Ajker Patrika

চেয়ারম্যানের হামলায় ইউপি সদস্য সংকটাপন্ন, মাথায় ২৩ সেলাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ১০: ৫৯
Thumbnail image

রাজশাহীর পবা উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের ওপর নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটেছে। পবা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এমদাদুল হক এমদাদ এবং তাঁর ছেলে বড়গাছি ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন সাগরের নেতৃত্বে এই সশস্ত্র হামলা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী বড়গাছি ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শফিকুল ইসলাম ওরফে শফি। হামলার সময় যুবলীগ নেতা এমদাদ পিস্তল প্রদর্শন করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। প্রয়োজনে কোটি টাকা খরচ করে শফিকে হত্যা করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি—প্রত্যক্ষদর্শীরা এমন তথ্য জানিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার বড়গাছি হাটে হামলার ঘটনা ঘটে। আহত ইউপি সদস্য শফিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। চাইনিজ কুড়ালের আঘাতে জখম শফির মাথায় ২৩টি সেলাই দেওয়া হয়েছে।

হামলায় শফির ডান কানের অর্ধেক অংশও কেটে গেছে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বাঁ হাতের তিনটি আঙুলও অর্ধেক কেটে গেছে। জিআই পাইপের আঘাতে শফির হাত ভেঙে গেছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাত রয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, শফির মাথা, হাত ও কানে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ সরকারের উপস্থিতিতেই শফির ওপর হামলার ঘটনা ঘটে বলে স্বজনেরা অভিযোগ করছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিজিৎ সরকার বলেন, যুবলীগ নেতা এমদাদ একটি জমি তাঁর নামে খারিজ করার জন্য আবেদন করেছিলেন। খারিজ করে দেওয়ার আগে জমিটি সরেজমিনে পরিদর্শন করতে হয়। দেখতে হয় জমিটা কার দখলে আছে। যুবলীগ নেতা এমদাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমিটি পরিদর্শনে যান। গিয়ে দেখেন, জমির কিছু অংশ নদী। এটি দেখে তিনি ফিরে আসছিলেন। তখন ইউপি সদস্য শফি এসে বলেন, নদী যেন কারো নামে খারিজ করে দেওয়া না হয়। এ কথা বলার কারণে এমদাদ ক্ষিপ্ত হন। 

অভিজিৎ সরকার আরও বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পাঁচ মিনিট পর শফি ফোন করে জানান যে তাঁর ওপর ইউপি চেয়ারম্যান ও তাঁর বাবা চড়াও হয়েছেন। শুনে আমি দ্রুত আবার সেখানে যাই। কিন্তু আমি পৌঁছানোর আগেই শফির ওপর হামলার ঘটনা ঘটে যায়। পরে আমি ধাওয়া দিয়ে হামলাকারীদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেই। শফিকে নিরাপদে পাঠিয়ে দেই।’

তবে শফির ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যুবলীগ নেতা এমদাদ। তিনি বলেন, ‘সামান্য কথাকাটাকাটির জের ধরে শফি আমার ছেলে বড়গাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাগরকে ধাক্কা দেয়। এর প্রতিবাদ করলে শফি আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এ সময় উপস্থিত লোকজন শফিকে মারধর করে।’

শফির মাথায় ২৩টি সেলাই রয়েছে এবং তাঁর হাতের আঙুল ও কানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে—এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এমদাদ বলেন, ‘ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলার সঙ্গে আমি এবং আমার ছেলে বা আত্মীয়স্বজন জড়িত না। এটি কারা করেছে বলতে পারব না। আর পিস্তল বের করে বুকে তাক করার অভিযোগটিও ভিত্তিহীন।’

পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত