Ajker Patrika

বইমেলা হয়েছে বাহারি পণ্যমেলা

শাপলা খন্দকার, বগুড়া
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৯: ৫৭
বইমেলা হয়েছে বাহারি পণ্যমেলা

বইমেলায় বসবে বইয়ের দোকান। থাকবে বইয়ের ক্রেতা আর বিক্রেতা। বিভিন্ন বই, প্রকাশনী আর লেখকের সঙ্গে পরিচিত হবেন দর্শনার্থীরা। প্রচলিত ধারণা এমন হলেও বগুড়ায় দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র।

নয় দিনব্যাপী বইমেলা এখানে পরিণত হয়েছে লোকজ মেলায়। এখানে বইয়ের দোকানের পাশাপাশি আছে বাহারি পণ্যের দোকান। এর মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, কসমেটিকস, ক্রোকারিজ পণ্য, খেলনাসামগ্রী এবং মুখরোচক খাবারের দোকান। 
বইয়ের দোকানের চেয়ে এসব দোকানেই বেশি ভিড় লক্ষ করা গেছে। আর এসব দোকান বইমেলার সৌন্দর্য নষ্ট করেছে বলে মন্তব্য করেছেন অভিজ্ঞজনেরা। 

ভাষা শহীদ দিবস উপলক্ষে গত ২০ ফেব্রুয়ারি শহরের শহীদ খোকন পার্ক এলাকায় রাস্তার দুপাশে স্টল বসিয়ে শুরু হয় একুশে বইমেলা। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে এবং জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এ মেলা চলবে আগামীকাল সোমবার পর্যন্ত। 
 
আগামীকাল বিকেলে মেলার সমাপনী ঘোষণা করবেন দৈনিক করতোয়া পত্রিকার সম্পাদক মোজাম্মেল হক লালু। 

এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন কবি শোয়েব শাহরিয়ার। জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুম আলী বেগ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। 

মেলার আয়োজকেরা জানান, মেলায় মোট ৬০টি স্টল আছে। এর মধ্যে বইয়ের স্টল ৪০টি। 

দুপুরে সরেজমিনে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, মোট ৩৮টি স্টল সাজানো হয়েছে বইয়ের। এর মধ্যে ৭টি স্টল বন্ধ। খোলা আছে ৩১টি স্টল। আর ২২টি স্টলে দেখা গেছে তৈরি পোশাক, কসমেটিকস, রান্নার সামগ্রী (ক্রোকারিজ), বাচ্চাদের খেলনা এবং খাবারের দোকান। 

বগুড়া-বইমেলা-2এর মধ্যে কসমেটিকসের দোকান আছে ৮ টি, বাচ্চাদের খেলনার দোকান ৩ টি, তৈরি পোশাকের স্টল ৪ টি, ক্রোকারিজ পণ্যের স্টল একটি, মাস্কের স্টল একটি এবং ফুচকার ৩টি স্টলসহ মুখরোচক খাবারের দোকান ৫ টি। 

এ ছাড়াও দর্শনার্থীদের বিনা মূল্যে পানি এবং মাস্ক সরবরাহ করার জন্য একটি স্টল রয়েছে তবে সে স্টলে মাস্ক বা পানি দেখা যায়নি। স্টলটি সম্পূর্ণ খালি ছিল। 

কথা হয়, মেলার কসমেটিকস, পোশাক, ক্রোকারিজ খেলনার দোকানদারদের সঙ্গে। তারা জানান, মেলা উপলক্ষেই তাদেরকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে স্টলগুলো। এর জন্য প্রতিটি স্টলের ভাড়া বাবদ মেলার আয়োজক কমিটিকে চার হাজার করে টাকা দিয়েছেন তাঁরা। 

মেলায় এসেছে স্কুলছাত্রী আতিকা। সে বলে, ‘আমি ভেবেছিলাম বইমেলায় শুধু নানারকমের বই পাওয়া যাবে। কিন্তু এসে দেখলাম এটা অন্যান্য মেলার মতোই হরেকরকমের জিনিসের মেলা।’ 

সাতশিমুলিয়া হাইস্কুলের শিক্ষক সাইফুন্নাহার বলেন, বইমেলাতে দুই-একটা খাবারের দোকান বা বাচ্চাদের খেলনার দোকান থাকতে পারে। কিন্তু অন্যান্য দোকান থাকা সমীচীন নয়। আর এখানে অন্যান্য দোকান এত বেশি সংখ্যক হয়ে গেছে যে ‘একুশে বইমেলা’ নামটা সার্থকতা পাচ্ছে না। মেলাটা দেখলে ছোটদের মনে বইমেলা সম্পর্কে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। 

মেলার আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ সিদ্দিকী বলেন, ‘৬০টি স্টল নিয়ে মেলার আয়োজন করেছিলাম আমরা। কিন্তু ৪০টি ভাড়া হওয়ার পর ২০টি ফাঁকা পড়ে থাকে। পরে আমরা সাতমাথার খুচরা দোকানিদের কাছে ওগুলো ভাড়া দিই।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা বইয়ের স্টলই রাখি। কিন্তু এবার করোনার জন্য বেশি প্রকাশনী আসেনি। তাই বাধ্য হয়ে অন্যদের ভাড়া দিয়েছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত