Ajker Patrika

অ্যানথ্রাক্স শনাক্তে নাটোরে আইইডিসিআর বিশেষজ্ঞ দল

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
অ্যানথ্রাক্স শনাক্তে নাটোরে আইইডিসিআর বিশেষজ্ঞ দল

নাটোরের লালপুরে সন্দেহজনক অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রাদুর্ভাব খতিয়ে দেখতে ঢাকা থেকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ছয় জনের বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আইইডিসিআর।

আজ সোমবার দেলুয়া গ্রামে সন্দেহজনক আক্রান্ত রোগীদের নমুনা ও তথ্য সংগ্রহ, উঠান বৈঠক, সচেতনতামূলক দিকনির্দেশনা দিয়েছে বিশেষজ্ঞ দল।

বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা হলেন— টিম লিডার ডা. সাব্রিনা মোহনা, টিম সুপারভাইজার ডা. রাবেয়া সুলতানা, ডা. ইমামুল মুনতাসির, ডা. মোয়াজ আবরার, সিনিয়র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. আলী জিন্নাহ ও  ল্যাবরেটরি অ্যাটেনডেন্ট মো. আব্দুর রহমান। 

আইইডিসিআরের টিম সুপারভাইজার ডা. রাবেয়া সুলতানা বলেন, তাঁরা আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে তথ্য নিয়েছেন। সন্দেহজনক আক্রান্তসহ নতুন করে আরও দুইজনের প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেছেন। প্রাপ্ত নমুনা ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পর চূড়ান্তভাবে বলা যাবে বিষয়টি অ্যানথ্রাক্স কি না।

গত ৭ জুলাই অসুস্থ গবাদিপশুর মাংস নাড়াচাড়া ও খাওয়ায় অ্যানথ্রাক্স বা তড়কা রোগের সংক্রমণে ১০ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। সন্দেহ করা হয়, আক্রান্ত দুলাল হোসেন (৫৫) নামে একজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ১৪ জুলাই রাতে মারা গেছেন। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ বলা হয়েছে মস্তিস্কে সংক্রমণ ও ক্ষতজনিত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেলুয়া গ্রামে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত সন্দেহে চিকিৎসাধীন শহিদুল ইসলামের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৪৫) ও ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২১), মহিদুল ইসলামের স্ত্রী রুমা বেগম (৩৫), মো. ওমর আলীর ছেলে আব্দুল মজিদ (৪০) ও সাখাওয়াত হোসেন (৩০), আরজেদ প্রাংয়ের ছেলে আফতাব আলী (৫০), মৃত দুলাল হোসেনের ছেলে হাবিবুর রহমান (৩০), রূপচান্দ আলীর ছেলে মোহন আলী (৪০) এবং নুরুজ্জামানের স্ত্রী বিলকিস বেগম (৩২)।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লালপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ইউএলও) চন্দন কুমার সরকার বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর গত শনিবার ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে দেলুয়া গ্রামে তিন শতাধিক গবাদিপশুকে অ্যানথ্রাক্স বা তড়কা রোগের টিকা দিয়েছে। আজ ঢাকার প্রাণিসম্পদ বিভাগের বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।’

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ইউএলও) চন্দন কুমার সরকার জানান, বিশেষজ্ঞ দল মাটিতে পুঁতে ফেলা কাঁচা মাংসের নমুনা সংগ্রহ করেছে। ঢাকা সিডিআইএল এবং সিরাজগঞ্জের এফডিআইএল ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পর চূড়ান্তভাবে বলা যাবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা একেএম শাহাব উদ্দিন অসুস্থ গবাদিপশু জবাই ও মাংস না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘অসুস্থদের স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।’

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা বলেন, ‘জনসাধারণকে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি ও আতঙ্কমুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি আক্রান্তদের থেকে রোগ যাতে না ছড়াতে পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত