Ajker Patrika

আইসিইউ চাওয়ায় পিটিয়েছেন ইন্টার্নরা, শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ-ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২২, ১১: ২৭
আইসিইউ চাওয়ায় পিটিয়েছেন ইন্টার্নরা, শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ-ভাঙচুর

ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ারকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর চিকিৎসা শুরু করা হয়নি। এতে তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। এর প্রতিবাদ করায় রামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা শাহরিয়ারের সহপাঠীদের পিটিয়েছেন—এমন অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুরের পর বিক্ষোভ করছেন তাঁর সহপাঠীরা।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শাহরিয়ারের মৃত্যুর পর চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে রাবি শিক্ষার্থীরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। এরপর থেকে তারা সমাবেশ করছেন অভিযুক্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের শাস্তির দাবিতে।

তাঁদের অভিযোগ, শাহরিয়ারকে রামেক হাসপাতালে নেওয়ার পর ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সঠিক চিকিৎসা মেলেনি। সহপাঠীরা শাহরিয়ারকে আইসিইউতে নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন, কিন্তু আইসিইউ বেড দেওয়া হয়নি। উল্টো বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে রামেকের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা রাবি শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছেন। এতে অন্তত ছয়-সাতজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

এর আগে বুধবার রাত ৮টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় ব্লকের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান শাহরিয়ার। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। জরুরি বিভাগ থেকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত শাহরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলায়। তিনি হবিবুর রহমান হলের ৩৫৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী।

হাসপাতালে শাহরিয়ারের চিকিৎসা না পাওয়া এবং উল্টো রাবি শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ তুলে রাত সাড়ে ৯টা থেকে শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর শুরু করেন। কয়েক শ শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূরও ছিলেন।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের কারণে পুরো হাসপাতালে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। রোগী ও স্বজনদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ ও র‍্যাবের বিপুলসংখ্যক সদস্য হাসপাতালে অবস্থান করছেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না পুলিশ। রাত ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এ সময় সমাবেশ চলছিল। রাজশাহী নগর পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ওই সমাবেশে রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন, ‘যে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা রাবি শিক্ষার্থীদের মারধর করেছেন, তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করে এক ঘণ্টার মধ্যে বরখাস্ত করতে হবে। একই সঙ্গে তাঁদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে রাবি শিক্ষার্থীরা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবেন। কীভাবে দাবি আদায় করতে হয় তা রাবি শিক্ষার্থীরা জানে।’

রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ইন্টার্ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম রাশেদ বলেন, তিনি ঢাকায় আছেন। তবে শুনেছেন আইসিইউ বেড না পেয়ে রাবি শিক্ষার্থীরা বাগ্‌বিতণ্ডা করেছেন। এরপর বিক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছেন। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, শত শত শিক্ষার্থী। পুরো হাসপাতালে তাঁরা ভাঙচুর চালিয়েছেন। এর মধ্যে কে কাকে মেরেছেন তা এখনই বলা যাচ্ছে না। হাসপাতালের নিরাপত্তায় পুলিশ ডাকা হয়েছে। পরিস্থিতি আর খারাপ হবে না। কীভাবে দ্রুত সমাধান করা যায় সে বিষয়টি তাঁরা দেখছেন বলেও জানান পরিচালক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত