Ajker Patrika

১ মাসের ছুটিতে রাবি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ

রাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৩, ২১: ৫৮
১ মাসের ছুটিতে রাবি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ

আবারও লম্বা ছুটিতে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। গ্রীষ্মকালীন অবকাশ ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে কাল বুধবার থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস–পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে, দীর্ঘ এ ছুটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

জানা যায়, গ্রীষ্মকালীন ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে কাল ৭ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। অপর দিকে ১১ জুন থেকে ১৫ জুন এবং ২৫ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ছুটি চলাকালে আবাসিক হলসমূহ খোলা থাকবে। 

এর আগে বাংলা নববর্ষ, শবে কদর, ঈদুল ফিতর, মে দিবস ও বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে গত ১৪ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত ২৩ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৬ দিনের শীতকালীন ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল। 

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ ছুটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাঁদের মতে, ঘন ঘন লম্বা ছুটি দেওয়ার কোনো মানে হয় না। এটি সেমিস্টার সিস্টেমের অনুপযোগী একটি সিদ্ধান্ত। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনাকালীন পরিস্থিতির কারণে আমরা এমনিতেই একাডেমিকভাবে অনেকখানি পিছিয়ে পড়েছি। এখন আমরা চেষ্টা করছি ক্লাস-পড়াশোনা করে পরীক্ষা কিছুটা এগিয়ে আনার। কিন্তু এই ছুটির কারণে তা অনেকখানি পিছিয়ে গেল। ছুটিটা কমিয়ে এনে ঈদের আগে আগে দিলে ক্লাস-পরীক্ষা অনেকখানি এগিয়ে থাকবে। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা উচিত।’

দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘লম্বা ছুটির কারণে কোর্সের নির্ধারিত ক্লাসের চেয়ে কম ক্লাস করেই পরীক্ষায় বসতে হবে। ফলে, পড়াশোনায় ঘাটতি রয়ে যাবে, পরীক্ষার আগ মুহূর্তে মানসিক চাপের মুখোমুখি হতে হবে। ছুটিতে ডাইনিং ও ক্যানটিন বন্ধ থাকবে। এ সময় বাইরে খেতেও অতিরিক্ত টাকা খরচ হবে। ছুটিটা আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে সেমিস্টার সিস্টেমের অনুপযোগী উল্লেখ করে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘন ঘন লম্বা ছুটি দেওয়ার কোনো মানে হয় না। সেমিস্টার সিস্টেমে একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা শেষ হয়। নিয়মিত চার সপ্তাহ ক্লাস হবে তারপর মিডট্রাম আবার চার বা ছয় সপ্তাহ ক্লাস হয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে কিছুদিন পরপর ক্লাস ছুটি হয়। এটি সেমিস্টার সিস্টেমের অনুপযোগী সিদ্ধান্ত। এভাবে যাঁরা পড়ান তাঁরা বাধাগ্রস্ত হন এবং শিক্ষার্থীদেরও সমস্যা হয়। শুধু প্রধান প্রধান ছুটিগুলোতেই বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি দিয়ে বাকি ছুটিগুলো সেমিস্টারের শেষে নিয়ে যাওয়া উচিত।’ 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সুলতান উল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এবারের ছুটিটা গত বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই এটা আর কমানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী বছর থেকে আমরা শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ২১ দিন ছুটি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত