Ajker Patrika

চুরি করতে দেখে ফেলায় হত্যা করা হয় নিরাপত্তা প্রহরীকে

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
চুরি করতে দেখে ফেলায় হত্যা করা হয় নিরাপত্তা প্রহরীকে

রড চুরি করতে দেখে ফেলার জন্যই সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের আর.কে টেক্সটাইলের নিরাপত্তা প্রহরী ফেরদৌসকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে শাহজাদপুর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান।

গ্রেপ্তার মো. মামুন হোসেন (৩০) উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের ঘোড়শাল গ্রামের বাসিন্দা এবং আর.কে টেক্সটাইলের চাকুরিচ্যুত শ্রমিক।

নিহত নিরাপত্তা প্রহরী মো. ফেরদৌস (১৮) শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের মশিপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা মো. আক্কাস আলীর ছেলে ও আর.কে টেক্সটাইলের নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ফেরদৌসের হত্যাকারী মামুন একজন কাপড়ের প্রিন্ট ডিজাইনার। ২০২০ সালে আর.কে টেক্সটাইল মিলে কাপড়ের প্রিন্ট ডিজাইনার হিসেবে যোগদান করেন। একই জায়গায় চাকরি করার সুবাদে নিহত ফেরদৌসের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু উক্ত মিল থেকে মাঝে মধ্যেই মামুন লোহার রড চুরি করতো।

৪-৫ মাস আগে রড চুরির সময় মামুনকে নিহত ফেরদৌস হাতে নাতে ধরে ফেলে। এতে মামুনের চাকরি চলে যায় এবং ফেরদৌসের উপর ক্ষিপ্ত হয়। এরপর মামুন ঢাকায় গিয়ে একটি কন্সট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ শুরু করে।

তারই ধারাবাহিকতায় গত ৪ জানুয়ারি সকালে মামুন ঢাকা থেকে শাহজাদপুরে এসে ফেরদৌসের সঙ্গে দেখা করে আগের ঘটনার জন্য মাফ চায় এবং ফেরদৌসের সঙ্গে রাতে মিলের মধ্যে থাকতে চায়। ফেরদৌস সরল বিশ্বাসে তাকে থাকতে দেয়। এভাবে দুইদিন পর ৬ জানুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে মামুন আবারও চুরির উদ্দেশ্যে মিলের মধ্যে লোহার রড খুলতে থাকে। এসময় ফেরদৌসের ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং সে মামুনকে চুরি করতে নিষেধ করে। তখন মামুন লোহা খোলার রেঞ্জ দিয়ে ফেরদৌসের মাথার বাম পাশে আঘাত করে। আঘাতে তার মাথা থেকে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরনের কারনে সে মারা গেলে পাশেই থাকা কোদাল দিয়ে গর্ত করে ফেরদৌসের লাশ বালির মধ্যে পুঁতে রেখে মিলের প্রধান ফটকে তালা মেরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, শাহজাদপুর থানা পুলিশের একটি চৌকশ টিম তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় গত ১০ জানুয়ারি সকালে ঢাকার আদাবর থানাধীন সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামুন হোসেনকে গ্রেপ্তার করে এবং তার কাছ থেকে নিহত ফেরদৌসের মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।

পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্য মতে আর.কে. টেক্সটাইল মিলের ভেতরে মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় নিহত ফেরদৌসের লাশ উদ্ধারসহ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কম্বল ও লোহার সোলাই রেঞ্জ এবং গর্ত করার কাজে ব্যবহৃত কোদাল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করে থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো. মামুন হোসেন নিরাপত্তা প্রহরী ফেরদৌসকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান।

জানা গেছে, ফেরদৌস গত শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ৮ টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। তাকে অনেক জায়গায় ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে ৮ জানুয়ারি শাহজাদপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন নিহতের বাবা। এরপর ১০ জানুয়ারি সকালে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর নির্মাণাধীন আর.কে টেক্সটাইলের বালুর নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় সেই প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মী ফেরদৌসের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত