Ajker Patrika

ভাঙা মেরুদণ্ডে ঝাড়ুর বোঝা

শাপলা খন্দকার, বগুড়া
ভাঙা মেরুদণ্ডে ঝাড়ুর বোঝা

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙেছে জহুরুল ইসলামের। এখন আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না। তবুও জীবনযুদ্ধের হাল ছাড়েননি তিনি। পিঠে ঝাড়ুর বোঝা নিয়ে ঘুরে বেড়ান শহরের রাস্তা ধরে। ঝাড়ু বিক্রির আয় দিয়েই কোনোমতে চলে তাঁর সংসার।

সম্প্রতি কথা হয় এই বৃদ্ধের সঙ্গে। তিনি জানান, নন্দীগ্রামে বাড়ি তাঁর। তবে বগুড়া শহরে এসেই ঝাড়ু বিক্রি করেন। তিন বছর ধরে এ কাজের সঙ্গে জড়িত। সারা দিন ঝাড়ু বিক্রি করে রাতে কখনো ঘুমান খান্দার মসজিদে, কখনো ঘুমান চেলোপাড়ার এক নাইটগার্ডের পাশে। মাসে একবার করে বাড়ি যান তিনি।

নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে সরকারের খাসজমিতে আশির দশকে গড়ে ওঠে একটি আদর্শ গ্রাম (গুচ্ছগ্রাম)। গ্রামে ৩৫টি ছিন্নমূল পরিবারের বসবাস। ১৩ বছর আগে থেকেই এখানে বসবাস করে আসছেন জহুরুল ইসলাম। এখানে থেকেই তিনি বিয়ে দেন তাঁর মেয়েকে। এই গুচ্ছগ্রামে থাকেন তাঁর দুই ছেলে। করেন কৃষিজমিতে দিনমজুরি। নিজেদের সংসারই চলে না তাঁদের। তাই মা-বাবার অন্ন জোটানোর দায়িত্ব নিতে পারেননি তাঁরা।

জহুরুল ইসলামও প্রথম জীবনে দিনমজুর ছিলেন। কিন্তু ছেলেদের সঙ্গে তাঁর পার্থক্য হলো তখন চার শতক জায়গার ওপরে তাঁর নিজের বাড়ি ছিল। সেখানেই তিন ছেলে, এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন জহুরুল ইসলাম। ১৩ বছর আগে বিপর্যয় নেমে আসে এই পরিবারে। একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায় তাঁর। চিকিৎসার জন্য একসময় বাড়ির জায়গাটুকু বিক্রি করে দেন তিনি। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। দরকার ছিল আরও উন্নত চিকিৎসার। তা করতে না পেরে চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেন জহুরুল ইসলাম।

এরপর আশ্রয় নেন গুচ্ছগ্রামে। এখন সেখানেই আছেন স্ত্রী নূরজাহান বেগমকে নিয়ে। সঙ্গে আছে নাতি রাসেল। তবে যে জায়গায় থাকেন তাতে ভালোভাবে বাস করার পরিবেশ নেই এখন। তিনজনের মুখের অন্ন জোগানোর চেষ্টায় জহুরুল পিঠে ঝাড়ু নিয়ে ঘোরেন পথে পথে।

প্রতিবন্ধী ভাতার টাকাও জোটেনি তাঁর কপালে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিন মাস আগে থেকে তাঁর ভাতার টাকা যাচ্ছে অন্য কারও নম্বরে।

জানতে চাইলে ভাটগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘একজন ব্যক্তির একাধিক ক্যাটাগরিতে ভাতা পাওয়ার সুযোগ নেই। যেহেতু তিনি প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন, তাই তাঁকে আর কোনো ভাতা দেওয়া যাবে না।’

ভুল নম্বরে টাকা যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সমাজসেবা অধিদপ্তর দেখেছে। তারাই এজেন্ট এনে ফোন নম্বরে বিকাশ খুলে দিয়েছেন। আমরা কেবল তাদের সাহায্য করেছি। এজেন্টের ভুলেই টাকাগুলো অন্য নম্বরে চলে যাচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বীর্যে বিরল অ্যালার্জি, নারীর বন্ধ্যাত্ব নিয়ে চিকিৎসকদের নতুন সতর্কতা

সৌদি আরবের কেনা ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলকে দেওয়ার অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রের, প্রত্যাখ্যান করে কিসের ইঙ্গিত দিল রিয়াদ

কক্সবাজারে যাওয়ার পথে ২৩ মামলার আসামিকে কুপিয়ে হত্যা

আওয়ামী লীগ নেতাকে ধরতে গিয়ে ছেলের বঁটির আঘাতে এসআই আহত, আটক ২

নিহত ১১, আহত ৫০, ভারতের সেই মাঠ থেকে সরে যেতে পারে বিশ্বকাপ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত