Ajker Patrika

শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় কমতে শুরু করেছে আলুর দাম

গনেশ দাস, বগুড়া
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৩, ১৮: ৪৯
শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় কমতে শুরু করেছে আলুর দাম

বগুড়ার হাট-বাজারে কমতে শুরু করেছে আলুর দাম। আমদানি করা আলু বাজারে আসা ও শীতের সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। 

আজ শুক্রবার বগুড়ার বিভিন্ন হাট-বাজারে কার্ডিনাল আলু বিক্রি হয়েছে খুচরা ৪৫ টাকা, পাইকারি ৪০ টাকা কেজি। লাল পাকড়ি আলু খুচরা ৬০ টাকা এবং পাইকারি ৫৬ টাকা কেজি। আমদানি করা আলু বিক্রি হয়েছে খুচরা ৩৫ টাকা এবং পাইকারি ৩০ টাকা কেজিতে। তবে আমদানি করা আলুর চাহিদা কম বলে জানান বিক্রেতারা। গত এক মাসের ব্যবধানে খুচরা ও পাইকারি বাজারে আলুর দাম কমেছে কেজি প্রতি ২০ টাকা। 

বগুড়ার বিভিন্ন হিমাগার ঘুরে দেখা গেছে, তাদের মজুত প্রতিদিনই কমছে। বগুড়া থেকে পাবনা, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে আলু। 

বগুড়া সদরের সাবগ্রাম এলাকায় নর্দান ইন্ডাস্ট্রিজ নামের হিমাগারের প্রতিনিধি মাহফুজার রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সব আলু বের হয়ে যাবে। শুক্রবার পর্যন্ত এই হিমাগারে আলু মজুত ছিল সাড়ে ১১ হাজার বস্তা। গতকাল বৃহস্পতিবার ১ হাজার ১০০ বস্তা আলু বের হয়েছে। 

হিমাগারে আলু কিনতে আসা খুচরা বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, ৩৬ টাকা কেজি দরে কার্ডিনাল আলু কেনার পর শুকানো, ভ্যান ভাড়া, খাজনা, ঘাটতিসহ হিসাব করলে ৪০ টাকা কেজি পড়ে। এ কারণে বাজারে খুচরা আলুর কেজিপ্রতি বিক্রি করতে হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা। 

বগুড়া কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া জেলায় আলু সংরক্ষণের জন্য ৪১টি হিমাগার রয়েছে। হিমাগারগুলোর ধারণক্ষমতা ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৬২৯ টন। চলতি বছর আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে খাবার উপযোগী ২ লাখ ৪২ হাজার ২৮৮ টন এবং বীজ আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে ৮৫ হাজার ৯০৪ টন। 

অন্যদিকে বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বগুড়ায় এ বছর ৫৩ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ১২ লাখ ২৪ হাজার ৩৪২ টন আলু উৎপাদন হয়েছে। বগুড়া জেলায় ৩৭ লাখ মানুষের জন্য সারা বছর আলু প্রয়োজন দুই লাখ টন। সেই হিসাবে আলুর কোনো ঘাটতি নেই। 

আলু মজুতদারেরা বলছেন, পরপর দুই বছর হিমাগারে আলু রেখে লোকসান গুনতে হয় তাঁদের। অনেকে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। কেউ আত্মহত্যা করেছেন, আবার কেউ হৃদ্‌রোগে মারা গেছেন। এ কারণে এবার তাঁরা সিন্ডিকেট করে হিমাগার থেকে আলু বের করেছেন। ফলে এ বছর নভেম্বর মাসে হিমাগারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা কেজি দরে। গত বছর এই সময় হিমাগারে আলু বিক্রি হয়েছে ১৫ থেকে ১৬ টাকা কেজি। 

আলু মজুতদারদের সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারের কোনো পদক্ষেপই তেমন কাজে আসেনি। সরকারি বিভিন্ন নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়নি বাজারে। 

বগুড়ার রাজাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, ‘আমার আড়তে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মাইকিং করে ২৮ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করা হয়।’ 

কিন্তু বাজারে গেলে ব্যবসায়ীরা জানান, রাজাবাজারে মাত্র এক দিনের জন্য মাইকিং করে ২৮ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এক কেজির বেশি কেউ কিনতে পারেনি। 

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বগুড়ার জ্যেষ্ঠ কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মমতাজ হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বগুড়ায় হিমাগারগুলোতে ২২ হাজার ৭১৫ টন খাবার উপযোগী আলু মজুত ছিল। বাজারে শীতের নতুন সবজি সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে আলুর ওপর চাপ কমেছে। এ ছাড়া আলু আমদানি করায় প্রতিদিনই আলুর দাম কমছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত