Ajker Patrika

ডেঙ্গু কেড়ে নিল রাবির মুরাদের ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন 

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯: ৫৮
ডেঙ্গু কেড়ে নিল রাবির মুরাদের ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন 

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মুরাদ মৃধার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রামের খাটাসখৈল গ্রামে তাঁর জানাজা হয়। এরপর স্থানীয় কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে। 

এর আগে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর ১০ দিন আগে তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি কিডনি জটিলতায় ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হন। মুরাদ মৃধা খাটাসখৈল গ্রামের আব্দুস সাত্তারের দুই ছেলের মধ্যে ছোট। 

আব্দুস সাত্তার মৃধা আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি অন্যের খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করে বিক্রি করেন। গুড় বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি কোনো রকমে সংসার চালান। বাড়িঘর তেমন একটা করতে পারেননি। উপার্জনের বড় অংশ ব্যয় করেছেন দুই ছেলের পড়ালেখায়। 

বড় ছেলে মুন্না মৃধা। তিনি গত বছর মাস্টার্স শেষ করে স্কয়ার কোম্পানিতে কর্মকর্তা পদে চাকরি করেন। ছোট ছেলে মুরাদ আহমেদ মৃধা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। এক মাস আগে তাঁর অনার্স পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। তাঁর স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা শেষ করে বিসিএস ক্যাডার হবে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন। 

তিনি আরও বলেন, মুরাদ ২৬ জানুয়ারি বাড়ি এসে জ্বরে আক্রান্ত হয়। সঙ্গে বমি করছিল। স্থানীয় একজন চিকিৎসককে দেখালে তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে দেন। রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু রোগ ধরা পড়ে। কিন্তু পাঁচ দিন চিকিৎসা করার পরও সুস্থ না হওয়ায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে লিভার ও কিডনি সমস্যা ধরা পড়ে। 

মুরাদ মৃধাকে হারিয়ে স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা গত বৃহস্পতিবার তাঁর ডায়ালাইসিস শুরু হয়। কিন্তু তাতেও তিনি সুস্থ হননি। পরিবারের লোকজন গত শুক্রবার তাঁকে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেও ডায়ালাইসিস করতে বলা হলে স্বজনেরা তাঁকে আবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। 

গতকাল সোমবার তাঁকে দ্বিতীয় ডায়ালাইসিসে নেওয়া হলে অবস্থার আরও অবনতি হয় এবং সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়। রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে শতাধিক সহপাঠী তাঁর মরদেহ বাড়িতে পৌঁছে দেন। 

মুরাদের চাচা আফছার মৃধা বলেন, ‘আমাদের পৈতৃক জমিজমা তেমন ছিল না। তবুও মুরাদের বাবা তাঁর ছেলেদের ব্যাপারে খুবই সচেতন ছিলেন। এমনকি সুদের ওপর টাকা ধার নিয়ে ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ ও খাবারের ব্যবস্থা করতেন।’ 

তিনি বলেন, ‘যেদিন অনার্সের ফল প্রকাশ হয় সেদিন মুরাদ বাড়িতে ছিল। মোবাইলে প্রথম শ্রেণি পাওয়ার খবর জেনে সে আনন্দে চিৎকার করে উঠেছিল। আমি দৌড়ে তার কাছে গিয়েছিলাম। সে বাজার থেকে মিষ্টি আনায়ে আমাকে খাইয়ে ছিল। আমার কাছে দোয়া চেয়ে বলেছিল, সে বিসিএস কর্মকর্তা হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বীর্যে বিরল অ্যালার্জি, নারীর বন্ধ্যত্ব নিয়ে চিকিৎসকদের নতুন সতর্কতা

কক্সবাজারে যাওয়ার পথে ২৩ মামলার আসামিকে কুপিয়ে হত্যা

আওয়ামী লীগ নেতাকে ধরতে গিয়ে ছেলের বঁটির আঘাতে এসআই আহত, আটক ২

নিহত ১১, আহত ৫০, ভারতের সেই মাঠ থেকে সরে যেতে পারে বিশ্বকাপ

এক টন কয়লাও ইসরায়েলে যাবে না, নির্দেশ কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত