কৃষক ক্ষুদ্র জাতিসত্তার। তাঁদের পানি পরে দেওয়া হতো।
মহেষন বলেন, ‘মাঠে তেলা মাথায় তেল দেওয়া হয়। টেলিফোনে কাজ হয়। বড় কেউ কারও জন্য ফোন করলে তাকে আগে পানি দেওয়া হতো।’
রবি মারান্ডির ভাই সুশীল মারান্ডি জানালেন, ঘটনার দিন তিনি নাটোরে কর্মক্ষেত্রে ছিলেন। মায়ের কাছে শুনেছেন যে, রবি বিষপান করে একাই বাড়ি আসেন। তারপর মাকে বলেন, ‘মা আমি পানি না পাওয়ার কারণে বিষ খেয়েছি। মা, আমি আর বাঁচব না।’ তারা পানির জন্য হাহাকারের কথা শোনালেও স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতনু সরকার নিজের লিখিত জবানবন্দিতে লিখেছেন, ‘জমিতে কীটনাশক দেওয়ার সময় পার হয়ে গেছে। এখন আর পানিরও তেমন দরকার নেই।’
এর আগে ঈশ্বরীপুরে ইউপি কার্যালয়ে চেয়ারম্যানের কক্ষে বসে যখন তদন্ত কমিটি জবানবন্দি নিচ্ছিল, তখন স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি দাবি করেন, পানি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কৃষকেরা দেশীয় মদ পান করেন। এ কারণেই হয়তো তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। সাখাওয়াতের দোকানের ভাড়াটিয়াকে এমন মন্তব্য করতে দেখা গেছে। ঠিকমতো পানি না দেওয়ার কারণে সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে ২০২০ ও ২০২১ সালে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষের কাছে কৃষকেরা লিখিত অভিযোগ করলেও দেওপাড়া ইউপির স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য সোহেল রানা ও সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য হাসমত আরাও জবানবন্দি দেন যে এলাকায় পানির কোনো সমস্যা নেই। কোনো কৃষক তাঁদের কাছে অভিযোগ করেননি।
তদন্ত কমিটির প্রধান আবু জুবাইর হোসেন বাবলু এই গভীর নলকূপের জমি চাষের সক্ষমতা জানতে চান। তখন বিএমডিএ’র স্থানীয় জোনের সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল হাসান জানান, সক্ষমতা ২০০ বিঘা। চাষ হয়েছে ১৫০ বিঘা। অথচ দুই কৃষকের মৃত্যুর পর বিএমডিএ’র গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রধান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নাজিরুল ইসলাম গত রোববার জানান, জমি চাষ হয়েছে ২৬০ বিঘা।
নিমঘুটু থেকে ফেরার সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রধান আবু জুবাইর হোসেন বাবলু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। আমার হাতে সাত দিন সময় আছে। দুজনের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী হলে অবশ্যই সেটি আসবে।’
গত ২১ মার্চ রবি ও অভিনাথ বিষপান করেন। সেদিনই বাড়িতে অভিনাথের মৃত্যু হয়। দুদিন পর হাসপাতালে মারা যান রবি। মৃত্যুসনদে বলা হয়েছে বিষক্রিয়ায় রবির মৃত্যু হয়েছে। দুই কৃষকের মরদেহের ময়নাতদন্ত হলেও প্রতিবেদন এখনো প্রস্তুত হয়নি। তাদের মৃত্যুর জন্য গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াতকে দায়ী করে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় দুটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করা হয়েছে। প্রথম মামলাটি হওয়ার পরই সাখাওয়াত পালিয়েছেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
রাজধানীর গুলিস্তান থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে দুটি ককটেলসহ গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির পল্টন মডেল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মো. মেহেদী হাসান ফাহিম (৩০) ও মো. আরিফুর রহমান রাজা (৩০)।
১৯ মিনিট আগেমাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। কেবল স্কুলের হোস্টেলে থাকা শিক্ষার্থীদের গেট থেকে প্রবেশের এবং বের হওয়ার অনুমতি আছে। অন্য কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
২৯ মিনিট আগেব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে রেলের গুরুত্বপূর্ণ মালামাল চুরির সময় এক চোরকে হাতেনাতে আটক করেছে রেলওয়ে থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাতে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার সকালে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আখাউড়া রেলওয়ে থানার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম।
১ ঘণ্টা আগেনওগাঁর পোরশায় নিজ বাড়ি থেকে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার সকালে উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের শীতলী ফকিরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ওই গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে হাই বাবু (৪৭) এবং তাঁর স্ত্রী মোমেনা বেগম (৩৫)।
২ ঘণ্টা আগে