Ajker Patrika

শিশুটির চিকিৎসার এখন কী হবে!

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৫২
শিশুটির চিকিৎসার এখন কী হবে!

ভ্যানের ধাক্কায় শিশু সিয়াম মণ্ডলের (৭) পাঁজরের তিনটি হাড় ভেঙে গেছে। ফুসফুসে জমেছে রক্ত। ১০ হাজার টাকা ধার করে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তার বাবা। হাসপাতালে প্রতারণা করে সেই টাকা নিয়ে গেছে প্রতারক। এখন শিশুটির চিকিৎসা কীভাবে হবে, তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সিয়ামের বাবা শহীদ মণ্ডল।

শিশু সিয়াম পাবনার সুজানগর উপজেলার নওয়াগ্রামের শহীদ মণ্ডলের ছেলে। গত বৃহস্পতিবার রাস্তা পারাপারের সময় একটি ভ্যান ধাক্কা দেয় সিয়ামকে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। ঘটনার পর তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাবনা সদর হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। 

গত শুক্রবার ভোরের আলো না ফুটতেই এক ব্যক্তি রামেক হাসপাতালে শিশু সিয়াম মণ্ডলের শয্যার কাছে গিয়ে নিজেকে সার্জারির চিকিৎসক পরিচয় দেন। বলেন, এখনই ছয়টি ইনজেকশন দিতে হবে সিয়ামকে। সিয়ামের বাবা শহীদ মণ্ডল জানতে চান, ইনজেকশনের দাম কত? ওই ব্যক্তি জানান, 'বাইরে থেকে কিনলে ৬ হাজার টাকা লাগবে। আর হাসপাতাল থেকে নিলে দাম পড়বে ৩ হাজার ৪০০ টাকা।' টাকা দিলে তিনিই ইনজেকশনের ব্যবস্থা করে দেবেন। শহীদ মণ্ডল তখন তার কাছ থেকেই ইনজেকশন নিতে রাজি হন। প্রতারক ওই ব্যক্তি শহীদ মণ্ডল ও তাঁর ভাতিজা রাজীব মণ্ডলকে ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সামনে নিয়ে আসেন। সেখানে শহীদের কাছ থেকে নেন ৪ হাজার টাকা। টাকা নেওয়ার পর রাজীবকে কৌশলে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে পাঠান ভর্তির কাগজটি আনার জন্য। আর শহীদকে ওয়ার্ডের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে বলে ওই প্রতারক ভেতরে ঢোকেন। তারপর আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। তখন শহীদ প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। 

রাজীব মণ্ডল জানান, ১০ হাজার টাকা ধার করে সিয়ামকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পাবনায় এবং রাজশাহীতে আগেই তাদের ৪ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। বাকি ছিল ৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৪ হাজার টাকা নিয়ে গেছে প্রতারক। শুক্রবার সন্ধ্যায় সিয়ামের অস্ত্রোপচার করে ফুসফুসে জমাট বাঁধা রক্ত বের করা হয়েছে। এই অস্ত্রোপচারের ওষুধপত্র কিনতে ২ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। এখন হাতে কোনো টাকা নেই। কী দিয়ে চিকিৎসা করাবেন তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। 

কৃষক শহীদ মণ্ডল বলেন, ‘একবার ধার করে টাকা এনেছি। এখন আবার কারও কাছে হাত পাতার অবস্থা নেই। মানুষের দুঃসময়ে যারা প্রতারণা করে টাকা নিয়ে যায়, তাদের শাস্তি হওয়া দরকার।’ 

প্রতারণার এমন কথা শুনে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামিম ইয়াজদানী বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ এত নিরীহ! এত সহজ-সরল! এই সুযোগটাই নেয় প্রতারকেরা।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালে প্রায় রোগী ও স্বজন মিলে ৩০ হাজার মানুষ থাকে। চেষ্টা করেও হাসপাতালকে প্রতারকমুক্ত করতে পারছি না। অনেক সময় প্রতারকেরা অ্যাপ্রোন পর্যন্ত পরে নেয়। মাস্ক পরে। কেউ তাদের চিনতে পারে না। ডাক্তার মনে করে তাদের কথাই রোগীর স্বজনেরা শোনেন। এরপর প্রতারণার শিকার হন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

এনআইডির তথ্য ফাঁস করে ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ জিয়াউলের বিরুদ্ধে

সাতকানিয়ায় নিহত জামায়াত কর্মীর লাশের পাশে ব্রাজিলের তৈরি অত্যাধুনিক পিস্তল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত