Ajker Patrika

যমুনায় ভাসমান পাটের হাট

আশরাফুল আলম, কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ)
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯: ০৬
Thumbnail image

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল নাটুয়ারপাড়া। এর কোল ঘেঁষে বয়ে চলা যমুনায় জটলা বাধা অনেকগুলো নৌকা। এই নৌকাতেই বসেছে পাটের হাট। নদী পথে ক্রেতা-বিক্রেতাদের যাতায়াত সুবিধার কারণে ভাসমান এ হাট সরগরম হয়ে ওঠে ভোর থেকেই। চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত। দূরদূরান্ত থেকে নৌকায় এ ভাসমান পাটের হাটে বেচা-কেনা হয়। 

নৌকার পাশাপাশি নদীপাড়েও পাট বেচা-কেনা হয়। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার পাটের দাম অনেক কম। সপ্তাহের দুদিন শনি ও বুধবার বসে এ হাট। 

ভাসমান এই পাটের হাটে গিয়ে দেখা গেছে, কাজীপুরসহ পাশের জামালপুরের সরিষাবাড়ি, মাদারগঞ্জ, টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর, বগুড়ার ধুনট, শেরপুর, সারিয়াকান্দির ক্রেতা-বিক্রেতারা ভাসমান এই হাটে নৌকায় পাট কেনা-বেচা করতে এসেছেন। তীর থেকে ১০০ গজ ফাঁকে নোঙর ফেলে অর্ধশতাধিক নৌকায় কেনা-বেচা হচ্ছে পাট। নৌকাতেই চলছে হাঁকডাক। বিক্রেতাদের কাছ থেকে পাট কিনে অন্য নৌকায় উঠিয়ে নিচ্ছেন ব্যাপারীরা। নৌকার পাশাপাশি চরাঞ্চলের একমাত্র পরিবহন ঘোড়ার গাড়িতেও পাট বোঝাই করে স্থানীয় কৃষকেরা পাট বিক্রি করতে আসেন। 

মোন্নাত হোসেন ভাসমান এ পাটের হাটে পাট বিক্রি করতে এসেছেন বগুড়ার সারিয়াকান্দি থেকে। তিনি বলেন, ‘চার বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা মণ পাট বিক্রি করেছি। পাটের দাম খুব কম।’ 

 ‘পাট কাটা ও ধোয়ার শ্রমিক দাম বেশি। পাটের দাম খুব কম। ১ হাজার ৫০০ টাকা করে ৭ মণ পাট বিক্রি করছি। খরচা ওঠাই জুলুম। পাট কাটার পর পানির অভাবে জাঁক দিতে দেরি হয়েছিল। তাই পাটের মানও একটু খারাপ হয়েছে।’ বলেন, সোনাতোলার চাষি আলমগীর। 

ভাসমান এ হাটে পাট কিনতে এসেছেন জামালপুরের ব্যাপারী হবিবর রহমান। তিনি বলেন, ‘এখানে বহু পাট ওঠে। নৌ-পথে যাতায়াত খরচ কম তাই এখানে আছি। আজকে ৩১২ মণ পাট কিনেছি। আগের থেকে অনেক কম দাম। এগুলো আবার নৌকাতেই নিয়ে যাব।’ 

যমুনা নদীর ভাসমান পাটের হাটে চলছে বেচা-কেনা। ছবি: আজকের পত্রিকাসারিয়াকান্দির ধারাবাইশ্যার ব্যাপারী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘প্রতি বছরই এ হাটে পাট কিনতে আসি। এখানে দাম কিছুটা কম পাওয়া যায়। যাতায়াত খরচাও কম।’ 

নাটুয়ারপাড়া হাটের ইজারাদার ও কাজীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেফাজ উদ্দিন বলেন, ‘দূরদূরান্ত থেকে আসা ব্যাপারীরা প্রয়োজনে এখানে থাকতেও পারবেন। আগস্ট থেকে শুরু হয়ে অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত এখানে পাটের হাট বসে। প্রতি হাটে ৭ থেকে ৯ হাজার মণ পাট বেচা-কেনা হয়।’ 

কাজীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এবার অতিরিক্ত খরার কারণে পাটের আবাদে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। আমরা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছি। পর্যাপ্ত পানি না থাকায় জাঁক দিতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তারপরও মোটামুটি বিঘা প্রতি আট-নয় মণ পাট পেয়েছেন কৃষকেরা।’ 

এদিকে হাটের দিন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দায়িত্বে থাকে পুলিশ। এ বিষয়ে কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল কুমার দত্ত বলেন, ‘ডাকাতি এড়াতে হাটের দিন যমুনায় পুলিশের বিশেষ টহল থাকে। আমরা যেকোনো ধরনের সেবা দিতে প্রস্তুত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত