Ajker Patrika

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর

সরকারি দিঘির মাটি কেটে বিক্রি নেতার

  • কিছুদিন বন্ধ থাকার পর ৯ মে থেকে আবার শুরু হয়েছে
  • স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে তাঁদের ‘হুমকি-ধমকি’ দেওয়া হচ্ছে
আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের কাজলদিঘি থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের কাজলদিঘি থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সরকারি দিঘির মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ২১ এপ্রিল থেকে শুরু করে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত শহিদুল চেয়ারম্যান তাঁর ৩০ থেকে ৪০ জন লোক দিয়ে উপজেলার বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের কাজলদিঘিতে মাটি কেটে বিক্রি করছিলেন। সে সময় ইউএনও ও রহনপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র তারিক আহমদ বাধা দিলে মাটি কাটা বন্ধ হয়। তার কিছুদিন যেতে না যেতেই ৩ মে থেকে তিনি (শহিদুল ইসলাম) ও তাঁর ভাতিজা জুনায়েতুল ইসলাম জিম ভেকু দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করেন। এ ছাড়া গত শুক্রবার (৯ মে) রাত ৯টা থেকে আবার মাটি কাটা শুরু করেছেন। সহযোগী হিসেবে শ্রমিক লীগ ও যুবদলের নেতাও রয়েছেন। সরকারি দিঘিটির মাটি কাটা নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে তাঁদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমি নিজেসহ আরও চার-পাঁচজন ইউএনওকে ফোন দিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করার জন্য বলি। তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাঁরা টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই সরকারি দিঘির মাটি কেটে বাইরে বিক্রি করছেন। এখানে দুটি ভেকুতে শহিদুল চেয়ারম্যান ও তাঁর ভাতিজা জুনায়েতুল ইসলাম জিম এবং বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি সাহেব আলী ও বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমাম হোসেন মাটি কাটছেন। তাঁরা খুব ক্ষমতাশালী। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই হামলা-মামলার শিকার হতে হয়। এই মাটি মান্নান ঠিকাদারসহ বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। আগে দিনে কাটা হচ্ছিল। এখন রাতের আঁধারে কাটছেন।’

জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রহনপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র তারিক আহমদ বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। এতে কিছুদিন মাটি কাটা বন্ধ ছিল, আবার তাঁরা মাটি কাটা শুরু করেছে।’

এ বিষয়ে কথা বলতে বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলামের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাঁর ভাতিজা জুনায়েতুল ইসলাম জিম বলেন, ‘আমি মাটি কাটছি না। এটা মান্নান ঠিকাদার কাটছে।’

জানতে চাইলে ঠিকাদার আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমি মাটি কাটছি—এটা যদি কেউ বলে থাকে, সেটা মিথ্যা বলেছে। আমি ৪০০ টাকা সিএফটি মাটি কিনে সরকারি রাস্তার কাজে লাগাচ্ছি। এ ছাড়া আমার নাম ভাঙিয়ে কেউ যদি বাইরে মাটি বিক্রি করে তার দায়ভার আমি নেব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এক সপ্তাহ থেকে আমার রাস্তার সাইটে তারা মাটি দিচ্ছে না। এখন তারা মাটি কাটছে কি-না তাও আমি জানি না।’

গোমস্তাপুরের ইউএনও জাকির মুন্সী বলেন, ‘এই উপজেলাতে যোগদান করা আমার এক দিন হলো। আমি মাটি কাটার বিষয়টি জানতাম না। এখনই চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. ইকতেখারুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি দিঘি থেকে মাটি কেটে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি খোঁজখবর করে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত